Suvendu Adhikari: ‘সিজারের স্ত্রী আইনের ঊর্ধ্বে, কার্তিকের নয়’, আরও মারাত্মক অভিযোগ শুভেন্দুর
Kartik Banerjee: রবিবার ট্যুইটারে এই মারাত্মক অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। তাতে স্ট্যাম্প পেপারের নথি-সহ একটি হিসেব তুলে ধরেছেন তিনি।
কলকাতা: রাশি রাশি টাকা উদ্ধারের ঘটনায় সরাসরি কালীঘাটের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন। তৃণমূল (TMC) নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kartik Banerjee) সঙ্গে অভিযুক্ত মনজিৎ সিংহ গ্রেওয়ালের ছবি তুলে ধরেছিলেন সমাজমাধ্যমে। এ বার আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা (BJP) শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কার্তিকের স্ত্রী কাজরী বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং মনজিতের যৌথ সম্পত্তি রয়েছে বলে দাবি করলেন।
রবিবার ট্যুইটারে এই মারাত্মক অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। তাতে স্ট্যাম্প পেপারের নথি-সহ একটি হিসেব তুলে ধরেছেন তিনি। তাতে বলা হয়েছে, ২০৪ নম্বর হরিশ মুখার্জি রোডে ১ কোটি ৮৯ লক্ষ ৩০ হাজার ১ টাকা মূল্যের একটি সম্পত্তির মালিক হিসেবে নাম উল্লেখ রয়েছে কাজরী এবং মনজিতের। আলিপুর আদালতে ২০১০ সালের অগাস্ট মেসে সেটির দলিল তৈরি হয় বলে লেখা রয়েছে। কেনা হয়েছিল নাকি মায়া সেন, ইন্দ্রজিৎ সেন এবং শুভ্রা মিত্রের কাছ থেকে!
১৩৫-এ হরিশ মুখার্জি রোডের আরও একটি সম্পত্তির মূল্য ১৯ লক্ষ ৬০ হাজার ৩ টাকা দেখানো হয়েছে। তাতে মালিকানার জায়গায় কাজরী এবং দলজিৎ কৌর বলে কারও নাম উল্লেখ রয়েছে। জনৈক তন্ময় সরকারের কাছ থেকে নাকি সেটি কেনা হয়!
আবার ১৭, টার্ফ রোডে ১৫ লক্ষ ৫৯ হাজার ৮২৫ টাকার একটি সম্পত্তি দেখানো হয়েছে। কাজরী, মনজিতের পাশাপাশি তাতে অমরজিৎ সিংহ বলে মোট তিন জনের নাম উল্লেখ রয়েছে মালিকানার জায়গায়। কেনা হয়েছিল ২০১৬ সালের অগাস্ট মাসে। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে মহম্মদ রফি এবং খান্ডকার ওলিউল ইসলামের কাছ থেকে কেনা হয়েছিল বলে রয়েছে উল্লেখ। তবে শুভেন্দুর দেওয়া নথির সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।
ওই নথি পোস্ট করে উইলিয়াম শেক্সপিয়রের লেখা 'জুলিয়াস সিজার' নাটকের উল্লেখ করেন। লেখেন, 'সিজারের স্ত্রী সন্দেহের ঊর্ধ্বে থাকবেন। কিন্তু কার্তিকের স্ত্রীকে যাবতীয় দায় থেকে মুক্ত করা হয়েছে। তিনি সম্রাজ্ঞীর আত্মীয় তথা তোলামুলের কাউন্সিলর বলেই কি দায় থেকে মুক্তি? কে জানি না থেকে হিন্দি সেলের নেতা, শুধুই পরিচিত, পুরনো বন্ধু থেকে ব্যবসায় সহযোগী, অপরাধের সহযোগী'।
‘Caesar’s wife must be Above Suspicion’ but Kartik's wife must be granted impunity !
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 12, 2023
Because she's Her Majesty's relative or Tolamul Councillor?
