Hooghly: 'গুলি খেয়ে যেতে পারি', দলের নেতার হাতেই খুন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ খোদ বিধায়কের!
হুগলি জেলা পরিষদের সদস্যা ও তাঁর স্বামীকে নিশানা করে মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলেন, 'বলাগড়ের ফুলন দেবী, শার্প শ্যুটার নিয়ে ঘোরে, মাটিতে পুঁতে দেবে বলছে'।
হুগলি: 'গুলি খেয়ে যেতে পারি, নিরাপত্তা না পেলে আর এলাকায় যাব না। তৃণমূলের হাতেই তৃণমূল খুন হচ্ছে, গুলি চালিয়ে দিলে কী করব?' অন্য কেউ নয়, দলের নেতার হাতেই খুন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করলেন খোদ বিধায়ক! তৃণমূলেরই একাংশকে নিশানা করে বিস্ফোরক বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর দাবি, 'আমি এখন একা হয়ে গেছি, ভয় পাচ্ছি, হুমকি দিচ্ছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছি, দলকে বলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। ছারপোকার মতো কিছু লোক দলটাকে শেষ করে দিচ্ছে'।
হুগলি জেলা পরিষদের সদস্যা ও তাঁর স্বামীকে নিশানা করে মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলেন, 'বলাগড়ের ফুলন দেবী, শার্প শ্যুটার নিয়ে ঘোরে, মাটিতে পুঁতে দেবে বলছে'। দলেরই নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ খোদ তৃণমূল বিধায়কের।
খোদ তৃণমূলের বিধায়কই কি না খুন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন! আর তাঁর অভিযোগের আঙুল দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে! তিনি মনোরঞ্জন ব্য়াপারী! হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক! প্রায় তেইশ বছর ধরে মনোরঞ্জন ব্য়াপারীর জীবনের রুটিন ছিল দু’বেলা দেড়শো জনের রান্না করা। যে হাতে তিনি লিখেছেন ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন’, সেই হাতেই তাঁকে প্রতি দিন নামাতে হত ২০ কিলোগ্রাম চালের ভাত।
মুটে-মজুরি করেছেন, ছাগল চড়িয়েছেন, দীর্ঘ সময় যাদবপুর অঞ্চলে রিকশা চালিয়েছেন! আবার জেলবন্দি অবস্থায় শুরু করেছেন পড়াশোনা! জেলবন্দি হওয়ার আগে একসময় খিদের জ্বালায় পাঁউরুটি পর্যন্ত চুরি করেছিলেন যিনি, সেই তিনিই এখন সততার মশাল এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করছেন! কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করছেন দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে!
যুব তৃণমূল কংগ্রেস ও হুগলি জেলা পরিষদের সদস্য়া ও রাজ্য় সম্পাদক রুনা খাতুন এ প্রসঙ্গে বলছেন, হতে পারে, ওঁর অনৈতিক কাজে আমি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছি। সেটা ওঁর সমস্য়া হচ্ছে। সেই জন্য় সমস্ত কিছু আমার নামে দিয়ে পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সৎ সাহসের বড় অভাব আছে ওঁর। বিধায়ককে অনুরোধ, ফেসবুক লাইভটা আপনি অন্ধকারে আড়ালে, কলকাতায় লুকিয়ে কোনও জায়গা থেকে করবেন না তো? সৎ সাহস আছে তো?
বুধবার সোশ্য়াল মিডিয়ায় নাম না করেই, তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্য়াপারী লেখেন, বলাগড়ের ফুলন দেবী! যে সাথে কুড়ি পঁচিশজন শার্প (সার্ফ) শুটার নিয়ে ঘোরে, যে আমাকে মহিপাল পুরে জনসভা করে মাটিতে পুঁতে দেবে বলেছে! বলাগড়ে যা চলছে দলনেতারা সবাই সব কিছু জানে, তবু কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ধৃতারাষ্ট্রের মতো চোখ বুজে আছে ।
সোশ্য়াল মিডিয়য়ায় রাখ-ঢাক না করেই নিজের দলের একাংশের বিরুদ্ধে কলম চালালেন তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্য়াপারী।