ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: দিন দিন বাড়ছে উদ্বেগ। রাজ্যে ফের এক করোনা আক্রান্তের মৃত্যু। মঙ্গলবার আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ৭৪ বছরের প্রৌঢ়ের মৃত্যু। এই নিয়ে রাজ্যে কোভিডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩।
হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ়। সোমবার বিকেলে তিনি আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, তাঁর ফুসফুসে প্রবল সংক্রমণ ছিল। বাঁদিকে ফুসফুসের সংক্রমণ বেশি মাত্রায় ছিল। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন তাঁর CT রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ফুসফুস সাদা হয়ে গিয়েছিল। তাঁকে ভেন্টিলেশনের সাপোর্ট দেওয়া হয়। সবরকমের চেষ্টার পরেও শেষরক্ষা হল না। মঙ্গলবার বেলা আড়াইটে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ডেথ সার্টিফিকেটে কোভিডের কারণেই মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৪৮ বছরের বাবুলাল সিংহ নামে এক ব্যক্তির। উত্তর কলকাতার হাতিবাগান এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। মঙ্গলবার তাঁর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ডেথ সার্টিফিকেটে কোভিড 19 নিউমোনিয়া এবং সেপটিক শকের উল্লেখ রয়েছে। মৃতের পরিবার সূত্রে দাবি,সম্প্রতি ডায়েরিরার উপসর্গ নিয়ে ৫ দিন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এই ব্যক্তি।ছাড়া পেয়ে বাড়িতে ২ দিন থাকার পর ফের ডায়েরিয়া হয়। এবার তাঁকে মারোয়াড়ি রিলিফ সোসাইটি হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবার। সেখানেই মঙ্গলবার কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে বাবুলাল সিংহের। বুধবারই তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে। সেখানেই বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির।
সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে ব্যক্তিগত স্তরে সচেতনতা ও প্রশাসনিক তৎপরতা দুই বিষয়ে জোর দেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। করোনা পরিস্থিতিতে সতর্ক রয়েছে রাজ্য সরকারও। এর আগে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতির উপর কড়া নজরদারি করছে সরকার। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পাশাপাশি কত সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তার ফলাফল সহ করোনা সংক্রান্ত সব তথ্য সরকারি হাসপাতাল ও ল্যাব কর্তৃপক্ষগুলিকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। সোমবারই করোনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব দফতরের নবান্নে বৈঠক সারেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, "প্রস্তুতি সেরে রাখলাম, তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আশা করি প্যানডেমিক আর হবে না। যা যা দরকার সবই সরকারি হাসপাতালে আছে। ভ্যাকসিনও বেরিয়েছে, সবাই ভ্যাকসিন নিয়েও নিয়েছে। এখনই আমরা কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। কেউ ভয় পাবেন না। বর্ষাকালে একটু সর্দিকাশি হয়। আতঙ্কিত অবস্থার কারণ নেই, স্বাভাবিক অবস্থাই বজায় থাকবে।''