From "don't know who" to "Hindi Cell Leader" to "just acquaintance" to "old friends" to "business associate" to "partners in crime"? pic.twitter.com/UJ9NedK4bO
আরও পড়ুন: Shantanu Thakur: হাত ছোঁয়ালেই উঠে আসছে পিচের আস্তরণ, নিজের কেন্দ্রে গণরোষে শান্তনু, ভোট বয়কটের ডাকও
কালীঘাটের 'পিসি-ভাইপো' সকলেই একই ধাঁধার অংশ বলেও আক্রমণ শানান শুভেন্দু। তিনি লেখেন, 'কালীঘাটের কাকু, পিসি, ভাইপো, কাকিমা, বৌমা, শ্যালিকা, সকলে একই ধাঁধার অংশ। সংগঠিত ভাবে কেউ অপরাধী নন, কিন্তু মসৃণ ভাবে কাজ চালানোয় জড়িত প্রত্যেকে। যত ইচ্ছে কয়লাপাচার করুন, তা আপনাদের ভবিষ্যতের মতো কুচকুচে কালোই থাকবে'।
বালিগঞ্জের একটি অফিসে তল্লাশি চালিয়ে সম্প্রতি ইডি প্রায় দেড় কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করে। সেটি নির্মাণকারী সংস্থা গজরাজ গ্রুপের ডিরেক্টর বিক্রম সাকারিয়ার অফিস বলে জানা যায়। বিজেপি-র অভিযোগ, যে বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে, তার মালিক মনজিৎ সিংহ গ্রেওয়াল। ইডি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এক মন্ত্রীর হয়ে বেআইনি টাকার লেনদেনেও যুক্ত ছিলেন বিক্রম। আর ব্যবসায়ী মনজিতের মাধ্যমে কয়লা পাচারের চেষ্টা করছিলেন এক প্রভাবশালী রাজনীতিক।
Kalighater Kaku, Pishi, Vaipo, Kakima, Bouma, Shyalika; all are pieces of the same puzzle.
— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) February 12, 2023
No one is Guilty by Association, everyone is associated for smooth operation.
Launder Coal as much as you like, but it will still be pitch dark black. Just like your future... pic.twitter.com/ckiHrxQGxI
এর পরই মনজিতের সঙ্গে মমতা এবং কার্তিকের ছবি ট্যুইটারে পোস্ট করেন শুভেন্দু, যার মধ্যে একটিতে গুরুদ্বারে মমতার পাশে থাকা কয়েক জনের মধ্যে দেখা যায় মনজিৎকে। অন্যটিতে, পাড়ার সমাবেশে কার্তিককে ঘিরে থাকা লোকজনের মধ্য়ে ছিলেন। সেই নিয়ে বিতর্কের মধ্যে চাঁচাছোলা ভাষায় শুভেন্দুকে আক্রমণ করেন কার্তিক। জানান, যে বাড়ি থেকে টাকা মিলেছে, সেটি মনজিতের বাড়ি নয়। মনজিতের বাড়িতে টাকা পাওয়া যায়নি। ছবি প্রসঙ্গে বলেন, "রাজনীতিতে সবার সঙ্গেই সবার যোগাযোগ হয়। মুখ্যমন্ত্রী গুরুদ্বারের সব অনুষ্ঠানে যান। সেখানে কে থাকল, কে থাকল না বড় কথা নয়। এই শুভেন্দু যে বলছে, ও তো আমার সঙ্গে মনজিতের দোকানে খেয়েছে! এলেই বলত, মনজিতের দোকানে খাব। মনজিৎ যদি অসৎ হন, তাহলে কেন বলত! আজ দু'দিনের মধ্যে মনজিৎ অসৎ হয়ে গেলেন!"
এর পরই ফোন বের করে একমঞ্চে মনজিতের সঙ্গে শুভেন্দুর ছবি এবিপি আনন্দের ক্যামেরায় তুলে ধরেন কার্তিক। তাতে মনজিৎ, শুভেন্দু ছাড়াও কার্তিক, তাঁর স্ত্রী এবং বৌদি কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা যায়। কার্তিক বলেন, "ছবি আছে, দেখুন...আমি আছি, আমার স্ত্রী আছেন, কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন, মনজিৎ রয়েছেন, শুভেন্দুও রয়েছেন। হোটেলে গিয়ে খেতাম। আজ হঠাৎ চোর হয়ে গেল! কোথাকার কয়লা, গরু...গরু তো ওরা মালদা থেকে শুরু করে! বিজেপি নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখুক! বিজেপি-র কিছু কর্মী রয়েছেন, দেশের জন্য কাজ করতে চান যাঁরা। কিন্তু এরা নোংরামি করতে গিয়ে বেশিই নোংরামি করে ফেলছে। এতে বিজেপি-রই না ক্ষতি হয়ে যায়!" কিন্ত এ দিন ফের দুর্নীতির প্রমাণ বলে দাবি করে কার্তিকের স্ত্রী কাজরীর বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুললেন শুভেন্দু।