Siliguri : কমিউনিটি হল ভাড়া করে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস, দরিদ্র পরিবারের ছাত্রদের জন্য উদ্যোগ শিলিগুড়ির স্কুলে
Siliguri school : কমিউনিটি হলে কীভাবে ক্লাস হচ্ছে, তা দেখতে শনিবার এসেছিলেন জেলা স্কুল পরিদর্শক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান। এসেছিলেন শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকাও...
সনৎ ঝা, দার্জিলিং : করোনা আবহে স্কুল খুললেও, চালু হয়নি নিচু তলার ক্লাস। তবে শিলিগুড়িতে ধরা পড়ল অন্য ছবি। কমিউনিটি হল ভাড়া করে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস নিচ্ছেন স্কুল শিক্ষকরা। এই ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরও।
খুদে পড়ুয়া থেকে শিক্ষিকারা - সবাই হাজির। মোবাইল বা কম্পিউটারের সামনে বসে নয়, ক্লাস চলছে সশরীরে। কিন্তু করোনা আবহে সরকারি নির্দেশিকা মেনে স্কুল তো খুলেছে শুধু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির। তাহলে, এই খুদে পড়ুয়ারা ক্লাস করছে কী করে?
কৌতূহল নিয়ে হাজির হতেই উত্তর মিলল, এরা সবাই ক্লাস ফোর। স্কুল না খোলায়, কমিউনিটি হল ভাড়া নিয়ে চলছে ক্লাস। এই ছবি শিলিগুড়ির নেতাজি GSFP স্কুলের। কিন্তু শুধুমাত্র ক্লাস ফোরের জন্য কেন এই উদ্যোগ?
শিলিগুড়ির নেতাজি জি এস এফ পি স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, এই করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনে ক্লাস করা সমস্যা হচ্ছিল। ক্লাস ফোরের বাচ্চারা ক্লাস ফাইভে অন্য স্কুলে চলে যাবে। এই পরীক্ষা খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এরা এত দরিদ্র, আলাদা টিউশন করার সামর্থ্য নেই। এই কারণে উদ্যোগ। স্কুল তো খোলেনি, এটা যদি অন্যায় হয় আমি এই অন্যায় শিশুদের জন্য করতে রাজি আছি।
নেতাজি GSFP স্কুলে, চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া সংখ্যা ১৯৭। তাদের ৬টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। সপ্তাহে তিন দিন সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ক্লাস হচ্ছে। প্রথম দিন পড়ুয়াদের তিনটি গ্রুপ আসছে। দ্বিতীয় দিন বাকি তিনটি গ্রুপ। তৃতীয় দিন আবার প্রথম তিনটি গ্রুপের পড়ুয়ারা ক্লাস করছে।
কমিউনিটি হলে কীভাবে ক্লাস হচ্ছে, তা দেখতে শনিবার এসেছিলেন জেলা স্কুল পরিদর্শক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান। এসেছিলেন শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকাও।
স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা। দার্জিলিং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান দিলীপ রায় বলেন, স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্রদের প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেছে। সরকার বলেছে স্কুল খুলবে, কিন্তু এটা বিরল ঘটনা।
শিলিগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অত্যুহা বাগচী বলেন, আমি দেখে অভিভূত, আমরা সরকারি নিয়মের দোহাই দিয়ে অনেক কিছু করি না। অথচ শিক্ষাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা, এটা অভিনব।
স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে খুশি অভিভাবকরাও। অভিভাবক শ্যামল মল্লিক বলেন, স্কুল বন্ধ, ছেলেমেয়েদের জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই উদ্যোগে হাফ ছেড়ে বেঁচেছি।
করোনা আবহে মাস্ক পরেই ক্লাস করছে পড়ুয়ারা। তবে অভিভাবকদের একাংশ বলছে, বেঞ্চে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার দিকে নজর দিলেই নিরাপদ থাকবে তাঁদের সন্তান।