Sukanta Majumdar : 'প্রয়োজনে তৃণমূলকে কোচবিহার দাওয়াই', হুঁশিয়ারি সুকান্তর; পাল্টা কী বলল শাসক দল ?
Verbal Tussle : রাজনৈতিক নেতাদের হুমকি-হুশিয়ারি-হুঙ্কারে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।
অর্ণব মুখোপাধ্যায়, অনির্বাণ বাগচী ও সৌমেন চক্রবর্তী, কলকাতা : পঞ্চায়েত ভোটে প্রয়োজন পড়লে তৃণমূলকে (TMC) কোচবিহার (Coochbehar) দাওয়াই। হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি (BJP State President) সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। বিছুটি পাতা ঘষে বিজেপিকে জবাব দেবেন সাধারণ মানুষ, পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। পঞ্চায়েত ভোটের আগে নেতায় নেতায় বাগযুদ্ধে চড়ছে রাজনীতির উত্তাপ।
সরগরম রাজ্য-রাজনীতি-
ব্যাটলফিল্ড কোচবিহারে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে ঘটছে একের পর এক ঘটনা। সম্প্রতি সিতাইয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিশীথ প্রামাণিকের গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপি কর্মীদেরও পাল্টা প্রতিরোধ করতে দেখা যায়। সেই ঘটনার রেশ টেনেই তৃণমূলকে পঞ্চায়েত ভোটে কোচবিহার দাওয়াই দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন সুকান্ত মজুমদার !
বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, যখন পুরভোট হয়েছিল, সেই সময়কার বিজেপি আর এখনকার বিজেপি আকাশ-পাতাল পার্থক্য । কিছুদিন আগে কোচবিহারে আমরা সেটা বুঝিয়েও দিয়েছি তৃণমূল কংগ্রেসকে। পঞ্চায়েত নির্বাচন এইভাবে চোখে চোখ রেখে হবে। দুধ দিলে ক্ষীর পাবে। কিন্তু, যদি অন্য কিছু দিতে হয়...দিতে আসে তাহলে তার উপযুক্ত পরিণামও পাবে।
এদিকে পাল্টা তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, যদি পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করতে আসেন, যদি তৃণমূলের কোনও কর্মীকে মারতে আসেন, যদি তৃণমূলের কর্মীদের ওই কোচবিহার দাওয়াই দেওয়ার নাম করে আক্রমণ করেন, তাহলে এমন ভাবে শরীরে, জনগণ বিছুটি পাতা, বিছুটি পাতা মানে বোঝেন ? এমন ভাবে বিজেপি নেতাদের শরীরে ডলে দেওয়া হবে, যে ওইটা মানুষকে দেখাতেও পারবে না আর চুলকাতেও পারবে না। ওই চুলকুনির জ্বালায় ছটফট করবে। সেই ব্যবস্থা জনগণ করবে।
নভেম্বর মাস। হালকা শীতের আমেজ। কিন্তু, টের পাওয়া যাচ্ছে পঞ্চায়েতের গরম। দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করতে লাঠি, বাঁশ, ঝাঁটার দাওয়াইও দিচ্ছেন নেতারা ! নারায়ণগড়ের তৃণমূল বিধায়ক সূর্য অট্ট বলেন, উত্তরপ্রদেশে ১০০ দিনের কাজ করলে টাকা পেলে, অসমে ১০০ দিনের কাজ করে টাকা পেলে, আর বাংলা ১০০ দিনের কাজ করলে টাকা পাবে না। বিজেপিরা ঘরে ঢুকলে ঝাঁটা মেরে তাড়ান, ঝাঁটা মেরে তাড়ান। তাই বিজেপিকে কোনওভাবেই আসতে দেওয়া যাবে না।
পাল্টা মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সহ সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ঝাঁটা মেরে বিদায় করার কথা বিজেপি কর্মীদের যেভাবে সূর্য অট্ট বিধায়ক বলছেন, কিছুদিন অপেক্ষা করুন, জনগণ আপনাদের ঝাঁটা মেরে বিদায় করবেন।
পঞ্চায়েত ভোট আসতেই বিভিন্ন দলের নেতারা জেলায় জেলায় সফর করছেন। চলছে মিটিং-মিছিল। বিজেপি নেতারা সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে একাধিক বৈঠক করে এসেছেন। এই প্রেক্ষাপটেই রবিবার নবগ্রামে দলীয় সভায় বিজেপির নাম না করে বগাড়ি পাখি বলে কটাক্ষ করেন ফিরহাদ হাকিম! তৃণমূল বিধায়ক ও পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী বলেন, বগাড়ি পাখি আসছে...লোকসভায় এসেছিল, বিধানসভায় এসেছিল এবার পঞ্চায়েতে আবার আসবে। আমি এই করব, আমি সেই করব, আমি হ্যান করব...আমাকে ভোট দাও...এখন থেকে ঘুরছে। কিছু কিছু আছে এখন থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় সভা সমিতি করছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি বলব তাঁকে খাইয়ে দাইয়ে রাখুন। ভারী হয়ে গেলে তাঁকে আবার নিজে খেয়ে নিন। কারণ বগাড়ি দিয়ে কাজ হবে না।
পাল্টা রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, বগাড়ি পাখি বলা খুব খারাপ। পঞ্চায়েতের আগে উত্তপ্ত করতে চাইছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিল মাস নাগাদ হতে পারে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে রাজনৈতিক নেতাদের হুমকি-হুশিয়ারি-হুঙ্কারে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।
আরও পড়ুন ; 'মেরে পঞ্চায়েত নিতে চাই না', হিংসাবিহীন নির্বাচনের ডাক তৃণমূল নেতৃত্বের; উঠল দুর্নীতির প্রসঙ্গও