WB By Poll 2022: ব্যস্ততার মাঝেও অন্য ছবি, উপনির্বাচনে শূন্যতার ছোঁয়া বালিগঞ্জে
বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট। দিনভর রাজনৈতিক দলগুলির তৎপরতা। তবে এরইমধ্যে শূন্যতাও লক্ষ্য করা গেল। একজন আজ আর নেই। অপরজন বাড়িতে থেকেও, থাকতে পারলেন না ভোটে।
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: একজন নেই বলেই, উপনির্বাচন হল। আর অপরজন বাড়িতে থেকেও, অসুস্থতার কারণে ভোট দিতে পারলেন না। সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মতাদর্শের লড়াইয়ে ভিন্ন মেরুতে থাকলেও, উপনির্বাচনে তাঁদের না থাকার শূন্যতা যেন ছুঁয়ে গেল অনেককেই।
বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট। দিনভর রাজনৈতিক দলগুলির তৎপরতা। তবে এরইমধ্যে শূন্যতাও লক্ষ্য করা গেল। একজন আজ আর নেই। অপরজন বাড়িতে থেকেও, থাকতে পারলেন না ভোটে। প্রথমজন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বালিগঞ্জের প্রয়াত বিধায়ক, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, রাজ্য রাজনীতিতে এক বর্ণময় চরিত্র। আর দ্বিতীয়জন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক অবস্থার কারণে এবারও যিনি ভোট দিতে আসতে পারলেন না।
রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক দিয়ে, ভিন্ন মেরুতে থাকলেও, বালিগঞ্জের এদিনের উপনির্বাচনে এই দু’জনের শূন্যতা যেন ছুঁয়ে গেল অনেককে। ৫৯ পাম অ্যাভিনিউ, এই ঘরটাতে অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আছেন, এবারও তিনি ভোট দিতে পারলেন না। এই যে ঘরটা দেখা যাচ্ছে, তার গ্রাউন্ড ফ্লোরে অসুস্থ বুদ্ধদেব। প্রতি ভোটের ছবি, এবারও নিয়মের ব্যতিক্রম হল। ভোট দিলেন মীরা-সুচেতনা।
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে শেষবার ভোট দিয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।এরপর আর এই ছবি দেখা যায়নি, ২০১৯’র লোকসভা, ২০২১’র বিধানসভা, ২২’র কলকাতা পুরসভা এবং সদ্য সমাপ্ত বালিগঞ্জের উপনির্বাচনেও। শারীরিক অবস্থার উপ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারলেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য বলেন, “শারীরিক ভাবে ভাল নেই। তবে মানসিকভাবে সবল। প্রতিটা খবর রাখছেন। শায়েরাকে আশীর্বাদ করল কয়েকদিন আগে। আক্ষেপ তো সব সময় করছে, ভোট দিতে না পারার আক্ষেপ। যত তাড়াতাড়ি ভোট দেওয়া যায়, তার জন্য সকাল সকাল ভোট দিয়ে এলাম। তবে ওর মানসিক সবলতা ভাবা যায় না। পার্টি অফিসে রেগুলার যোগাযোগ রাখেন।‘’
আর যাঁর মৃত্যুর কারণে এই উপনির্বাচন, সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একডালিয়ার বাড়ি জুড়েও এদিন শুধুই নিস্তব্ধতা। এক নম্বর একডালিয়া রোড। সাত তলা। এই বাড়ির যে দরজাটা দেখা যায়, এখন তালাবন্ধ। খোলার প্রয়োজনীয়তাটাই হারিয়ে গেছে। অথচ এই বাড়িতে গিজগিজ করত মানুষ। এই বাড়ির বসার ঘরটায় আজকে একরাশ শূন্যতা। এই বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
ভোটের দিন ঘরই হয়ে উঠত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ওয়াররুম। যে চেয়ারে বসে দলীয় কর্মীদেরে নির্দেশ দিতেন, খোসমেজাজে আড্ডা-আলোচনা হত, সেটি এখন দখল করেছে তাঁরই ফ্রেমবন্দি ছবি। অনুগামীদের গিজগিজে ভিড়ে তিল ধারনের জায়গা থাকত না। কিন্তু সেই ঘর আজ ফাঁকা। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সঙ্গী স্বপন মহাপাত্র বলেন, “আজ আমাদের কোনও কাজ নেই। দাদা চলে গেছে বলেই ভোট হচ্ছে। কিন্তু শূন্যতা চারিদিকে গ্রাস করছে।’’ বালিগঞ্জ, একডালিয়া আর সুব্রত মুখোপাধ্যায়, অনেকেই বলেন তিনটে শব্দই যেন সমার্থক। কিন্তু মঙ্গলবার বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ক্লাব একডালিয়াতেও কোনও ব্যস্ততা-কোলাহল নেই। চারিদিকে যেন শুধুই শূন্যতা।