Sainbari Death : সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের কিনারার দিশা নেই, শহিদ দিবস পালন ঘিরে চলল রাজনৈতিক তরজা
সাঁইবাড়িকাণ্ডে একাধিক তদন্ত কমিশন গঠন হলেও মূল মামলার কিনারা হয়নি। শাস্তিও পায়নি কেউ।
কমলকৃষ্ণ দে, সাঁইবাড়ি (পূর্ব বর্ধমান) : পূর্ব বর্ধমানের (Purba Burdhaman) সাঁইবাড়িতে (Sainbari) শহিদ দিবস পালনের অনুষ্ঠানে কংগ্রেস (Congress) নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল (TMC)। পাল্টা কংগ্রেসের দাবি, সাঁইবাড়ি থেকে ডাক না পাওয়ায়, তারা আলাদা করে শহিদ দিবস পালন করেছে।
১৯৭০ সালের ১৭ মার্চ বর্ধমান পুরসভার তেলমারুই পাড়ায় কংগ্রেসি পরিবার হিসেবে পরিচিত সাঁইবাড়িতে সশস্ত্র হামলা হয়। বাড়িতে ঢুকে দুই ভাই মলয় ও প্রণব সাঁই, ও বাড়ির গৃহশিক্ষক জিতেন্দ্রনাথ রায়কে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা ঘটে। অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই ১৭ মার্চ দিনটি সাঁইবাড়ির শহিদ স্মরণ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এতদিন কংগ্রেস নেতারাও যোগ দিতেন স্মরণ অনুষ্ঠানে।
কিন্তু এবার সাঁইবাড়ির সামনে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে কংগ্রেসের কাউকে দেখা যায়নি। এ নিয়েই কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। পূর্ব বর্ধমানের জেলা তৃণমূল মুখপাত্র প্রসেনজিত্ দাস বলেছেন, 'যেদিন থেকে সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস। মিটিং-মিছিল করছে, সেদিন থেকে আর কংগ্রেস শহিদ দিবসে আসে না। সাঁইবাড়ির ঘটনায় মূল অভিযোগ তো সিপিএমের বিরুদ্ধেই। কংগ্রেসের এই দিনটি পালন করা উচিত ছিল। যা আমরা করছি। যাঁরা সাঁইবাড়ির হত্যাকারীদের সঙ্গে মিছিলে হাঁটে, তাদের দায়বদ্ধতা নেই।'
কংগ্রেসের দাবি, সাঁই বাড়ি থেকে ডাক না পাওয়ায় তারা জেলা কংগ্রেস দফতলে আলাদা করে শহিদ দিবস পালন করেছে। পূর্ব বর্ধমানের যুব কংগ্রেস সভাপতি গৌরব সমাদ্দার বলেছেন, 'গত ৪-৫ বছর ধরে সাঁইবাড়ির পরিবারের তরফে আমন্ত্রণ পাওয়া যায়নি। তাই আমরা জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে স্মরণ করেছি। আসলে ২১ জুলাইয়ের মতো ১৭ মার্চ সাইঁবাড়ি শহিদ দিবসও তৃণমূল হাইজ্যাক করেছে। এখন এ নিয়ে তৃণমূল রাজনীতি করছে।' সাঁইবাড়ির পারিবারিক রাজনীতিতেও এর মধ্যে বদল এসেছে। এখন পরিবারের গৃহবধূ উমা সাঁই বর্ধমান পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর।
৫২ বছর আগের ওই ঘটনায় সাঁই পরিবারের তরফে সিপিএমকে বৃহস্পতিবারও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডে তারাপদ মুখোপাধ্যায় কমিশন গড়ে তদন্ত শুরু করেন। ৫ বছর পর ১৯৭৭ সালে সিপিএম ক্ষমতায় এসে সেই কমিশন বন্ধ করে দেয়। সাঁই পরিবারের অভিযোগ, মুখোপাধ্যায় কমিশন তদন্ত-রিপোর্ট দিলেও বিচার মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অরুণাভ বসুকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিশন গঠন করেন। সেই কমিশনের রিপোর্টও এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। সাঁইবাড়িকাণ্ডে একাধিক তদন্ত কমিশন গঠন হলেও মূল মামলার কিনারা হয়নি। শাস্তিও পায়নি কেউ।