Mahishadal Rajbari Durga Puja : ১০৮টি নীল পদ্মে এখনও হয় দেবীবন্দনা, শুরু হল মহিষাদল রাজবাড়ির ২৫০ বছরের দুর্গাপুজো
Durga Puja 2023: জৌলুস কমলেও রীতি মেনেই পূজিতা হন মা। আগে পর্দার আড়াল থেকে সবকিছু দেখতে হত বাড়ির মহিলাদের। এখন সকলের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেন তাঁরা।
বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে নবরাত্রি উৎসব ( Navratri Utsav ) । দুর্গাপুজোর বোধন আর চারদিন পর। ষষ্ঠীতে। কিন্তু প্রতিপদেই শুরু হয়ে গেল মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। মহালয়ার ( Mahalaya ) পরের দিন প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। রাজ রাজত্বের জৌলুশ, আড়ম্বর অনেকটা কমলেও আচারে কোনও খামতি নেই।
শোনা যায়, ১৭৭৬ সালে মহিষাদলের রানি জানকীর আমলে রাজবাড়ির দুর্গাপুজো শুরু হয়। রবিবার প্রতিপদে ঘট স্থাপনের মধ্য দিয়ে শুরু হল দুর্গাপুজো। জলাশয় ঘেরা সবুজের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে দুধসাদা রাজপ্রাসাদ। চারপাশে ছড়িয়ে আছে ইতিহাস, আছে গল্পগাথা। রাজাই শুধু নেই!
মহিষাদল রাজবাড়ির সদস্য শঙ্করপ্রসাদ গর্গ জানালেন, মহালয়ার পরের দিন রাজবাড়ির দুর্গামণ্ডপ লাগোয়া অশ্বত্থ গাছের তলায় নয়টি ঘট প্রতিষ্ঠা হয়। তারপর থেকে প্রতিদিনই ঘটপুজো হয়। সপ্তমী থেকে মূর্তি পুজো হয়। প্রতিমার একপাশে ঘট, অন্যপাশে ধান রাখা হয়।
এই পুজোয় নানারকম রীতি। প্রতিপদে ঘট ওঠার পর সেই জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হত বিভিন্ন শষ্য। পুজোর পর দেখা হত, কেমন গাছ হয়েছে। সেই গাছ দেখেই অনুমান করা হত সে বছর কেমন ফলন হতে পারে। সেই অনুমানের ওপর ভিত্তি করেই ঠিক হত রাজস্ব। রাজস্ব আদায়ের সেই রীতি আজ না থাকলেও পুরনো অনেক প্রথাই রয়ে গিয়েছে মহিষাদল রাজবাড়ির আড়াইশো বছরের পুরনো পুজোয়।
শোনা যায়, দুর্গাপুজো শুরু করার পরই খরার মধ্যেও গ্রামে ভাল ধান ফলেছিল। তাই ভাল ফসলের আশায় আজও দেবীর পাশে ধান রাখা হয়। পুজোয় ১০৮টি নীল পদ্ম দেওয়ার চলও রয়েছে। আগে পর্দার আড়াল থেকে সবকিছু দেখতে হত বাড়ির মহিলাদের। এখন সেই আড়াল উঠে গিয়ে সকলের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেন রাজবাড়ীর প্রমীলারা।
আরও পড়ুন, পুজোয় রসনায় ভেজাল নেই তো? পরীক্ষা করবে KMC
আগে পুজোর দিন অনুযায়ী চালের ওজনের ভোগ রান্না হত। যেমন, পঞ্চমীতে পাঁচমণ, ষষ্ঠীতে ছয়, সপ্তমীতে সাতমণ, অষ্টমীতে ৮ মণ, কিন্তু বর্তমানে সেই রীতি কিছুটা পাল্টেছে। আগে, সন্ধি পুজোর সময় কামান দাগা হত। কিন্তু সেসব এখন অতীত। বাড়ির সদস্যরা থাকেন কলকাতায়। পুজো হলেই ফিরে আসেন শিকড়ের টানে। আর ঐতিহ্যের টানে আজও রাজবাড়ির দুর্গামণ্ডপে ভিড় জমান এলাকার বাসিন্দারা।