Nabanna News: ‘মহিলারা সংসারও চালায়, সরকারও চালায়, চালাকিটা আমরাও বুঝি’, বকেয়া টাকা নিয়ে ফের কেন্দ্রকে নিশানা মমতার
Mamata Banerjee: গত ১৫ বছরের কাজের খতিয়ান নিয়ে মঙ্গলবার নবান্নের সভাঘর থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা।

কলকাতা: রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া টাকা নিয়ে ফের সরব মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটির বেশি টাকা প্রাপ্য এখনও হাতে এসে পৌঁছয়নি বলে জানালেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকার চালাকি করছে বলে অভিযোগ তুললেন যেমন, তেমনই জানিয়ে দিলেন, রাজ্য সরকার বরাবরই কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক চেয়ে এসেছে। (Mamata Banerjee)
গত ১৫ বছরের কাজের খতিয়ান নিয়ে মঙ্গলবার নবান্নের সভাঘর থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই প্রাপ্য বকেয়া নিয়ে নতুন করে সুর চড়ান তিনি। বলেন, "গ্রামীণ সড়ক প্রকল্প, আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ...চার বছর ধরে এক নম্বর ছিলাম আমরা। তাই টাকা বন্ধ করে দিয়েছে আমাদের। কী বলব বলুন! আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটির বেশি টাকা পাই। আমাদের টাকাটা এখনও দিচ্ছে না। আশা করব, তাঁরা দেবেন। কবে আর দেবেন! নির্বাচন তো এসে গিয়েছে!" (Nabanna News
বকেয়া টাকা দেওয়া নিয়ে কেন্দ্র চালাকি করছেন বলেও দাবি করেন মমতা। বলেন, "এর পর কি ফেব্রুয়ারিতে ছাড়বেন (টাকা)? তখন বলবেন, টাকাটা মার্চে খরচ হল না, ফিরে গেল। তখন তো আর খরচের সময়ও থাকবে না! প্রসেস আছে তো? প্রত্যেক অর্থবর্ষের টাকা সেই অর্থবর্ষেই খরচ করতে হয়। চালাকিটা আমরাও বুঝি।"
তাই আণাদের টাকা বন্ধ করেছে। গ্রামীণ রাস্তায় পর পর চার বছর ১ নম্বর ছিসান। আবাসে ১ নম্বর ছিলাম চার বছর। ১০০ দিনের কাজেও। কী বলব বলুন! আমরা তো কেন্দ্রীয় সরাকরের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটির বেশি পাই। আমাদের টাকাটা এখনও দিচ্ছে না। আশা করব তারা দেবে। কবে আর দেবেন! নির্বাচন তো এসে াচ্ছে। এর পর কি ফেব্রুয়ারিতে ছাড়বেন ছেড়ে বলবেন, টাকাটা মার্চে খরচ হল না ফিরে গেল! তখন তো আর খরচের সময়ও থাকবে না! প্রসোস আছে তো! প্রত্যেক অর্থবর্ষের টাকা বছরেই খরচ করতে হয়। চালাকিটা আমরাও বুঝি।
ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন, অর্থাৎ SIR-এ যাঁরা মারা গিয়েছেন, যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি, তাঁদের জন্য এদিন আর্থিক সাহায্য়ের কথাও তুলে ধরেন মমতা। জানান, ৩৯ জন মারা গিয়েছেন বলে খবর রয়েছে তাঁর কাছে। বুথ লেভেল অফিসার-সহ ১৩ জন ভর্তি হাসপাতালে। তাঁদের অবস্থা গুরুতর। পাশাপাশি, আত্মহত্যা করতে গিয়ে গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন তিন জন। যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ৩ লক্ষ করে এবং যাঁরা হাসপাতালে, তাঁদের ১ লক্ষ করে দেওয়ার কথা জানান।
আর সেই প্রসঙ্গেও ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা টেনে আনেন মমতা। তিনি বলেন, "আমরা দুর্ঘটনা, দুর্যোগ, দুরারোগ, দুর্ভোগ, সবেতেই থাকি। এটা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। জানি টাকা-পয়সা পাচ্ছি না আমরা। অনেক অসুবিধা হচ্ছে সংসার চালাতে। মহিলারা সংসারও চালায়, আবার সরকারও যখন চালায়, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতোই কী ভাবে ম্যানেজ করা যায়, সেটা ভাইবোনেরা মিলে মিলিত ভাবেই করে। আমরাও সেভাবেই করছি। অনেক যন্ত্রণা, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারকে বলব, অনেক ধন্যবাদ আপনারা আমাদের টাকা আটকে রেখেছেন তার জন্য। তাতেও মনে রাখবেন, যতই অত্যাচার, অপপ্রচার, কুৎসা, চক্রান্ত করুন, আমরা কিন্তু আপনাদের সঙ্গে সহযোগিতা চাই, অসহযোগিতা নয়। আশা কির এটুকু শুনতে পাচ্ছেন আপনারা। এটা সরকারি বৈঠক। তাই যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে বলেই আশা করা হয়। শুধু ঝগড়া নয়।"
সাম্প্রদায়িক নয়, তিনি ধর্মনিরপেক্ষতার রাজনীতি করেন বলেও জানান মমতা। তিনি বলেন, "যাঁরা বিরোধিতা করেন, তাঁদের ধন্যবাদ। যাঁরা ভালবাসেন, তাঁদের কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব, যতদিন বেঁচে থাকব। যতদিন থাকবে শ্বাস, ততদিন থাকবে আশ্বাস, ততদিন থাকবে বিশ্বাস, ততদিন থাকবে বিশ্বাস, ত দিন থাকবে ভরসা।। সব ধর্ম, সব বর্ণের...আমি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করি না, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি করি। আমি সংবিধান মানি, তাই সর্বধর্মের মানুষকে সম্মান করি। বাংলায় সবার জন্য নিরাপত্তা রয়েছে। এখানে কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্প গড়ে অরাজকতা সৃষ্টি করতে দিই না, দুর্ভোগে ফেলি না। বাংলার মানুষ বাংলায় ভাল থাকুন। আমরা যেমন অন্য রাজ্যের ব্যাপারে নাক গলাই না। তেমনই কেন্দ্রীয় সরকার, দয়া করে কিছু বলার থাকলে রাজ্যকে বলবেন। এমন হুলিয়া জারি করবেন না, যা ব্রিটিশরা করত। জোর করে নির্দেশ চাপিয়ে দেবেন না, যাতে মানুষের ক্ষতি হয়। আমরা মানুষকে সাহায্য় করবই, আমরা গণতন্ত্র, সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ। "























