ABP ANANDA EXCLUSIVE: পোস্টার-বিতর্ক নিয়ে কী বলছেন মহুয়া মৈত্র? এবিপি আনন্দকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার
ABP ANANDA EXCLUSIVE: মহুয়া মৈত্রের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের তুফান রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপির দাবি, মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। আদৌ কি তাই? কী বলছেন মহুয়া? এবিপি আনন্দকে একান্ত সাক্ষাৎকার।
আশাবুল হোসেন, কলকাতা: মহুয়া মৈত্রের (Mohua Maitra) মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের তুফান রাজ্য রাজনীতিতে। বিজেপির দাবি, মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। আদৌ কি তাই? কী বলছেন মহুয়া? এবিপি আনন্দকে (abp ananda) এক্সক্লুসিভ (exclusive) সাক্ষাৎকারে (interview) বললেন, 'বিজেপি একটা বহিরাগত দল। উত্তর ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদ আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে। বাংলার মানুষ তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমিও সেটাই করছি। আমি কী ভাবে পুজো করব ওঁরা বলে দেবেন না।'
কী বললেন মহুয়া মৈত্র?
মা কালীর পোস্টার ঘিরে তৃণমূল সাংসদের মন্তব্যে এর মধ্যেই একাধিক জেলায় এফআইআর দায়ের হয়েছে বলে খবর। যদিও মহুয়ার বক্তব্য, যে ছবি ও পোস্টার নিয়ে এত বিতর্ক সে ব্যাপারে তিনি একটিও কথা বলেননি। যেটা বলেছেন সেটা বাঙালির কালীপুজো নিয়ে। এবং সেই মন্তব্য থেকে একচুলও নড়ছেন না।
কিন্তু তাঁর নিজের দলই তো তাঁর পাশে দাঁড়ায়নি। এই নিয়ে কী বলছেন? সংবাদমাধ্যমের সামনে তৃণমূলের অন্দরে কী বলবেন, সে কথা এড়িয়ে গেলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। তবে চাঁচাছোলা উত্তর, 'উপযুক্ত ফোরামে যা বলার বলব।'
যদিও বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের মতে, তৃণমূল সাংসদের সামনে এখন একটাই রাস্তা খোলা। নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে তাঁকে। পাল্টা চ্য়ালেঞ্জের সুর কৃষ্ণনগরের সাংসদের গলায়। বিজেপির উদ্দেশে তাঁর বার্তা, 'বাংলার প্রত্যেকটা পুলিশ স্টেশনে যেখানে আপনারা এফআইআর করেছেন তার দশ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে এমন একটা কালীমন্দির রয়েছে যেখানে মা আমি যে ভাবে বলেছি সেভাবেই পুজিত হন। আপনারা হলফনামা দিয়ে বলুন, এভাবে পুজো হয় না। আপনাদের বিরোধী দলনেতা হলফনামা দিয়ে একটা বিল আনুন যে, তারাপীঠে যে ভাবে কারণবারি ও মাংস দিয়ে মাকে পুজো দেওয়া হয় তাতে তাঁর হিন্দুত্বে আঘাত লাগে। চ্যালেঞ্জ করছি মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারকে। ভোপাল থেকে ২০০ কিলোমিটার দূর উজ্জিয়িনী শহরে শক্তিপীঠ রয়েছে। সেখানে মা কালীর আরাধনা,পুজো কারণবারি দিয়ে হয়। এবং সেখানে একটা স্পেশাল কাউন্টার রয়েছে সেখানে এই লিকার বিক্রি হয়।' দেশের আর্থিক দুরবস্থা থেকে নজর ঘোরাতে গোটাটাই ধর্মীয় মেরুকরণের ছক, পাল্টা অভিযোগ তাঁর।
নূপুরের সঙ্গে তুলনা
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, দলের সাসপেন্ডেড নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে বিজেপি কোণঠাসা হয়েছিল। সেই অবস্থায় মহুয়ার মন্তব্য তাদের অক্সিজেন জুগিয়েছে। তৃণমূল সাংসদ সেই অভিযোগ মানছেন না। তাঁর কথায়, 'নূপুর শর্মা অন্য ধর্মের উপাসনায় আঘাত লাগে এমন মন্তব্য করেছেন। আমি আমাদের ঈশ্বরকে সম্মান দিয়ে কথাটা বলেছি। কাজেই দুটো এক নয়।' বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে ২৯৫(এ) ধারা গ্রাহ্য হলেও তাঁর বিরুদ্ধে এই ধারা যে ধোপে টিকবে না, সে দাবিও করেন মহুয়া। যুক্তি একটাই। যাঁর বিরুদ্ধে এই ধারা আনা হচ্ছে তাঁকে দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে শত্রুতা তৈরির জন্য কোনও মন্তব্য করতে হবে। কিন্তু মহুয়া নিজে শাক্ত। তিনি অন্য ধর্ম সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি। ফলে এই ধারা গ্রাহ্য হবে না।
বিজেপি অবশ্য কোনও যুক্তি মানতে নারাজ। মহুয়াও নিজ অবস্থানে অনড়। কোথায় শেষ হবে এই লড়াই?
উত্তরের অপেক্ষায় গোটা রাজ্য।
আরও পড়ুন:অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশের পরই 'হাঁপানির কারণ' পার্থেনিয়াম কাটতে উদ্যোগ তৃণমূলের, সিবিআই খোঁচা বিজেপির