Humayun Kabir on Babri Masjid: ৬ তারিখ ‘বাবরি মসজিদে’র শিলান্যাস, রাস্তা দখলের ডাক তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের, হুঁশিয়ারি রাজ্য প্রশাসনকেই
Humayun Kabir: নিজের দল তো বটেই, পুলিশ-প্রশাসনের উদ্দেশেও হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গেল হুমায়ুনকে।

কলকাতা: তৃণমূলের অন্দরে থেকেও বেশ কিছু দিন ধরেই 'বিক্ষুব্ধ' ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঘোষণা করেন নিজের নতুন দল গড়ার। এবার রীতিমতো হুমকি-হুঁশিয়ারি শোনা গেল ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের গলায়। আগামী ৬ ডিসেম্বর 'বাবরি মসজিদে'র শিলান্যাসের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। তাতে বাধা দিতে এলে অবরোধ চলবে বলে জানালেন। সেই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে 'RSS-এর দালাল' বলে আক্রমণও করলেন। যে ৬ ডিসেম্বর 'সংহতি দিবস' পালন করতে চলেছে তৃণমূল, সেই দিনই আগুন জ্বালানোর হুঁশিয়ারি দিলেন হুমায়ুন। তার পরও কেন তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, উঠছে প্রশ্ন।(Humayun Kabir)
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নিজের দল তো বটেই, পুলিশ-প্রশাসনের উদ্দেশেও হুঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় হুমায়ুনকে। তিনি বলেন, "আমি একবছর আগে থেকে বলেছি, বেলডাঙার কোনও একটি জায়গায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করব। তোদের গা জ্বলছে? তোরা বিজেপি দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিস? আপনাদের মাধ্যমে পরিষ্কার করে সতর্ক করছি মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ ও প্রশাসনকে, আগুন নিয়ে খেলবেন না। চ্যালেঞ্জ থাকল মুর্শিদাবাদের প্রশাসনকে, ৬ তারিখ রেজিনগর থেকে বহরমপুর, NH ৩৪ আমার দখলে থাকবে, মুসলিমদের দখলে থাকবে। মুর্শিদাবাদের মুসলিম নয়, রাজ্যের কত মুসলিম এখানে আসবেন, সেদিন প্রমাণ করব।" (Humayun Kabir on Babri Masjid)
এর পরই সুর চড়িয়ে সরাসরি রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেন হুমায়ুন। বলেন, "হাতির পাঁচ পা দেখেছেন? মুসলমান ভোট দিয়ে আপনাদের সরকার নির্বাচিত করবে, আর আপনারা মুর্শিদাবাদ জেলায় RSS-এর দালালি করবেন? আমি শান্তি ভাঙব না। কিন্তু শান্তিপূর্ণ প্রোগ্রামে কেউ যদি অশান্তির প্ররোচনা দেয়, তার মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছি আমি। দেখব আমাকে কে আটকায় ৬ তারিখ। রেজিনগর থেকে বহরমপুর রাস্তা আমার দখলে থাকবে। দেখি ক'হাজার পুলিশ এনে আমাদের বিরুদ্ধে গুলি চালাতে পারেন, আমাকে হঠাতে পারেন।"
তৃণমূলের আর এক বিধায়ক, রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী যদিও রাজনৈতিক চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, "বাবরি মসজিদের বিষয়ে মুর্শিদাবাদের জনৈক রাজনৈতিক নেতৃত্ব এমন কিছু বাক্যবাণ করেছেন, যেটা মানুষের মনে কিন্তু এবং কেন-র উদ্রেক ঘটিয়েছে। সেই উপলক্ষে আমাদের একটা দায়িত্ব আছে বাংলায় সাংগঠনিক ভাবে, জমিয়ত-উলেমা-হিন্দের। আমরা কোনও সময় উত্তেজনা প্রবণ হয়ে কাজ করি না। কাজ করার আগে ভাবি, কাজ করার পরও ভাবি, যাতে মানুষের, জনগণের কোনও ক্ষতি বা সমস্যা না হয়। একটা আবেগ তৈরি করে, কঠিন পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মসজিদ আছে, মসজিদ হবে, মসজিদ থাকবে। কিন্তু ৬ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে প্রেস মিডিয়ায়, মানুষের কাছে হাইলাইট হয়ে বাংলায় অশুভ পরিস্থিতি তৈরি করবে, এটা কিন্তু আমরা কোনও ভাবে মেনে নিতে পারব না।"
সিদ্দিকুল্লা আরও বলেন, "বাবরি মসজিদকে কেন্দ্র করে নতুন করে যে আবহ তৈরি করা হচ্ছে, মনে হচ্ছে এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। বিজেপি-র কিছু নেতা, RSS-এর নেতারা বলছেন, ১ কোটি টাকা নাকি তাঁর মাথার মূল্য দেওয়া হবে! কোথায় মুর্শিদাবাদ, কোথায় নেতা সেখানে, টিপ্পনি আসছে RSS-বিজেপি-র হেডকোয়ার্টার থেকে। এই যোগটা মেলাতে পারছি না। অনেকেই মসজিদ বানান। আমার ধারণা, ওই ব্যক্তিকে কেউ প্ররোচিত করেছেন। এতে মুসলিম সমাজের কোনও লাভ হবে বলে আমি মনে করি না।"
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও বলেন, "অধীররঞ্জন চৌধুরী যখন বিরোধী দলনেতা ছিলেন লোকসভায়, বলেছিলাম উনি বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। তখন বিশ্বাস করেননি। ২০২৪ সালে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। ধৈর্য ধরুন। ওই বিধায়কের কোনও গুরুত্ব নেই। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ওঁর নামে দল চলে। বাকি কে কী বলল, যায় আসে না।"
এই মুহূর্তে মুর্শিদাবাদেই রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সময়ই এমন পরিস্থিতি। এ নিয়ে সিপিআই নেতা সৈকত গিরি বলেন, "একজন ২০২১ সাল পর্যন্ত তৃণমূল করলেন, তার পর বিজেপি-র নেতা হলেন, তিনি হিন্দুদের এক হতে, গীতা পাঠ করতে বলছেন। আর একজন ২০১৯ সালে বিজেপি-র প্রার্থী ছিল, এখন তৃণমূলের বিধায়ক। পিছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি লাগিয়ে বলছেন, RSS-এর দালালি করে তৃণমূল প্রশাসন। তিনি আবার মুসলিমদের এক হতে বলছেন।"























