Purulia News: TMC চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা দলেরই ৫ কাউন্সিলরের, ফের 'জট' ঝালদায়
Jhalda Municipality: চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন কংগ্রেসের ২ কাউন্সিলরও।
সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: ঝালদায় (Jhalda municipality) আবার অনাস্থার মেঘ! তৃণমূল পরিচালিত ঝালদা পুরসভায় চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন তৃণমূলেরই ৫ কাউন্সিলর! চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন কংগ্রেসের ২ কাউন্সিলরও। চ্যালেঞ্জের মুখে নির্দলের টিকিটে জিতে তৃণমূলে (TMC) যোগ দেওয়া চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায়।
দক্ষিণ ভারতে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে, বাংলার আকাশে দেখা গেছে মেঘের ঘনঘটা। বৃষ্টি হয়েছে, তাপমাত্রাও কমেছে। কিন্তু পুরুলিয়া (Purulia) জেলার ঝালদা পুরসভায় সারা বছরই যেন অনিশ্চয়তার ঝঞ্ঝা। মাত্র ১২ আসনের ঝালদা পুরসভায় আবার দেখা গেল অনাস্থার মেঘ। আর এটা নিয়ে বাড়ছে রাজনীতির উত্তাপ।
তৃণমূল পরিচালিত ঝালদা পুরসভায় চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব (no confidence motion) আনলেন তৃণমূলেরই ৫ কাউন্সিলর। চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন কংগ্রেসের ২ কাউন্সিলরও। শাসক ও বিরোধী, দুই শিবিরের তরফেই অনাস্থার জেরে সরাসরি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গেলেন নির্দলের টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দেওয়া চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায়।
এই বিষয়ে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, 'দলকে নিয়ে বসব। কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামীদিনে কীভাবে পুরবোর্ড চালানো যায়, তার সিদ্ধান্ত নেব।'
অন্যদিকে ঝালদা পুরসভার কংগ্রেস (Congress) কাউন্সিলর বিপ্লব কয়াল বলেন, 'হাইকোর্ট বলেছে, মিউনিসিপ্যালিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী করতে হবে। আমরা দুই কাউন্সিলর অনাস্থা এনেছি। অনাস্থার কপি জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, পুরপ্রধানের দফতরে পাঠানো হয়েছে।'
যাঁকে ঘিরে এত টানাপড়েন, ঝালদা পুরসভার সেই চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। গত পুরভোটে ঝালদার ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস ও তৃণমূল, দু'পক্ষই ৫টি করে আসনে জয়ী হয়। নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হন ২টি আসনে। গত ৬ সেপ্টেম্বর, চেয়ারপার্সন-সহ ঝালদা পুরসভার ৩ কংগ্রেস ও ২ নির্দল কাউন্সিলরকে দলে টেনে কংগ্রেসের পুরবোর্ড ফেলে দেয় তৃণমূল। তা নিয়ে উত্তাল হয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। আর সেই দলবদলের ফলে ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেসের কাউন্সিলর সংখ্যা কমে হয় ২ আর তৃণমূলের আসন সংখ্য়া ৫ থেকে বেড়ে হয় ১০।
তৃণমূল ঝালদা পুরসভা দখলের পরেও টানাপড়েন কমেনি। চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভিযোগ তোলেন তৃণমূল কাউন্সিলরদেরই একাংশ। ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সনের অপসারণ চেয়ে জোড়া মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। একটি মামলা দায়ের করেছিলেন ৫ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। আরেকটি মামলা দায়ের করেছিলেন নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু-সহ দুই কংগ্রেস কাউন্সিলর।
শীলা চট্টোপাধ্যায় ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সন পদে থাকতে পারবেন বলে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট (High Court)। সেই মেয়াদ ফুরোতেই ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে, আস্থা ভোট করানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। তা খারিজ করে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়,পদ্ধতি মেনে সরাতে হবে পুর চেয়ারপার্সনকে। পুর আইন অনুযায়ী, চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন মহকুমা শাসক। পুরসভায় ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। তার মধ্যেই এমন ঘটনায় ফের তৈরি হল অনাস্থা জট।
আরও পড়ুন: পাহাড়ের সঙ্গে 'ব্লাড রিলেশন', উপহার দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, কী কী রইল তাতে?