Kunal Ghosh: ‘দিদির দূত’ হয়ে গিয়ে পাঁশকুড়ায় দলীয় সমর্থকের ক্ষোভ শুনলেন কুণাল, শোনালেন আশ্বাসবাণীও
Panchayat Elections 2023: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জনসংযোগ বাড়াতে 'দিদির দূত' এবং 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচি শুরু হল বুধবার থেকে।
বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections 2023) আগে তৃণমূলের তরফে প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে। 'দিদির দূত' (Didir Doot), 'দিদির সুরক্ষা কবচ'-এর মতো একাধিক কর্মসূচি আনা হয়েছে। কিন্তু পাঁশকুড়ায় (Panskura News) 'দিদির দূত' কর্মসূচির প্রথম দিনই ক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূলের (TMC) রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তৃণমূল সমর্থক পরিবারই তাঁকে ঘিরে ধরে ক্ষোভ উগরে দিলেন।
'দিদির দূত' কর্মসূচির প্রথম দিনই ক্ষোভের মুখে পড়লেন কুণাল
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জনসংযোগ বাড়াতে 'দিদির দূত' এবং 'দিদির সুরক্ষা কবচ' কর্মসূচি শুরু হল বুধবার থেকে। এ দিন পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় তার সূচনায় উপস্থিত ছিলেন কুণাল। কিন্তু সেখানে ক্ষোভের মুখে পড়লেন কুণাল। এমনকি তাঁকে দেখে পঞ্চায়েত নির্বাচন বয়কটের ডাকও দিতে শোনা গেল স্থানীয়দের একাংশকে।
বুধবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা এলাকার গোবিন্দনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নেন কুণাল। প্রথমে মন্দিরে পুজো দিয়ে যান পাঁশকুড়া পশ্চিমের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক, প্রয়াত ওমর আলির বাড়িতে। দলীয় রাজ্য নেতৃত্বকে কাছে পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন ওমর আলির ছেলে শেখ মুসলেম আলি। তিনি বলেন, "একটু অন্তর্দ্বন্দ্বটা বন্ধ করুন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বটাকে বন্ধ করতে হবে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যেই কিন্তু যত আজকের সমস্যাটা তৈরি হচ্ছে। আমরা কিন্তু এখনও এক হতে পারিনি। এই দ্বন্দ্বটা আপনারা বন্ধ করুন।"
শুধু তাই নয়, দলে এই মুহূর্তে পুরনো কর্মীরা গুরুত্ব পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন মুসলেম। তিনি বলেন, "আজকে কিন্তু আমরা ব্রাত্য। কোনও মিটিং মিছিলে আমাদের ডাকা হয় না। কোনও দায়িত্ব তো আমরা পাইনি। যাঁরা পুরনো, তাঁদেরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন। পুরনো হাজারো মানুষ বসে রয়েছেন। তাঁরা কিন্তু কোনও সম্মান পাননি।"
আরও পড়ুন: Primary Recruitment: চাকরি দেওয়ার নাম করে ১৯ কোটি টাকা নেন যুব তৃণমূল নেতা! গোয়েন্দাদের জানালেন তাপস
তাতে কুণাল বলেন, "সিনিয়র নেতারা মতামত দিতে পারেন। আমরা গ্রহণও করছি। যাতে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করা যায়, আমরা দেখছি।" তবে সেখানেই থামেনি ক্ষোভ। ধনঞ্জয়পুরে পৌঁছলে, সেখানেও কুণালকে দেখে কাঁচা রাস্তা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে স্থানী. এক বাসিন্দাকে বলতে শোনা যায়, "পাপের ফল তো আমরা ভোগ করছি।" পাল্টা কুণাল বলেন, "রাস্তা তো সারাতে হবে দিনের শেষে!" তাতে ওই ব্যক্তি আরও বলেন, "না হলে স্যর ভোট কিন্তু বয়কট করব!"
এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় নেতৃত্ব পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এলে, তাঁদেরই কার্যত ধমক দেন কুণাল। তিনি বলেন, "আপনি কেন মাঝখানে কথা বলছেন? আমার বাড়ির সামনে যদি হত, আমিও বলতাম। একই কথা বলবে না তো কি, তাহলে আপনি বলুন, একটা ডেট দিন কবে আপনি সারাবেন। তাহলে আপনি ওঁদেরকে, কেন মাঝপথে কথা বলছেন? তাহলে আপনি ডেট দিন কবে সারাবেন?" কুণাল আরও জানান, ওই এলাকা অন্য কেউ চালাত। ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক। বিষয়টি দেখছেন তিনি।
এ নিয়ে যদিও কুণালকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ দাস বলেন, "তৃণমূল দলটি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভরে গিয়েছে। এরা কাটমানি খেতে ব্যস্ত। এতদিন কোথাও কাজ করেনি। আর ওই তিন বছর জেল খাটা আসামি কী করবেন! কে, কত তোলাবাজি করবে, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে।"
কুণালকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি
তবে রাজনৈতিক তরজা চললেও, এর আগে, কুণালের উদ্য়োগেই স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর বিদ্যুৎ এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুরেরই হলদিয়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এ বার কি তবে, ধনঞ্জয়পুরের কাঁচা রাস্তা পাকা হবে? আশায় বুক বাঁধছেন বাসিন্দারা।