RG Kar Lady Doctor's Murder: অভিযোগ তোলায় বদলি? তবু থামাননি লড়াই; আদালতের নির্দেশিকায় 'জয়ের হাসি' আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপারের
Sadip Ghosh Corruption Allegation: এই আখতার আলি আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার। যিনি সদ্য় প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরব।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা : আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির অভিযোগের ভিত্তিতেই সেখানকার দুর্নীতির মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। দুর্নীতির এই অভিযোগ অবশ্য় নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই তা নিয়ে সরব আখতার আলি। অভিযোগ তোলার পর তাঁকে আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজ থেকে বদলিও করা হয়। তবে লড়াই থামাননি তিনি। শেষমেশ আদালতে মিলল জয়।
মোক্ষম সময়ে তাঁর আক্রমণাত্মক সার্ভ এবং ভলি দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনতেন ভারতীয় টেনিসের কিংবদন্তী আখতার আলি। এবার কার্যত সেরকমভাবেই মোক্ষম সময়ে আরজি কর হাসপাতালের দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আরেক আখতার আলি। আর এই মামলাতেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল আদালত।
এই আখতার আলি আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার। যিনি সদ্য় প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরব। তা রুখতে বারবার অভিযোগ জানিয়েছেন। তার খেসারতও দিতে হয়েছে। কিন্তু, লড়াই থামাননি।
আখতার আলি যখন আরজি কর মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ছিলেন তখন অধ্য়ক্ষের চেয়ারে সন্দীপ ঘোষ। এই সময়ে RG কর মেডিক্য়াল কলেজের নানা দুর্নীতি নিয়ে সরব হতে শুরু করেন আখতার আলি। অভিযোগ তোলেন সরাসরি তৎকালীন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। আখতার আলি বলেন, "ওঁর বিরুদ্ধে অনেকগুলো দুর্নীতি ছিল। এছাড়া সবথেকে যেটা বাজে জিনিস ছিল, একটা মেডিক্য়াল কলেজে বায়ো মেডিক্য়াল বর্জ্য় ট্রাফিকিং, বেআইনি ট্রাফিকিং হত। ওঁর সময় যেটা ছিল, টাকা তোলা, তোলাবাজিগুলো উনি করতেন। ২০% কমিশন খাওয়া... ওঁর সময়ে অভিযোগ ছিল। যেগুলো আমি প্রতিবাদ করেছিলাম। ওঁর সঙ্গে আমার একটা যুদ্ধ লেগেছিল। প্রায় আমাকে ৮-৯ মাস লড়তে হয়েছে। আমি ২ মাস বেতন ছাড়া ছিলাম। এখনও আমার সার্ভিস রেগুলারাইজ হয়নি।"
এই অভিযোগ নিয়ে... রাজ্য় পুলিশের অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো, টালা থানা থেকে ভিজিল্য়ান্স কমিশন, স্বাস্থ্য ভবন, মুখ্যমন্ত্রীর অফিস অবধি গেছিলেন তিনি। আখতার আলির অভিযোগের ভিত্তিতেই বায়ো মেডিকেল বর্জ্য বেআইনিভাবে বিক্রির অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য দফতর। গতবছরের ১৭ মার্চ তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয় কমিটি। এই তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রাখা হয়েছিল আখতার আলিকেও।কিন্তু, তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়ার ৩ দিনের মাথায় আচমকা বদলি করে দেওয়া হয় তাঁকেই।
আখতার আলি বলেন, "তদন্ত হয়েছিল, আমিও তদন্তের একজন সদস্য ছিলাম। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আমি জমা দিলাম। তারপর সেদিনই আমার বদলি হয়ে গেল। আরও ২ জন যে আমরা সদস্য ছিলাম, আমাদের দু'জনকেও বদলি করে দিল। পরদিন নাকি MSVP এই কমিটিকে পুরো ভেঙে দিয়ে এই রিপোর্টটাকে একদম চেপে দিলেন।"
বিষয়টা এখানেই শেষ হয়নি। আর জি কর হাসপাতাল থেকে বদলির দু'মাস পরে, আখতার আলির বিরুদ্ধেই টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে, শোকজ করেন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আরও দু'মাস পর অধ্যক্ষ অর্থাৎ সন্দীপ ঘোষের নির্দেশেই আখতার আলির বিরুদ্ধে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়। অথচ, আখতার আলি তখন আর জি কর হাসপাতালের কেউ নন ! তিনি তখন কর্মরত হেলথ রিকরুটমেন্ট বোর্ডে !তবে এসবের পরও লড়াই থামাননি আখতার। আর জি কর মেডিক্য়ালে ধর্ষণ, খুনের পর সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে পুরনো অভিযোগ ফের সামনে আসতে শুরু করে। এসব অভিযোগকে হাতিয়ার করেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আখতার আলি। তার প্রেক্ষিতেই শুক্রবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ।