(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Raiganj : প্রতি ওয়ার্ডে নিজের মনোনীত প্রতিনিধি বসানোর কথা ঘোষণা কৃষ্ণ কল্যাণীর, রায়গঞ্জে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৃণমূলে ?
Krishna Kalyani : স্থানীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শাসকদলেরই নেতা রায়গঞ্জ পুরসভার সহকারী পুরপ্রশাসক
সুদীপ চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ : পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসছে। এরকম একটা সময়ে রায়গঞ্জে শাসকদলের অন্দরে দ্বন্দ্বের খবর সামনে চলে এল। রায়গঞ্জ পুর এলাকায় তৃণমূলে অন্তর্দ্বন্দ্ব এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে, বিজেপির টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দেওয়া স্থানীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন শাসকদলেরই নেতা রায়গঞ্জ পুরসভার সহকারী পুরপ্রশাসক।
২৭ ওয়ার্ডের রায়গঞ্জ পুরসভা। আগেই মেয়াদ ফুরিয়েছে এই পুরসভার। গত বছর এপ্রিল মাসে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়। এখন পুরসভা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ৩ সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলী। এখানকার ২৭টি ওয়ার্ডে কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বিদায়ী কাউন্সিলররা। এভাবেই চলছিল। তার মধ্যেই প্রতি ওয়ার্ডে নিজের মনোনীত প্রতিনিধি বসানোর কথা ঘোষণা করেছেন স্থানীয় বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়কের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে শাসকদলেরই একাংশ।
বিতর্ক শুরু হয়েছে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর প্রকাশ করা তালিকাকে ঘিরে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, রায়গঞ্জ পুরসভার ২৭টি ওয়ার্ডেই নিজের মনোনীত প্রতিনিধি বসানোর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। একুশের বিধানসভা ভোটের পর, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ক নিজের ফেসবুক পেজেও সেকথা জানিয়ে দেন।
তৃণমূল নেতা ও রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, একটাই উদ্দেশ্য যাতে পরিষেবাগুলো ভাল করে দিতে পারি। শহরের পরিষেবা থেকে যাতে কেউ বঞ্চিত না হয়, নেতারা পঞ্চায়েতে দায়িত্ব পাবে, নিয়োজিত হবে, রায়গঞ্জ পুর এলাকায় যাতে কেউ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্যই ২৭টি ওয়ার্ডে রিপ্রেজেন্টেটিভ রেখেছি।
বিধায়কের এই তালিকা যে তাঁরা মানছেন না, সাফ জানিয়ে দিয়েছেন রায়গঞ্জ পুরসভার সহকারী প্রশাসক। রায়গঞ্জ পুরসভার সহকারী প্রশাসক ও তৃণমূল নেতা অরিন্দম সরকার বলেন, দলে পদ দিতে পারেন একমাত্র মমতা ও অভিষেক। তার বাইরে কেউ পদ সৃষ্টি করতে পারে না। তাই আমরা এটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। বিধায়কের অভিজ্ঞতা কম। তার হয়তো কোম্পানি চালানোর অভিজ্ঞতা আছে, দল চালানোর কোনও অভিজ্ঞতা নেই। তার এটাই প্রমাণ। দল আর কোম্পানি এক নয়। নিজের মনগড়া কিছু করতে গেলে আমরা রাজ্য নেতৃ্ত্বকে জানাব। বিজেপি থেকে এসেছেন বলে কোনও প্রিভিলেজ তিনি পাবেন না।
শাসকের ঘরের বিবাদ সামনে আসতেই আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা। জেলা বিজেপির সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, নিজেরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারছে না। দল নির্ধারিত কো-অর্ডিনেটর রয়েছে। বিধায়কের তার ওপর আস্থা নেই। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। সংগঠন একটা করছে, বিধায়ক একটা করছে। সংগঠনে নেতাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। সাধারণ মানুষের মধ্যেও গ্রহণযোগ্যতা নেই।
উত্তর দিনাজপুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উত্তম পাল বলেন, মানুষ পুর পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আছে ২৭ জন কো-অর্ডিনের, আবার ২৭ জনকে বসানো মানে কোথা থেকে তাদের টাকা দেবে ? কীভাবে দেবেন, তার মানে ডেভেলপমেন্টের টাকা এখানেও ভাগ বাঁটোয়ারা হবে। সিন্ডিকেট হবে।
বিতর্কের এই জল কত দূত গড়ায় সেটাই এখন দেখার।