Medical College : বাইরে আগুন, ধোঁয়া, ঝুঁকি নিয়ে টর্চ জ্বেলে অপারেশন মেডিক্যাল কলেজে, বাঁচল প্রাণ
প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে টর্চ জ্বেলে জটিল অস্ত্রোপচার শেষ করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ৬ জন চিকিৎসক।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা : হাসপাতালের করিডরে গলগল করে বেরোচ্ছে কালো ধোঁয়া ! অগ্নিকাণ্ডের জেরে গোটা ফ্লোর বিদ্যুৎহীন! আর তার মধ্য়ে অপারেশন থিয়েটরের টেবিলে চলছে জটিল অস্ত্রোপচার! এরমধ্যেই কার্যত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে টর্চ জ্বেলে জটিল অস্ত্রোপচার শেষ করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ৬ জন চিকিৎসক। অন্যদিকে, দমকলের তিনটি ইঞ্জিনের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন।
প্রাণ বাঁচানোর লড়াই
বেরিয়ে আসার জন্য বাইরে থেকে বারবার তাড়া দিচ্ছেন দমকলকর্মীরা ! আর ভিতরে কর্তব্যে অটল ৬ চিকিৎসকের টিম। একদিকে প্রাণে বাঁচার তাগিদ । অন্যদিকে প্রাণ বাঁচানোর লড়াই । দিনের শেষে দুই ক্ষেত্রেই বাজিমাত করলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৬ জন চিকিৎসক।
টর্চের আলো জ্বেলে অস্ত্রোপচার
ভয়ানক অগ্নিকাণ্ড আর দম বন্ধ করা ধোঁয়ার মধ্যে মোবাইলের টর্চের আলো জ্বেলে অস্ত্রোপচার শেষ করলেন চিকিৎসকরা। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইউরোলজি বিভাগের প্রধান, সুনির্মল চৌধুরী সেই সময়কার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বললেন, 'আমাদের বারবার তাড়া দিচ্ছে বেরিয়ে আসুন, বাইরে ধোয়ায় ভরে গেছে ...'
হঠাৎ আগুন লেগে যায় হাসপাতালে
মঙ্গলবার দুপুর তিনটে নাগাদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের দোতলায় ইউপিএস রুমে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে কালো ধোঁয়া । এসি ডাক্টের মধ্যে দিয়ে ধোয়া পৌঁছে যায় সুপার স্পেশালিটি ভবনের তিনতলায়। এখানেই রয়েছে CCU এবং অপারেশন থিয়েটার। সেখানে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের অপেক্ষায় থাকা রোগীদের যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সাততলায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
বাইরে যখন এই ছবি, তখন অপারেশন থিয়েটারের ভিতরে অস্ত্রোপচার চলছিল হাওড়ার লিলুয়ার বাসিন্দা, বছর ৪৮-এর ছবি দাসের। টিউমার হওয়ায় একটি কিডনি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। ইউরোলজি বিভাগের প্রধান সুনির্মল চৌধুরীর নেতৃত্বে দেড় ঘণ্টার জটিল এই অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিল ৬ চিকিৎসকের টিম! কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের জেরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ায়, নিভে যায় ওটির আলো।বন্ধ হয়ে যায় বৈদ্যুতিন সরঞ্জামও। সেই অবস্থায় নিজেদের মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে অস্ত্রোপচার চালিয়ে যান চিকিৎসকরা। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে এভাবেই চলে গোটা প্রক্রিয়া।
চিকিৎসক সুনির্মল চৌধুরী জানালেন, কঠিন ওই পরিস্থিতিতে তাঁরা কীভাবে শিরা-ধমনী সুতো দিয়ে বাঁধেন। কীভাবে বন্ধ করলেন রক্ত। ভয়ঙ্কর ঝুঁকি নিয়ে শেষ হয় অপারেশন।
আরও পড়ুন :