Kali Puja 2022: কালীপুজোই আসল উৎসব 'কালীগ্রামে', চার বোনের সঙ্গেই গ্রামে প্রতিষ্ঠিত আরও দেবী
Purba Bardhaman:কালীপুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবের আনন্দে মেতে উঠে গোটা গ্রাম। শুধু কালী নয়, এখানে ভৈরবের পুজোও হয়।
কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: কালীরা চার বোন। বড়মা, মেজমা, সেজমা, ছোটমা। বর্ধমানের একটি গ্রামে এভাবেই পুজো পান দেবী। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির আমাদপুর পরিচিত কালীগ্রাম নামেই। ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই নামে দেবীর পুজো হয়ে আসছে।
এই চার বোন ছাড়াও গোটা গ্রামে রয়েছেন কমবেশি ১০০ কালী। সিদ্ধেশ্বরী, বুড়িমা, ডাকাত কালী, ক্ষ্যাপা মা, আনন্দময়ী মা ইত্যাদি ভিন্ন নামে মা কালী এখানে পূজিতা হন। এই কারণেই এই গ্রাম মানুষের কাছে কালী গ্রাম নামেই পরিচিত। কালীপুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবের আনন্দে মেতে উঠে গোটা গ্রাম। শুধু কালী নয়, এখানে ভৈরবের পুজোও হয়।
কীভাবে শুরু পুজো?
এই গ্রামের কালীপুজো নিয়ে নানা কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। বর্ধমানের আমাদপুর এক প্রাচীন জনপথ। কথিত আছে, পূর্বে এখান দিয়েই প্রবাহিত ছিল বেহুলা নদী। বর্তমানে তা মজে গিয়ে খালের আকার নিয়েছে। এক সময়ে এই নদীপথ দিয়ে বাণিজ্যতরী যাতায়াত করত বলে শোনা যায়। সেই সময়ে নাকি দস্যুদের কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়াতে হতো বণিকদের। সেই সময়ে আমাদপুরে বেহুলা নদীর ধারে ছিল মহাশ্মশান। সেখানে এক সাধু থাকতেন। সেই সাধু শ্মশানে কালীসাধনা করতেন। কথিত রয়েছে বণিকরা দস্যুদের হাত থেকে বাঁচতে এই শ্মশানে কালী মায়ের পুজো দিতেন। শোনা যায়, এর পর থেকেই তাঁরা দস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে শুরু করেন। তখন থেকেই এই দেবীর প্রতি বিশ্বাস জন্মায়। দেবীর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পরে দিকে দিকে।
গ্রামে ঢুকলে প্রথমেই প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার বড় মা-এর দর্শন পাওয়া যাবে। আরও কিছুটা এগোলেই রয়েছেন প্রায় সম উচ্চতার মেজ মা। তাঁর আশপাশে রয়েছেন সেজ মা ও ছোট মা-এর মন্দির। আর এই চার মা কালীকে ঘিরে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পূজিত হন দেবী।
পুজোর টানে ভিড়:
দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা কালী পুজোর দিনে হাজির হন এই গ্রামে। বিসর্জনের সময়ে বড়, মেজ, সেজ আর ছোটমাকে চতুর্দোলায় করে শোভাযাত্রা বের হয়। সারা রাত গোটা গ্রাম ঘোরানোর পরে ভোর বেলায় বিসর্জন হয়। এই চার দেবী ছাড়াও গ্রামে যত দেবী রয়েছেন, সকলকেই একসঙ্গে চতুর্দোলা করে একটির পর আর একটি- এইভাবে লাইন দিয়ে শোভাযাত্রা বের হয়। আশেপাশের জেলা থেকে বাসিন্দারা এসে ভিড় জমান। স্থানীয় বাসিন্দা পায়েল ভৌমিক বলেন, 'দুর্গাপুজো নয় কালীপুজোটাই উৎসব। বাড়িতে লোকজন আসে। সারাবছর অপেক্ষা করে থাকি।' কালীপুজো উপলক্ষ্যে এবারও কালীগ্রামে উৎসবের মেজাজ।
আরও পড়ুন: কালীপুজোর সময়ে হয় দুর্গাপুজো, দেবী বিদায় ভাইফোঁটার পরে