South Dinajpur News: শরীরে ১৮টি সেলাই পড়েছে, হাসপাতালের বিছানায় বসেই পরীক্ষা দিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী
ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পড়েছে ১৮টি সেলাই। হাতে স্যালাইন নিয়েই হাসপাতালের বিছানায় বসে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল কুমারগঞ্জ থানার গোপালগঞ্জ আর এল স্কুলের ছাত্র শান্ত দাস।
মুন্না অগ্রবাল, দক্ষিণ দিনাজপুর: মনের জোর আর ইচ্ছাশক্তির উপর নির্ভর করলে কত কিই না সম্ভব। গতকালই মায়ের সঙ্গে প্রতিবেশীর ঝামেলায় মা-কে বাঁচাতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। পড়েছে ১৮টি সেলাই। হাতে স্যালাইন নিয়েই হাসপাতালের বিছানায় বসে মাধ্যমিক পরীক্ষা (Madhyamik Exam 2022) দিল কুমারগঞ্জ থানার গোপালগঞ্জ আর এল স্কুলের ছাত্র শান্ত দাস।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শান্ত দাসের পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, গতকাল বিকেলে বাড়ির বাইরে ছিলেন শান্ত দাসের বাবা ফনি দাস। সেই সময় পাশের বাড়িতে তাঁদের ছাগল বেঁধে রাখাকে কেন্দ্র করে প্রতিবেশীর সঙ্গে বচসা শুরু হয় তার মায়ের। বচসা চলতে চলতেই আচমকা প্রতিবেশীরা তেড়ে আসে ওই ছাত্রের মায়ের দিকে। তাদের হাতে ছিল ধারাল অস্ত্র। প্রতিবেশীদের আক্রমণের হাত থেকে মাকে বাঁচাতে দৌড়ে সেখানে চলে যায় শান্ত দাস। কিন্তু প্রতিবেশীরা তাদের উপর ধারাল অস্ত্রের একের পর এক কোপ মারতে থাকে। প্রতিবেশীদের এলোপাথারি ধারাল অস্ত্রের কোপে গুরুতরভাবে জখম হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শান্ত।
আরও পড়ুন - Balurghat Dibas: ব্রিটিশ পতাকা নামিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনকে স্মরণ, আবেগে-উৎসাহে পালিত ঐতিহাসিক বালুরঘাট দিবস
জানা গিয়েছে, খবর পাওয়া মাত্র বাড়িতে আসেন শান্ত দাসের বাবা ফনি বাবু। গুরুতর জখম অবস্থায় শান্তকে ভর্তি করা হয় বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানেই তার শরীরে ১৮টি সেলাই পড়ে। প্রতিবেশীদের আক্রমণে তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। তার সঙ্গে আঘাত লাগে ডান হাতের উপরে ও আঙুলে। পরের দিনই অঙ্ক পরীক্ষা। কিন্তু শরীরে এত ক্ষত এবং আঘাত। কীভাবে পরীক্ষা দেবে শান্ত? জানা যাচ্ছে, কলম ঠিকমতো ধরতে না পারলেও হাল ছেড়ে দেয়নি মেধাবি ওই ছাত্র। হাসপাতালের বিছানাতে বসেই এক হাতে স্যালাইন নিয়ে অন্য হাত দিয়ে অঙ্ক পরীক্ষা দিল সে।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শান্ত দাসের পরিবারের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, সে মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় ৪০১ নম্বর পেয়েছিল। ফনি বাবু জানাচ্ছেন, তাঁর দুই সন্তান। বড় ছেলে বর্তমানে ব্যাঙ্গালোরে নার্সিং ট্রেনিং ফার্স্ট ইয়ার পড়াশোনা করছে। আর ছোট ছেলে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। শান্ত দাসের মনের জোরকে কুর্ণিশ জানাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিতসক থেকে শিক্ষকরা।