Bankura News: হাতির হাত থেকে খেতের ফসল বাঁচাতে গজলক্ষ্মীর আরাধনার প্রস্তুতি বাঁকুড়ার রামকানালী গ্রামে
Elephant Attack: বাঁকুড়ার রামকানালী গ্রামের আরাধ্যা দেবী কোজাগরী লক্ষ্মী নন, গজলক্ষ্মী। হাতির হামলা থেকে মাঠের ফসলকে রক্ষা করতেই গজলক্ষ্মীর আরাধনা করেন এখানকার মানুষ।
পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: রাত পোহালেই বাঙালির ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপুজো (Laxmi Puja)। তবে বাঁকুড়ার (Bankura) রামকানালী গ্রামের আরাধ্যা দেবী কোজাগরী লক্ষ্মী নন, গজলক্ষ্মী (Gajalaxmi)। হাতির (elephant) হামলা থেকে মাঠের ফসলকে (grain) রক্ষা করতেই গজলক্ষ্মীর আরাধনা করেন এখানকার মানুষ।
আরাধনার খুঁটিনাটি...
একেবারে জঙ্গল লাগোয়া গ্রাম এই রামকানালী। হামেশাই সেখানে হাতির দল ঢুকে পড়ে। শুধু ঢুকে পড়া নয়, নির্বিচারে এলাকার ফসলেরও ক্ষতি করে। সেই হাতির হাত থেকে ঘরের লক্ষ্মী অর্থাৎ মাঠের ফসল বাঁচাতেই গ্রামে শুরু হয়েছিল গজলক্ষ্মীর আরাধনা। প্রায় শতাব্দীপ্রাচীন এই পুজো। প্রাচীন রীতি রেওয়াজ ও বিশ্বাসের উপর ভর করে বাঁকুড়ার রামকানালী গ্রামে গজলক্ষীর আরাধনায় মেতে উঠেন গ্রামের মানুষ। রেওয়াজে বাংলার বাকি লক্ষ্মী-আরাধনার থেকে কিছুটা আলাদা হলেও পুজোর ধূমধামের নিরিখে কোনও ফারাক নেই। এখানে মহা সমারোহেই পূজিতা হন দেবী লক্ষ্মী। যদিও কিছু ফারাক রয়েছেই।
আলাদা যেখানে...
প্রতিমার দিক থেকেই হোক বা আচার অনুষ্ঠান, আর পাঁচটা লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে রামকানালি গ্রামের মাহিষ্য পরিবারের লক্ষ্মীপুজোর ধরন-ধারন কিছুই মেলে না। এখানে লক্ষ্মীপ্রতিমার অবস্থান হাতির পিঠে। আর এলাকায় মানুষ তাঁর নামকরণ করেছেন গজলক্ষ্মী। হাতির হাত থেকে ফসল বাঁচাতে লক্ষ্মীদেবীর সঙ্গেই হাতির আরাধনা। রামকানালী গ্রামের ৪০টি মাহিষ্য পরিবারের প্রধান পুজো এটি। নির্দিষ্ট করে বললে, পুজোর বয়স ১২৪ পেরিয়ে গিয়েছে। কৃষি প্রধান গ্রামের পাশেই জঙ্গল। জঙ্গলের হাতি গ্রামের কৃষিজমিতে হামেশাই হামলা চালায়। গজরাজদের হাত থেকে শস্য বাঁচিয়ে লক্ষ্মীলাভের আশায় তাই লক্ষ্মী পুজোর পাশাপাশি একই সঙ্গে গজরাজের আরাধনা করেন গ্রামের মানুষ। গ্রামে মন্দিরও রয়েছে। আজও সেখানে পালিত হন দেবী গজলক্ষ্মী। এলাকার মানুষের বিশ্বাস, গজলক্ষ্মীর আরাধনার মধ্যে গজরাজ সন্তুষ্ট হবে। ফলে ফসলের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবেন মাঠের লক্ষী। শস্যগোলা ভরে যাবে, বাড়িতে সমৃদ্ধি আসবে। প্রাচীন রীতি মেনেই কোজাগরী পূর্ণিমায় এখানে গজলক্ষ্মীর আরধনায় মেতে উঠেন গ্রামের আট থেকে আশি। পুজোর স্বাদ নিতে গ্রামে হাজির হয় ভিন গ্রাম ও আত্মীয় কুটুম্বের দল। সব মিলিয়ে উৎসবের মেজাজ। দুর্গাপুজো পেরিয়ে গেলেও এখানে গজলক্ষ্মীর আরাধনা ঘিরে পুজোর আমেজ বজায় থাকে টানটান।
যার পরতে পরতে ইতিহাস, আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং অবশ্যই আনন্দের গল্প মিশে।
আরও পড়ুন:'সরকারি টাকায় মোচ্ছব, বাবুঘাট বা কলকাতার কোনও ঘাটে হলে কার্নিভাল হত না', আক্রমণ শুভেন্দুর