Jangalmahal News: আর ক্ষতিকারক কেমিক্যাল নয়, এ রাজ্যেই শাল গাছের বীজ দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রসাধনী!
Jangalmahal News Update: জঙ্গলে দিনের পর দিন পড়ে থাকা শালবীজই কী এবার বদলে দেবে আদিবাসীদের ভাগ্য?

কলকাতা: বাজার চলতি রূপচর্চার জিনিসে অনেক সময়েই ক্ষতিকারক কেমিক্যাল থাকে, এর ফলে আদপে ক্ষতি হয় ত্বকেরই। বলা হয়, যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করে রূপচর্চা করা যায়, ততই ভাল। ঈর সেই ভাবনাকে মাথায় রেখেই পরিকল্পনা করা হয়েছে, কাঁকসার জঙ্গলমহলের শালবীজ নিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থার গবেষণাগারের একটি বিশেষ উদ্যোগের। এই গবেষণা কেন্দ্রেই, প্রাকৃতিক জিনিস দিয়ে তৈরি হবে বিভিন্ন প্রসাধনী দ্রব্য। আদিবাসীদের হাত ধরে দেশের প্রথম পাইলট প্রোজেক্ট শুরু করল দুর্গাপুরের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের (CMERI) বিজ্ঞানীরা।
জঙ্গলে দিনের পর দিন পড়ে থাকা শালবীজই কী এবার বদলে দেবে আদিবাসীদের ভাগ্য? বাজার চলতি, কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনীর বিকল্প হিসেবে, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বাটার ও স্কিন কেয়ারের বিভিন্ন জিনিস দিয়ে এবার তৈরি হবে কসমেটিক্স ও প্রসাধনীর অন্যান্য জিনিস। দেশের প্রথম পাইলট প্রোজেক্ট শুরু করল দুর্গাপুর সেন্ট্রাল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (CMERI)। এই প্রকল্পে শালবীজ সংগ্রহ, বীজ থেকে মাখন নিষ্কাশন, এবং কাঁচামাল প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্ব থাকছে স্থানীয় কাঁকসার জঙ্গলমহলের মলানদিঘীর আদিবাসী সম্প্রদায়ের হাতে। এই অঞ্চলে রয়েছে লক্ষ লক্ষ শালগাছ, কাজেই এই ধরণের কাজের জন্য এই অঞ্চল উপযুক্ত, কাঁচামালের অভাব নেই।
গবেষকরা বলছেন, 'শালবীজের মাখন আন্তর্জাতিক বাজারে অত্যন্ত চাহিদাসম্পন্ন। যদি এই মডেল সফল হয়, তাহলে আদিবাসী সমাজে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং ভারত প্রথমবারের মতো শালবীজ নির্ভর কসমেটিক ও প্রসাধনী শিল্পে জায়গা করে নেবে।” বিশেষজ্ঞদের মতে, শালবীজের মাখনে থাকে হাইড্রেটিং ফ্যাট। পাশাপাশি কোনও সিনথেটিক কেমিক্যাল নেই। এর ফলে, ত্বকে কোনওরকম অ্যালার্জি হয় না। স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য যেমন ভাল, অন্যদিকে এই যাবতীয় প্রসাধনী হবে পরিবেশবান্ধব।
প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে শালবীজের বডি লোশন, লিপ বাম, হেয়ার ক্রিম সহ বহু স্কিন কেয়ার পণ্য বাজারে আসতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা বুধিরাম কিঙ্কু বলছেন, 'যে জিনিসটা আমরা আগে ফেলে দিতাম, আজ সেটাই আমাদের আয় দেবে। এটা আমাদের জীবন পাল্টে দিতে পারে। আমাদের সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা কথা বলেছেন। এলাকাতে মাঝে মধ্যে আসেন। আমাদেরকেও গবেষণা করে ডাকেন। তাড়াতাড়ি এই প্রকল্প শুরু হলে আমরা উপকৃত হব।' কেন্দ্রীয় গবেষণাগারের ডাইরেক্টর নরেশ চন্দ্র মুর্মু বলছেন, 'আমরা এই প্রকল্প পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে শুরু করেছিলাম। প্রথম পর্যায়ে শেষ হয়েছে। আদিবাসীদের মধ্যে ভীষণ উৎসাহ চোখে পড়ছে। আমরা আফ্রিকার একটি দেশে এই দেখেছিলাম, পরিবেশবান্ধব এক ধরনের বীজ দিয়ে রূপচর্চার কসমেটিক বানানো হচ্ছে। সেই দেখেই আমরা উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম। এবার আমরা পড়ে থাকা শালবীজ থেকে রূপচর্চার কসমেটিক তৈরি করার গবেষণা চালাচ্ছি।'






















