South 24 Paraganas: থামছে না ভাঙন, অস্তিত্ব সঙ্কটে গঙ্গাসাগরের কপিলমুনি মন্দির
South 24 Paraganas: গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে, সমুদ্রের ধাক্কায় ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে ঢালাই করা রাস্তা। বর্ষার মরসুমে এখন উত্তাল সমুদ্র ক্রমেই মন্দিরের দিকে এগিয়ে আসছে।
জয়দীপ হালদার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা: এটা শুধু কথায় নয়, মকর সংক্রান্তিতে পুণ্যার্থীদের ঢলই বুঝিয়ে দেয়, 'সব তীর্থ বারবার' হলেও, 'গঙ্গাসাগর একবারই'। ওইদিন পুণ্যস্নানের পাশাপাশি, কপিলমুনির মন্দিরে পুজো দিতেও ঢল নামে লক্ষ লক্ষ মানুষের।
কিন্তু সম্প্রতি বিখ্যাত এই মন্দির নিয়ে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রশাসনের কপালে। আর তার কারণ হচ্ছে সমুদ্রের ভাঙন। গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে, সমুদ্রের ধাক্কায় ভেঙে চৌচির হয়ে গেছে ঢালাই করা রাস্তা। সেইসঙ্গে অবিরাম ভেঙে চলেছে নদীর পাড়। বর্ষার মরসুমে এখন উত্তাল সমুদ্র। আর এই মুহূর্তে ভাঙন প্রতিরোধের অস্ত্র বলতে হাতে গোনা এই শালখুঁটিগুলি। ফলে ক্রমেই মন্দিরের দিকে এগিয়ে আসছে সমুদ্র। সম্প্রতি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এলাকা পরিদর্শন করেন জেলাশাসক।
একদিকে ভাঙন আটকানো, অন্যদিকে মন্দির রক্ষার চিন্তা। গোটা পরিস্থিতি সামাল দেওয়াই এখন প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথনের কথায়, 'ঘূর্ণিঝড় আমফান ও ইয়াসের কারণে এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই সাগর বেলাভূমির মাটি তলদেশ থেকে সরতে শুরু করেছে ৷ এটাই প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে । কেন্দ্রের কাছ থেকে CRZ ছাড়পত্র এসে গেলে তা পরিবেশ দফতরে পাঠানো হবে। তার পরে অর্থ মঞ্জুর হয়ে গেলে কাজ শুরু করতে দেরি হবে না।'
২০১৯ সালে সাগরের ভাঙন ঠেকাতে তৎপর হয় রাজ্য সরকার। ভাঙনপ্রবণ প্রায় এক কিলোমিটার উপকূলে নারকেল গাছ লাগানো হয়। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের জেরে তার অনেকগুলিই উপড়ে পড়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের মতো সাগরেও মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছে।
সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, 'গঙ্গাসাগরের মন্দিরকে রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার ৷ ইতিমধ্যেই মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়েছে। প্রশাসনিক অনুমোদন-সহ সবই প্রস্তুত। রাজ্যের পরিবেশ দফতর প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দিয়েছে। কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেলেই কাজ শুরু হবে।'
ইতিহাস বলছে, আনুমানিক ৪৩০ খ্রীষ্টাব্দে রানি সত্যভামা প্রথম কপিলমুনির মন্দির তৈরি করেন। সেই মন্দির ইতিমধ্যেই সমুদ্র গর্ভে চলে গেছে। এভাবেই ৬টি মন্দির চলে গিয়েছে সাগরের জলে। বর্তমান মন্দিরটি তৈরি হয় ১৯৭০ সালে। এই মন্দিরটিকেও রক্ষা করা যাবে তো? সাগর মাস্টার প্ল্যান কবে বাস্তবায়িত হবে? ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে কপিলমুনির মন্দিরের ভবিষ্যৎ নিয়ে মাথাচাড়া দিয়েছে অনেক প্রশ্নই।