Nadia News: কলকাতা থেকে জেলা-কালীপুজোর নামে দেদার চাঁদা আদায় ! রাজ্য সড়কেই গাড়ি থামিয়ে জুলুমবাজির অভিযোগ
Kali Puja Donation Torture : কলকাতা কি ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠছে? এই প্রশ্ন ঘিরে তোলপাড়ের মধ্যেই ফের চাঞ্চল্যকর ঘটনা নদিয়ায়

নদিয়া: কলকাতা থেকে জেলা-কালীপুজোর নামে দেদার চাঁদা আদায়! নদিয়ার ধানতলায় রাজ্য সড়কেই গাড়ি থামিয়ে চাঁদার জুলুমবাজি। বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়েই রাজ্য সড়কে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ। স্বেচ্ছায় চাঁদা দিলেই নেওয়া হচ্ছে, প্রশ্নের মুখে দাবি উদ্যোক্তাদের।
কলকাতা কি ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় হয়ে উঠছে? এই প্রশ্ন ঘিরে তোলপাড়ের মধ্যেই রাজ্যজুড়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে চাঁদা নিয়ে জুলুমবাজি। চাওয়ামাত্র চাঁদা না দেওয়ায়। বীরভূমের সিউড়িতে সেনা জওয়ানকে এইভাবেই রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। কিল, চড়, লাথি, ঘুষি...বাদ যায়নি কিছুই। ৫ মাসের সন্তানকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার পথেই চলে তাণ্ডব। রেহাই পাননি সেনা জওয়ানের স্ত্রীও! আক্রান্ত সেনা জওয়ানের স্ত্রী অপরাজিতা দত্ত বলেন, সবাই মিলে ওকে ধরে নিয়ে গিয়ে ওখানে ফেলে ১০-১২ জন মিলে মেরেছে। আমার হাতের আঙুলটা নড়ে গেছে। ফুলে গেছে। কাশ্মীরে কর্মরত জওয়ানকে মারধরের অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর এই ঘটনা ঘিরে যখন তোলপাড় তখন বীরভূমেরই শান্তিনিকেতনের উত্তর নারায়ণপুরে দেখা গেল এই ছবি। রাস্তায় বাস, গাড়ি, বাইক আটকে চাঁদা তোলা হচ্ছে।
চাঁদা আদায়কারী : চাঁদা তুলিনি।
প্রশ্ন: আমরা তো দেখলাম চাঁদা তুলছিলেন। ছবি আছে আমাদের কাছে।
চাঁদা আদায়কারী: চাঁদাই তুলছিলাম, কালী ঠাকুরের। কালী ঠাকুরের, কালী পুজোর চাঁদা তুলছিলাম।
খাস কলকাতাতেও দেখা গেল চাঁদা চেয়ে জুলুমবাজির ছবি। বেলেঘাটা থেকে ইএম বাইপাস যাওয়ার পথে ক্যানাল সাউথ রোড। পাশেই ট্যাংরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট। সেখান থেকে পণ্যবাহী গাড়ি বেরোতেই পাকড়াও করছেন চাঁদা আদায়কারীরা। ক্যামেরা দেখেই দৌড় দেন তাঁরা। চাঁদার জুলুমের এই ছবি ফিরে এল কী করে? কী করছে পুলিশ? পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া-কেতুগ্রামের মাঝে লোচনদাস সেতুর উপরেও চাঁদার বিল হাতে দৌরাত্ম্য! রাস্তায় বাস, লরি থেকে টোটো আটকে চলছে টাকা আদায়। অভিযোগ, চাঁদা না দিলেই জুটছে হুমকি। এমনকী গাড়িও আটকে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এক যাত্রী বলেন,আমাদের জোর জবরদস্তি করা হচ্ছে টাকা দিতেই হবে। আমরা বলছি কাল দেব, না আজই দিতে হবে। না দিলে টায়ার পাংচার হলে তখন কী করবি? যদিও চাঁদা আদায়কারীরা কেউ মুখ খুলতে নারাজ..কীসের চাঁদা দেখি। কোথাকার দেখি। এদিকে বিলটা দেখাও, বিলটা দেখাও। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, কারা রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদা তুলছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এইভাবে চাঁদা আদায় করা যায় না।
নদিয়ার ধানতলার আড়ংঘাটা-হোসেনপুর রাজ্য সড়ক দিয়ে যাওয়া যাত্রীরাও চাঁদা আদায়কারীদের উপদ্রবে নাজেহাল হচ্ছেন। হাওড়ার আমতার জয়পুর-খালনা রোডেও চাঁদা আদায়কারীদের দাপট! এক টোটোচালককে মারধরের অভিযোগ পর্যন্ত ওঠে। এরপরই জয়পুর থানার দ্বারস্থ হন টোটোচালকরা। আমতা জয়পুরের টোটো চালক মুস্তাক আহমেদ , আমাকে যাত্রী নিয়ে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। বলছে ক্লাবের চাবি নিয়ে আয়, স্টিকারটা নিয়ে আয়, গাড়িতে মারব। আমি যাত্রী নিয়ে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকব?পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে আমতার এই রাস্তায় জুলুমবাজি বন্ধ হয়েছে। কিন্তু হাওড়ারই আরেক প্রান্তে টিকিয়াপাড়ার ব্যস্ত রাস্তায় এভাবেই গাড়ি আটকে চাঁদা আদায় চলছে। রাজ্য়ের নানা প্রান্তে যখন এই জুলুমবাজি চলছে, তখন পুলিশি নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। অন্যদিকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে রাস্তায় বাঁশ ফেলে কালীপুজোর চাঁদা আদায় করার ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। ঘুগিমুড়া এলাকায় সাদা পোশাকে পুলিশ যেতেই তাদের থেকেও টাকা চাওয়া হয়। তারপরই হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় ৫ জনকে।






















