Sayantika-Reyat: 'দয়া করুন আমাদের উপর', শপথ নিয়ে জটিলতা, বিধানসভার সিঁড়িতে রাজ্যপালের অপেক্ষায় সায়ন্তিকা-রেয়াত
West Bengal Assembly: বুধবার বিধানসভায় ঢোকার মুখে সিঁড়ির উপর প্ল্যাকার্ড হাতে বসে থাকতে দেখা যায় সায়ন্তিকা এবং রেয়াতকে
কলকাতা: উপনির্বাচনে জয়ী দুই তৃণমূল বিধায়কের শপথগ্রহণ ঘিরে ফের রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। যত সময় যাচ্ছে সেই সংঘাত আরও তীব্র হচ্ছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দের (CV Ananda Bose) অপেক্ষায় এবার বিধানসভার সিঁড়িতে কার্যত ধর্নায় বসলেন বরানগর থেকে জয়ী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলা থেকে জয়ী রেয়াত হোসেন। রাজ্যপাল এসে বিধানসভায় তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করান বলে দাবি তুলেছেন তাঁরা। (West Bengal Assembly) বিকেল ৪টে পর্যন্ত সেখানেই থাকবেনবলে জানিয়েছেন।
বুধবার বিধানসভায় ঢোকার মুখে সিঁড়ির উপর প্ল্যাকার্ড হাতে বসে থাকতে দেখা যায় সায়ন্তিকা এবং রেয়াতকে। হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, 'শপথগ্রহণের জন্য রাজ্যপালের পৌঁছনোর অপেক্ষা করছি'। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে রেয়াত বলেন, "মাননীয় রাজ্যপালকে আবেদন জানিয়েছি, যাতে বিধানসভায় শপথগ্রহণের ব্যবস্থা করেন উনি।" সায়ন্তিকা জানান, তাঁর কপালটাই খারাপ। তাই একমাস হতে চললেও এখনও শপথ নিতে পারছেন না।(Sayantika Banerjee)
এদিন সায়ন্তিকা বলেন, "কতক্ষণ বসিয়ে রাখবেন জানি না। কপালটাই খারাপ আমাদের।" কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও কেন এই পরিস্থিতি। সায়ন্তিকার কথায়, "আমরা নির্বাচিত হয়ে এসেছি। তার পরও কাজ করতে পারছি না। কী দোষ করলাম, বুঝতেই পারছি না আমরা। এক মাস হতে চলল। মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এখন তো মিথ্যেবাদী বলবেন সকলে! শপথ না নিলে কাজ করতে পারব না। রাজ্যপাল দয়া করুন। আমাদের কাজের রাস্তা খুলে দিন।" (Reyat Hossain Sarkar)
আরও পড়ুন: Birati Child Smuggling: ব্যাগে করে শিশুপাচার? বিরাটি স্টেশনে আটক মহিলা! তুমুল উত্তেজনা
তৃণমূলের দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথ ঘিরে সংঘাত ক্রমশ তীব্রই হচ্ছে। প্রয়োজন পড়ল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর দ্বারস্থ হবেন বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, বিধানসভা সংবিধান মেনেি কাজ করছে। রাজ্যপাল কী চাইছেন, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। দুই বিধায়ককে কেন রাজভবনে গিয়ে শপথ নিতে হবে, প্রশ্ন তোলেন তিনি। যদিও নিজের অবস্থান থেকে সরতে নারাজ রাজ্যপাল বোস। স্পিকারের এক্তিয়ারর নিয়ে আইনি পরামর্শ নেবেন বলেও জানিয়েছেন।
এযাবৎ বিধানসভার সিঁড়িতে মূলত বিরোধীদেরই দেখা গিয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বিধানসভার সিঁড়িকেই বার বার বেছে নিয়েছেন তাঁরা। সেখান থেকে স্লোগান, কটাক্ষ উড়ে এসেছে সরকারকে লক্ষ্য করে। এবার কার্যতই বেনজির দৃশ্য চোখে পড়ল। শাসকদলের নির্বাচিত দুই বিধায়ক রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সিঁড়িতে বসলেন।
বিধানসভায় শপথবাক্য পাঠ করতে চেয়ে ইতিমধ্যেই রাজভবনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যপাল রাজভবনে গিয়ে শপথ নিতে হবে বলা জানান, যা অসাবিধানিক বলে দাবি করছে তৃণমূল। তাদের দাবি, বিধায়ক বিধানসভায় শপথ নেবেন, সেটাই প্রথা। রাজ্যপাল চাইলে বিধানসভায় শপথবাক্য পাঠ করাতে পারেন। সেটা না করে তিনি শপথের অনুষ্ঠান ফেলে রাখছেন বলে অভিযোগ। শপথের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
তিনি না শপথবাক্য না পড়ালে, তাঁর মনোনীত কোনও ব্যক্তি পড়াতে পারেন। এই ধরনের ক্ষেত্রে বিধানসভার অধ্যক্ষের হাতেই তিনি দায়িত্ব তুলে দেন। কিন্তু, এই সংঘাতের আবহে আগামী দিনে কী হবে, এখন সেটাই দেখার। কারণ রাজ্যপাল বুধবারই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন।