Paschim Medinipur News: ট্রেনের শৌচাগারে সন্তানের জন্ম দিলেন মহিলা, সদ্যোজাতর অবস্থা আশঙ্কাজনক
গতকাল রাত ১১টা নাগাদ চিকিৎসক এবং অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রেলওয়ে উদ্ধার করে প্রসূতি এবং সদ্যোজাত শিশুটিকে। চিকিৎসকরা দেখেই বুঝতে পারেন যে, প্রসবের পর প্রসূতি ঠিক থাকলেও অক্সিজেনের অভাব রয়েছে সদ্যোজাতর।
অলোক সাঁতরা পশ্চিম মেদিনীপুর: তিন মাস পর স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন বিহারের (Bihar) যুবক। কটক থেকে বিহার পেরার পথে ট্রেনেই স্ত্রীর প্রসব বেদনা ওঠে। কোনও চিকিৎসক না পাওয়ায় ট্রেনের শৌচাগারেই জন্ম হয় সন্তানের। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছে, প্রসূতি ঠিত থাকলেও আশঙ্কাজনক অবস্থা সদ্যোজাতর। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালেন রেলের কর্মীরা।
জানা গিয়েছে, পেশায় ফুচকা বিক্রেতা সরোজ কুমার তিনমাস পর পরিবারের পাঁচ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে কটক থেকে বিহারের বাড়িতে ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিলেন অন্তঃস্ত্বা স্ত্রী। ট্রেনেই তাঁর প্রসব বেদনা ওঠে। আর ট্রেনে কোনও চিকিৎসর না পাওয়ায় শৌচাগারেই সন্তানের জন্ম দেন মহিলা। কটক সংলগ্ন স্টেশনে নেমে চিকিৎসকের খোঁজ করেন সরোজ কুমার। কিন্তু সেই সময় পড়ে যান দুষ্কৃতীদের খপ্পরে। ছিনতাই হয়ে যায় টাকাসহ তাঁর সমস্ত সামগ্রী। ওই অবস্থাতেই মেদিনীপুর স্টেশনে আসার আগে রেলওয়ে বিষয়টি জানতে পারে। গতকাল রাত ১১টা নাগাদ চিকিৎসক এবং অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রেলওয়ে উদ্ধার করে প্রসূতি এবং সদ্যোজাত শিশুটিকে। চিকিৎসকরা দেখেই বুঝতে পারেন যে, প্রসবের পর প্রসূতি ঠিক থাকলেও অক্সিজেনের অভাব রয়েছে সদ্যোজাত শিশুটির। তার দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন রয়েছে।
আরও পড়ুন - Paschim Medinipur: কোথাও ঘোলা জল, কোথাও সরু সুতোর মতো ধারা, জল-সঙ্কটে নাকাল চন্দ্রকোণা
প্রায় ৪০ মিনিট পর্যন্ত ট্রেন দাঁড় করিয়ে মেদিনীপুর স্টেশনে রেলওয়ে কর্মীরা ওই পরিবারকে বোঝান প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য। দীর্ঘক্ষণ পর কোনভাবে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো সম্ভব হয়।
সূত্রের খবর, সরোজ কুমার নামে ওই ব্যক্তি বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা। কটকে তিনি ফুচকা বিক্রি করেন। পরিবারের পাঁচ সদস্য়কে নিয়ে কটকেই ভাড়া থাকতেন। পরিবারের সদস্য এবং অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পিঙ্কি কুমারিকে নিয়ে তিনমাস পর বিহারের বাড়িতে ফিরছিলেন। পুরি জয়নগর এক্সপ্রেস ধরে কটক থেকে গাড়ি চালু হওয়ার পরে পিঙ্কি কুমারির প্রসব বেদনা হয়। সেই মুহূর্তে রেলওয়েতে কোন চিকিৎসকের সহযোগিতা পায়নি বলেই অভিযোগ করেছএন সরোজ কুমার। ট্রেনের শৌচাগারেই পুত্র সন্তানের জন্ম দেন মহিলা। সরোজ কুমার জানাচ্ছেন, কটক সংলগ্ন স্টেশনে তিনি যখন চিকিৎসকের খোঁজ করছেন, তখন একদল দুষ্কৃতী তাঁর মানিব্যাগ এবং সমস্ত টাকা পয়সা নিয়ে চম্পট দেয়। মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায়। মেদিনীপুর স্টেশনের আগে গোটা বিষয়টা জানতে পারে রেল কর্তৃপক্ষ। ট্রেনের শৌচাগারে জন্ম হওয়ায় সদ্যোজাতর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে বুঝতে পারেন চিকিৎসকেরা। জানা যাচ্ছে, তাঁদের মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে রাজি হয়নি ওই পরিবার। তাঁরা দাবি করেন, তাঁরা ওভাবেই বাড়ি ফিরবেন। স্টেশনে উপস্থিত ডাক্তার টি কে ঘোড়াই জানান, শিশুটির শরীরে অক্সিজেনের অভাব ছিল। রেলওয়ের কর্মীরা অনেক বোঝানোর পর প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো সম্ভব হয়।