(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Hooghly: কোনওমতে বেঁচেছে প্রাণ, বাড়ি ফিরতেই হাতে এল ক্ষতিপূরণের টাকা
Odisha Train Accident: রাজ্য প্রশাসনের দেওয়া পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় ওই তিন জনের হাতে।
সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: জীবিকার প্রয়োজনে তামিলনাড়ুতে গিয়েছিলেন তাঁরা। দক্ষিণের ওই রাজ্যে ধান রোওয়ার কাজ করতেন হুগলির পোলবার ৩ বাসিন্দা। কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন তাঁরা। বালেশ্বরের কাছে রেল দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন ওই তিন জন, ফুলমনি টুডু,মুকুলি টুডু ও লক্ষ্মী মুর্মু। সেখানেই স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা হয় তাঁদের। চিকিৎসার পরে রাজ্য প্রশাসনের সহযোগিতায় তাঁদের বাসে করে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। রবিবার আহত অবস্থায় পোলবায় বাড়ি ফেরেন তাঁরা। পোলবার গোটু গ্রামে চুঁচুড়ার বিধায়ক, হুগলি সদর মহকুমা শাসক,পোলবা দাদপুর ব্লকের বিডিও-সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা ওই ৩ জনের বাড়িতে যান।
ওই তিন বাসিন্দারা সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। রাজ্যের তরফে রেল দুর্ঘটনায় জখমদের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী রাজ্য প্রশাসনের দেওয়া পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় ওই তিন জনের হাতে। চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, 'ওরা ফিরেছে গতকাল,আজকেই প্রশাসনের তরফ থেকে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক দেওয়া হলো। তাদের আগামীদিনে চিকিৎসা ব্যবস্থাও করা হবে।'
ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে এদিন ফুলমনি টুডু বলেন, 'গাড়ি খুব জোরে যাচ্ছিল। হঠাৎ গাড়ি দুলে উঠল। তারপর বিকট শব্দ হয়ে উল্টে গেল। আমি তলায় পড়ে গিয়েছিলাম। অন্যরা আমাকে টেনে বের করেছিল। না হলে মরে যেতাম।'
ঘটেছে মৃত্যুর ঘটনা:
কিছুটা অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য চেন্নাই (Chennai) যাচ্ছিলেন বছর তিরিশের সঞ্জয় দে। সেই উপার্জনের চেষ্টাই কি কাল হল? এদিন বাদুড়িয়া (Baduria) বিধানসভার দক্ষিণ চাতরা গ্রামের বাসিন্দা, সঞ্জয় দে-র দেহ যখন বাড়ি ফিরল, তখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে পাড়াপড়শির মধ্যে। পরিবারে কান্নার রোল। বালেশ্বরে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় (Odisha Train Accident) প্রাণ গিয়েছে সঞ্জয়ের। নিহত যুবক বাদুড়িয়া বিধানসভার দক্ষিণ চাতরা গ্রামের বাসিন্দা। আজ তাঁর দেহ কফিনবন্দী অবস্থায় অ্যাম্বুল্যান্সে করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। দেহ পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন । বাদুড়িয়ার বৈতরণী শ্মশানে নিয়ে গিয়ে তাঁর শেষকৃত্য পালন করা হয়। গোটা সময়টা হাজির ছিলেন বসিরহাটের মহকুমা শাসক মৌসুম মুখোপাধ্য়ায়, এসডিপিও অভিজিৎ সিনহা ও বাদুড়িয়ার বিধায়ক কাজী আব্দুর রহিম ওরফে দিলু। শোকের খবর পেয়ে চলে আসেন সঞ্জয়ের পরিবারের লোকজন-সহ শতাধিক মানুষ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকা বাড়ি করতে গিয়ে বেশ কিছু ঋণগ্রস্ত হয়েছিলেন ওই যুবক। সে কারণেই চেন্নাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ দুর্ঘটনা। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাঁর দেহ শনাক্ত করেন। আজ সকাল দশটা নাগাদ বাড়িতে নিয়ে আসা হয় যুবকের দেহ। শেষকৃত্যও হয়। বাদুড়িয়ার বিধায়ক কাজী আব্দুর রহিম জানিয়েছেন, নিহতের পরিবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু এই ভাবে তরতাজা প্রাণের অকালপ্রয়াণের কোনও ক্ষতিপূরণ কি হয়? প্রশ্ন তুলছেন পড়শিরা। চোখের জল থামছে না পরিবারের।
আরও পড়ুন: গরম পড়লেই ভরসা আখের রসে? কতটা কাজে লাগে? আদৌও উপকার রয়েছে?