Coromandel express accident : ট্রেন দুর্ঘটনায় বাবা বেঁচে গিয়েছেন, বাঁচাতে পারেননি ১৮ বছরের ছেলেকে!
ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনায় বাবা বেঁচে গিয়েছেন বাবা। বাঁচাতে পারেননি ১৮ বছরের ছেলেকে।
রানা দাস, পূ্র্ব বর্ধমান: ওড়িশার বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ( Odisha train acciden )লাফিয়ে বাড়ছে মৃত ও আহতর সংখ্যা। কোনও কোনও ঘরের মানুষ এখনও জানেন না নিকটজন ঘরে ফিরবেন কি না। কেউ কেউ অবশ্য পাচ্ছেন স্বস্তির সংবাদ। বর্ধমানের এই পরিবার একজনকে হারাল ট্রেন দুর্ঘটনায়, একজনকে পেল ফিরে। বাবা নিজে দিলেন ছেলের মৃত্যু সংবাদ।
ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনায় বাবা বেঁচে গিয়েছেন বাবা। বাঁচাতে পারেননি ১৮ বছরের ছেলেকে। নিজেই ফোন করে জানিয়েছেন ছেলে ছোট্টু সর্দারের মৃত্যু সংবাদ। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার করুই গ্রাম থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে ১০ জন রওনা দিয়েছিলেন কেরলের উদ্দেশে। এই প্রথমবার ছেলেকেও সঙ্গে নিয়েছিলেন বাবা। ছেলে তো গিয়েছেই, সঙ্গীদেরও কোনও খোঁজ মেলেনি।
মৃত্যু মালদার পরিযায়ী শ্রমিকের
শুধু তাঁরাই নয়, বাংলার বহু ঘরই খালি করল এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। ওড়িশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল মালদার এক পরিযায়ী শ্রমিকের। মালতিপুরের বাসিন্দা মাশরেকুল।বছর ২৩-এর তরুণ এলাকার আরও ৩ জনের সঙ্গে চেন্নাই যাচ্ছিলেন কাজের খোঁজে। দুর্ঘটনায় মাশরেকুলের মৃত্যু হয়। বাকি ৩ জন আহত।
বাড়িতে বাবা, মা, স্ত্রী, ছয় ও এক বছরের দুই সন্তান। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। তাই একদিকে পুত্রশোক, আরেকদিকে ভবিষ্যতের চিন্তা। বামনগোলার ভোমরাইলের বাসিন্দা বছর আঠাশের নিত্যম রায়েরও খোঁজ মিলছে না বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট
ওড়িশার বালেশ্বর এখন যেন মৃত্যুপুরী। শুক্রবার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস, হাওড়াগামী যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ছ’শো। মৃত ও আহতর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সকালে ঘটনাস্থলে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক।
উদ্ধারকাজে নেমেছে বায়ুসেনা, এনডিআরএফের ৯টি টিম। হেলিকপ্টারের সাহায্যে চলছে উদ্ধারকাজ। ট্রেনের দরজা ভেঙে, গ্যাস কাটারের সাহায্যে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। ড্রোন উড়িয়ে, স্নিফার ডগ এনে চলছে তল্লাশি। উদ্ধারকাজ জোরদার করতে মালদা ডিভিশনের ২২৪ জন আরপিএফ জওয়ানকে দুর্ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। গতকাল ৩টি ট্রেনের সংঘর্ষে লাইনচ্যুত হয় করমণ্ডলের ১৫টি ও হাওড়া-যশোবন্তপুর হামসফর এক্সপ্রেসের ৩-৪টি কামরা। দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরায় এখনও অনেক যাত্রী আটকে রয়েছেন।ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা। অক্ষত কামরাগুলিতেও স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে এনডিআরএফ। রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ওড়িশা পুলিশের ফরেন্সিক দল। রাজ্য সরকারের তরফে রাতে দুর্ঘটনাস্থলে যান মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও সাংসদ দোলা সেন।