Durga Puja 2025: চোখ বেঁধে মাতৃমূর্তি তুলে নিয়েছিল এক শিশুকন্যা, তারপরেই শুরু হয় পুজো! অবাক করবে পশ্চিমবঙ্গের এই জায়গার দুর্গোৎসব
East Bardhaman Puja: এই পরিবার ছিল বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত। মূর্তি বাছাই করে নেওয়ার পরে, তাঁরা গুরুদেবের শরণাপন্ন হন, কী রীতিতে দেবীর আরাধনা করা হবে তা নিয়ে

কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: মা দুর্গা মানেই দশভূজা, এই রূপই প্রত্যেক বাঙালির মনে বসে রয়েছে। তবে গোটা পশ্চিমবঙ্গে হামেশাই এমন সব মূর্তি দেখা যায়, যা চিরচরিত দূর্গা মাতৃ প্রতিমার থেকে একেবারেই আলাদা। এই পুজোর প্রতিমার যেমন বিশেষত্ব রয়েছে, তেমনই রয়েছে এই পুজোর ইতিহাসও। কথা হচ্ছে, পূর্ব বর্ধমানের বড়শুলের 'দে' বাড়ির পুজোর। এখানে লক্ষ্মী বা সরস্বতীর বাহন নেই, মহাদেবের বাম উরুতে আসীন থাকেন, মা দুর্গা। অনুমানিক আড়াইশো বছর ধরে পূজিত হচ্ছেন এই বাড়ির 'হরগৌরী'।
এই বাড়ির ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, বড়শুলের জমিদার বাড়ির জমিদার তখন যাদব চন্দ্র দে। প্রথমে তিনি ঘটেপটে পুজো শুরু করেন। জমিদার গৌরপ্রসাদ দে এর আমল থেকে মুর্তিপুজো শুরু হয়। একটা মতে জানা যায়, গঙ্গাসাগরে যেসব সাধুসন্তরা যেতেন তারা দেবীকে হরগৌরী রূপে পুজো করার পরামর্শ দেন। মনে করা হত, দেবীকে এই রূপে পূজা করলে ধন-সম্পত্তি বৃদ্ধি পায়। অন্য আরও একটি মতে জানা যায়, তৎকালীন সময়ে বড়শুলের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দামদর নদ দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য চলতো। আবার বড়শুলের খুব কাজ দিয়ে গিয়েছে গ্রাণ্ড ট্যাঙ্ক রোড অর্থাৎ জিটি রোড।দামোদর নদ ও জি টি রোড কাছাকাছি হওয়ায় একসময় এই জমিদার বাড়িতে সাধুসন্তরা এসে থাকতেন। কথিত আছে, জমিদার গৌরপ্রসাদ দে-র আমলে তেমনই সাধুসন্তরা এসে ঝোলা থেকে বেশ কয়েকটি মা দুর্গার বেশ কয়েকটি রূপের মাটির পুতুল বের করেছিলেন। তারপর পরিবারের এক শিশুকন্যার চোখ বেঁধে একটি পুতুল তুলতে বলেছিলেন তাঁরা। সেই কন্যা শিশু হরগৌরীর পুতুলটি তুলেছিল। সেই থেকেই হরগৌরীর পুজো শুরু হয় এখানে।
কিন্তু এই পরিবার ছিল বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত। মূর্তি বাছাই করে নেওয়ার পরে, তাঁরা গুরুদেবের শরণাপন্ন হন, কী রীতিতে দেবীর আরাধনা করা হবে তা নিয়ে। গুরুদেবের পরামর্শে শাক্ত মতে, গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা অনুসারে পুজো শুরু হয় এখানে। তাঁর পরামর্শেই সপ্তমীতে গোটা ছাঁচিকুমড়ো বলি দেওয়া হয়। অষ্টমীতে ছাগবলি হয়। নবমীতে তিনটে ছাঁচিকুমড়ো, চারটি শসা, বাতাবি লেবু ও মূলসহ তিনটি আখ বলি দেওয়া হয়। তবে বলি দেওয়া কোনও জিনিসই এই পরিবারের কেউ আহার করতে পারেন না। আগে সন্ধিপুজোয় বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা বাড়ির পুজোর কামানের আওয়াজ শুনে সন্ধিপুজোর বলিদান শুরু হত। বর্তমানে তা অতীত।সর্বমঙ্গলা মন্দিরে কামান দাগা কয়েক দশক আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে ঘড়ির সময় দেখেই বলিদান হয়।






















