RG Kar Hospital Corruption: চিকিৎসা-বর্জ্য বাংলাদেশে পাচার, টেন্ডারে ২০ শতাংশ কমিশন? একবছর আগেই সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, RG কর নিয়ে এতদিনে FIR
Akhtar Ali: আজ আখতারকে স্বাস্থ্যভবনে ডেকে পাঠানো হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যভবনেই রয়েছেন তিনি।
কলকাতা: আর কি কর কাণ্ডে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিবিআই। সেই আবহেই সন্দীপের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল পুলিশ। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি দমন মামলায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন আর জি করের তদানীন্তন ডেপুটি সুপার এবং অধুনা বহরম মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার আখতার আলি। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় যখন তোলপাড়, সেই আবহে, একবছর আগের সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হল। আজ আখতারকে স্বাস্থ্যভবনে ডেকে পাঠানো হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যভবনেই রয়েছেন তিনি। (RG Kar Hospital Corruption)
আর জি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার বলেন, "আমি ওঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে, বায়োমেডিক্যাল ওয়েস্ট, ইল্লিগাল ট্রাফিকিং, বিরুদ্ধে, ছাত্রদের ফেল করানো থেকে গেস্ট হাউসে ছাত্রদের মদ্যপান করা, টেন্ডারের ২০ শতাংশ কমিশন খাওয়া, নিজের লোকেদের টেন্ডার ছাড়াই বরাত দেওয়া এবং ক্যান্টিন, স্টল, সুলভ শৌচালয়ের মতো সরকারি সম্পত্তিগুলিকে বেআইনি ভাবে টাকার বিনিময়ে অন্যের হাতে তুলে দেওয়া নিয়ে দুর্নীতি বিরোধী ব্যুরো, ভিজিল্যান্স কমিশন এবং স্বাস্থ্যভবনকেও জানিয়েছিলেন। এটা নিয়ে ওঁর সঙ্গে মুখোমুখিও যুদ্ধ বাধে, সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে গিয়েও অভিযোগ জানিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে প্রথম বার অভিযোগ জমা দিই।" (Akhtar Ali)
আখতার জানিয়েছেন, ব্যবহার হয়ে যাওয়া সিরিঞ্জ, স্যালাইনের বোতল, রবার গ্লাভস, হ্যান্ড গ্লাভস, একদিন অন্তর ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি মাল বেরোত। এগুলো নিয়ে গিয়ে ব়্যাকেট চলছিল, যুক্ত ছিলেন দুই বাংলাদেশি নাগরিক, রাজু এবং পাঁচু। তাঁরা বাংলাদেশে সেগুলি রিসাইকেল করতেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়। আমি নিজেও তদন্ত কমিটির সদস্য ছিলাম। রিপোর্ট জমা দিলাম। সেই দিনই আমি বদলি হয়ে গেলাম। বদলে হয়ে গেলেন অন্য দু'জনও। পরে কমিটি ভেঙে দিয়ে রিপোর্টটি চাপা দিয়ে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর-সহ বিভিন্ন দফতরে এই ভয়ঙ্কর অভিযোগ জমা পড়লেও, কেন এতদিন সন্দীপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হল না, উঠছে প্রশ্ন। এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। দুর্নীতি দমন বিভাগ তদন্তের নির্দেশ দিলেও, কেন স্বাস্থ্যভবনে দুর্নীতির ফাইলটি এতদিন চাপা পড়ে রইল, উঠছে প্রশ্ন।
সন্দীপ-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন আখতার। সেই নিয়ে তৎক্ষণাৎ কোনও পদক্ষেপ হয়নি। তরুণী চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় যখন উত্তাল পরিস্থিতি, এতদিন পর সেই নিয়ে সক্রিয় হল পুলিশ। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ সচিবও সোমবার টালা থানার এফআইআর দায়ের করেন। সন্দীপ-জমানায় আর জি করে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে। ইতিমধ্যেই আর জি করে দুর্নীতি নিয়ে চার সদস্যের বিশেষ তদন্ত কমিটি (SIT) গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য, ২০২১ থেকে এখনে পর্যন্ত যে দুর্নীতি হয়েছে, তা নিয়ে তদন্তের জন্য।
এক মাসের মধ্যে সেই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্দীপে বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা ও দুর্নীতি দমন আইনে মামলা রুজু করেছে টালা থানা। একদিন আগে টালা থানায় আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ দায়ের করেন স্বাস্থ্য দফতরের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারি। সেই প্রেক্ষিতেই মামলা দায়ের হয়েছে। SIT আখতারের অভিযোগ নিয়েও তদন্ত করবে। সেই কারণেই আখতারকে ডেকে পাঠানো হয় এবং আগামী দিনে তাঁর কাছ থেকে প্রমাণ চাওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।