North 24 Pargana News : ম্যাট্রিমনি ওয়েবসাইট থেকে সম্পর্কে জড়়িয়ে ধনে-প্রাণে মারা পড়ার জোগাড়! প্রতারককে কী শাস্তি দিল আদালত?
Matrimonial Fraud : দু’মাস ধরে দু’জনের মধ্যে অনলাইনে কথাবার্তা হয়েছিল। এর পরে এক দিন ওই ব্যক্তির কাছে শুল্ক বিভাগের নাম করে একটি ফোন আসে।
সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা : বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজতে ওয়েবসাইটে খুলেছিলেন প্রোফাইল। আর সেখানেই এক ' নকল প্রেমে' ফেঁসে গেলেন এক তথ্য প্রযুক্তি কর্মী। তাতে শুধু মানসিক ধাক্কাই খেলেন না, একেবারে ধনে-প্রাণে মারা পড়ার জোগাড় হল। লক্ষ লক্ষ টাকা খুইয়ে যখন পুলিশের দ্বারস্থ হলেন ওই ব্যক্তি তখন সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। যাঁর ভালবাসার ফাঁদে পড়ে তিনি এত টাকা খোয়ালেন তিনি আদতে কোনও মহিলাই নয়। প্রোফাইলটা আগাগোড়াই ফেক। মঙ্গলবার প্রতারণা-মামলায় অভিযুক্তকে পাঁচ বছরের জেল হেফাজতের রায় শোনাল বারাসাত আদালত।
আদালত থেকে বেরিয়ে সরকারি আইনজীবী জানান, বিয়ের সম্বন্ধের জন্য একটি ওয়েবসাইটে এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর প্রোফাইল খোলেন। সেখানে এক বিদেশি নাগরিক এক তরুণীর নামে ভুয়ো প্রোফাইল খুলে ওই ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ জমান। প্রোফাইলের ছবি থেকে তথ্য, আগাগোড়াই ছিল ভুয়ো।
বারাসত আদালতের সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলার সরকারি আইনজীবী শৌভিক বসুঠাকুর জানান, প্রতারিত ব্যক্তি ওড়িশার বাসিন্দা । তিনি এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী। ২০১৯ সালে এই ভুয়ো প্রোফাইলের খপ্পরে পড়েন তিনি। ঠিক কী ঘটেছিল তার সঙ্গে? জানা গেল, ওই ওয়েবসাইটের মারফত দু’মাস ধরে দু’জনের মধ্যে অনলাইনে কথাবার্তা হয়েছিল। এর পরে এক দিন ওই ব্যক্তির কাছে শুল্ক বিভাগের নাম করে একটি ফোন আসে। তাঁকে জানানো হয়, ওয়েবসাইটে পরিচিত হওয়া ওই তরুণী ভারতে সাত কোটি টাকার একটি ডিমান্ড ড্রাফট নিয়ে এসেছেন। সেটি শুল্ক দফতর আটকে দিয়েছে। সেটি ছাড়াতে দু’লক্ষ মতো টাকার প্রয়োজন। সরল বিশ্বাসে তিনি ওই টাকা পাঠিয়েও দেন তাঁকে বলা ঠিকানায়। তারপরও কখনও ব্যাঙ্ক, কখনও শুল্ক বিভাগের নাম করে বারবার ফোন আসতে থাকে। আর তিনি ওয়েবসাইটে পরিচিত ওই তরুণীর প্রতি দুর্বল হয়ে টাকা দিতে থাকেন। অথচ তিনি কোনও দিন তাঁকে দেখেনইনি।
তাহলে ফোনের কথায় কেন বিশ্বাস করলেন ? প্রতারিতর দাবি, ফোনে তাঁর ওই মহিলার কান্না শোনানো হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বারবার টাকা দিতে দিতে ওই ব্যক্তি বুঝতে পারেন, কোথাও একটা গণ্ডগোল আছে। তখন খোঁদ খবর নিয়ে দেখেন, আমেরিকাবাসী এক তরুণীর ছবি ব্যবহার করে ভুয়ো প্রোফাইল খুলে তাঁকে ঠকানো হয়েছে। এর পরেই তিনি বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আইনজীবী শৌভিক বলেন, এটি ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। এই ধরনের একটা চক্র সক্রিয় রয়েছে। মানুষকে সতর্ক হতে হবে। তাও অনেক কম সময়ের মধ্যে মামলাটির নিষ্পত্তি হয়েছে।
বিধাননগর সাইবার থানার পুলিশ হরিয়ানা থেকে এহিকিয়োইয়া বলে একজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত নিজেকে নাইজিরিয়ার নাগরিক বলে দাবি করলেও তার সপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ দেখাতে পারেনি। তার পাসপোর্ট ও ভিসা— দু’টিই জাল বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন :