Recruitment Corruption: তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা? ২ দিন পর পরই নতুন নতুন নাম বলছেন কুন্তল
এই টাকা শেষমেশ পৌঁছেছিল কার কাছে? ইডির অনুমান, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ।
কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Corruption) নিয়ে এবিপি আনন্দর অন্তর্তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্য়কর তথ্য়। দফায় দফায় ৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন কুন্তল ঘোষকে (Kuntal Ghosh)। কিন্তু চাকরি তো মেলেইনি, উল্টে একটা টাকাও ফেরত পাননি। ইডি-র (Enforcement Directorate) হাতে ধৃত যুব তৃণমূল (TMC) নেতা সম্পর্কে, এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বলাগড়ের বাসিন্দা পিয়ালি চৌধুরী। বাংলায় MA করার পর, ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ বলে নিজেকে দাবি করেছেন তিনি। অন্যদিকে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন আরও এক চাকরিপ্রার্থীর বাবা। স্কুলে চাকরি পাইয়ে দিতে ৮ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন কুন্তল ঘোষ। তার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। চাকরি না মেলায়, আড়াই লক্ষ টাকা ফেরত দিলেও, বাউন্স করে ২ লক্ষ টাকার চেক। ধৃত যুব তৃণমূল নেতার সম্পর্কে এবিপি আনন্দের কাছে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন এক প্রতারিত চাকরিপ্রার্থীর বাবা।
জেরার মুখে কী দাবি কুন্তলের? নিয়োগ দুর্নীতিতে কোটি কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য় উঠে আসছে ইডির তদন্তে। কিন্তু এই টাকা শেষমেশ পৌঁছেছিল কার কাছে? ইডির অনুমান, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন হুগলির যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। তিনি গোপাল দলপতিকে কোটি কোটি টাকা দিতেন! আর সেই টাকা OSD মারফৎ পৌঁছে যেত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে! ED সূত্রে দাবি, শুক্রবার জেরার মুখে এমনই দাবি করেছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক কুন্তল ঘোষ।
তদন্ত ঘোরানোর চেষ্টা? প্রথম জন SSC দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন। তবে কি তদন্তের নজর ঘোরাতে বারবার জেলবন্দিদের টেনে আনছেন যুব তৃণমূল নেতা? ২ দিন পর পরই নতুন নতুন নাম বলছেন, যাতে তদন্ত প্রক্রিয়া ঘুরে যায়? ইচ্ছাকৃত এমন দু'জনকে বেছে নিয়েছেন, যাঁরা এখন জেলে! প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বিশেষ কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছেন ধৃত যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক?
ইডি সূত্রে দাবি, সম্প্রতি জেরার মুখে বারবার দুটো নাম করছেন কুন্তল। এক পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, দুই গোপাল দলপতি। অত্য়ন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ বিষয় হল, যে দু-জনের নাম কৌশলে বারবার টাকা লেনদেনে তুলে ধরতে চাইছেন ধৃত যুব তৃণমূলের রাজ্য় সম্পাদক, তাঁরা দুজনেই কিন্তু অনেক আগে থেকে জেলবন্দী। পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি। আর গোপাল দলপতি চিটফাণ্ড মামলায় ২০২১ থেকে দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন। অর্থাৎ কুন্তুলের এই চাঞ্চল্য়কর দাবি নিয়ে যে দু-জনেরই আপাতত মুখ খোলার কোনও সুযোগ নেই!
অথচ ইডি সূত্রে দাবি, আশ্চর্যজনকভাবে হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্য়পাধ্যায়কে নিয়ে সম্পূর্ণ নীরব কুন্তল ঘোষ! ইডি সূত্রে দাবি, শান্তনুর বলাগড়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি ৩০০ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা পাওয়া গেছে!
যে লিস্টে ক্য়ান্ডিডেটদের নাম, রোল নম্বর, অ্য়াডমিটকার্ডের নম্বর সমস্ত বিশদে লেখা!শুধু নিজের জেলাই নয়, হুগলির যুব তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে পাওয়া তালিকায় নাম রয়েছে কলকাতা, বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর সহ একাধিক জেলার চাকরিপ্রার্থীদের! ইডির প্রশ্ন তাহলে কি জেনেবুঝেই শান্তনুর প্রসঙ্গে আড়াল করতে চাইছেন কুন্তল? যুব তৃণমূল নেতা শান্তনুর বিলাসবহুল রেস্তোরাঁর উৎসই বা কী? তাই বারবার একটাই প্রশ্ন উঠছে, কুন্তল কি কোথাও বড় কোনও মাথাকে আড়ালের চেষ্টা করছেন ? ইডি সূত্রে খবর,নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তিহাড়ে গিয়ে গোপাল দলপতিকে জিজ্ঞাসাবাদেের ব্য়াপারে ভাবনা চিন্তা করছেন তাঁরা।