Swasthasathi Scheme:দুর্নীতি ও অনিয়ম রুখতে নির্দেশিকা, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আরও কড়া রাজ্য সরকার
West Bengal News: ইতিমধ্যে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
কলকাতা: স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বেনিয়ম রুখতে ক্রমশ কড়া হচ্ছে রাজ্য সরকার। বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা করলে সরকারি ডাক্তারদের এবার হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্যভবন। বলা হয়েছে, হলফনামায় জানাতে হবে, তাঁরা নন প্র্যাকটিসিং অ্যালাউন্স নিচ্ছেন না। এরপর কোনও বিচ্যূতি হলে কড়া পদক্ষেপ নেবে স্বাস্থ্যভবন। পাশাপাশি সূত্রের খবর, একজন চিকিৎসক সর্বাধিক কতগুলি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, তারওপরও নিয়ন্ত্রণ আনার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।
বেনিয়ম রুখতে কড়া : রোগী ভর্তির পরই তার ছবি, ভিডিও পাঠানো, রোগী যেখানে আছেন, সেখানকার GPS লোকেশন নির্দিষ্ট সার্ভারে আপলোড; পাশাপাশি বেনিয়ম ঠেকাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI-এর সাহায্য নেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়ম রুখতে সম্প্রতি একের পর কড়া পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল সরকারি ডাক্তারদের 'নন প্র্যাক্টিসিং অ্যালাউন্স' না নেওয়ার হলফনামা জমা। ইতিমধ্যে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার তরফে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী পোর্টালে যেসব সরকারি ডাক্তারের নাম নথিভুক্ত রয়েছে, তাঁদের একটি নির্দিষ্ট ফর্ম ফিলআপ করে পোর্টালে আপলোড করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ২ মাসের মধ্যে এই হলফনামা জমা দিয়ে দিতে হবে চিকিৎসকদের। কী রয়েছে সেই বিশেষ ফর্মে? সরকারি চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে তাঁদের, হলফনামা দিতে হবে যে, তাঁরা সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু সরকারের থেকে 'নন প্র্যাক্টিসিং অ্যালাওয়েন্স' নিচ্ছেন না। চিকিৎসকমহলের মতে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা করা জন্য সরকারি চিকিৎসকদের এই ধরনের হলফনামা দেওয়ার নিয়ম অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে নতুন করে আবার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে এই হলফনামা চাওয়ার কারণ কী? জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্সের সদস্য সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, "এই নিয়ম তো আগেই ছিল। সরকার এতদিন নানা বেনিয়মকে অ্যালাও করেছে। শাসক ঘনিষ্ঠ যারা বেলাগাম বেনিয়ম করেছে। তাতে সরকারের মদত ছিল। এখন তাদের মনে হয়েছে চিকিৎসরা তাদের কথা শুনছেন না। তাই ফের সেই এক নিয়ম সামনে নিয়ে আসছে।''
এখানেই অনেকের মনে পড়ে যাচ্ছে, মাস দু'য়েক আগে, আর জি কর-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী ও আন্দোলনকারীদের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা চাঞ্চল্যকর অভিযোগের প্রসঙ্গ। সেই কারণেই কি এবার সেদিকে কড়া হতে চাইছে স্বাস্থ্যভবন? যদিও চিকিৎসকমহলের একাংশের দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছে প্রতিহিংসাপরায়ণতা।অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভির্স ডক্টরসের সাধারণ সম্পাদক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "যারা সরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন, তারা নন প্র্যাকটিসিং অ্যালাউন্ট ছেড়ে দিয়েই তা করে। এই সময় হঠাৎ করে এই বিষয়টা এল কেন? যারা আন্দোলন করেছেন বা প্রতিবাদের মুখ হিসেবে ছিলেন, এরকম কাউকে চিহ্নিত করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য।''
এখানেই শেষ নয়। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, একজন চিকিৎসক সর্বাধিক কতগুলি বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, সেই সংখ্যাতেও আগামীদিনে নিয়ন্ত্রণ আনার চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য সরকার। যদিও স্বাস্থ্যভবনের নতুন এই বিজ্ঞপ্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন চিকিৎসকদের অপর একটি অংশ। চিকিৎসক কৌশিক বিশ্বাস বলেন, "স্বাস্থ্যসাথী একটি জনপ্রিয় স্কিম। এটা যাতে সূচারিভাবে হয় তার জন্য এই নজরদারিটা জরুরি। তাই এই নতুন নিয়ম। যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওই ডিকলারেশন দেবেন ওই প্রতিষ্ঠানেও সেটা টাঙিয়ে রাখতে হবে যে কোন চিকিৎসক সরকারি, কে বেসরকারি।''
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।