CV Ananda Bose: কুরুক্ষেত্রে অর্জুনের সারথি ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, ভারতের আছে ‘নরেন্দ্র-কৃষ্ণ’, মন্তব্য রাজ্যপালের
Narendra Modi: শনিবার কলকাতার ভবানীপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। সেখানেই মোদিকে কৃষ্ণের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।
কলকাতা: ভগবান কৃষ্ণের সঙ্গে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তুলনা করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। তাঁর দাবি, কৃষ্ণ ছিলেন বলেই মহাভারতে অর্জুনের রথ অক্ষত ছিল। একই ভাবে মোদি আছেন বলেই, অর্জুনের রথের মতো ভারতও অক্ষত রয়েছে। একই সঙ্গে অযোধ্য়ায় রামমন্দির নির্মাণের জন্যও মোদির প্রশংসা শোনা গেল তাঁর মুখে। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
শনিবার কলকাতার ভবানীপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যপাল বোস। সেখানেই মোদিকে কৃষ্ণের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। বলেন, "শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন বলে মহাভরতে অর্জুনের রথ কোনও ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। একই রকম ভাবে নরেন্দ্র মোদি আছেন বলে ভারতবর্ষের মতো রথও অক্ষত রয়েছে। অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, শিশুদের মুখে মুখেও ভারতের নেতৃত্বদানের ক্ষমতা মুখে মুখে ফিরছে।" (Narendra Modi)
মহাভারতের সঙ্গে তুলনা টেনে রাজ্যপাল বলেন, "ভগবত গীতায় পড়েছি, শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের দিব্যীয় রথ থেকে নেমে মাটিতে পা রাখা মাত্রই, রথটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তাতে আশ্চর্য হয়ে যান অর্জুন। কী হল বুঝতে না পেরে কৃষ্ণকে প্রশ্ন করেন তিনি। তাতে হেসে কৃষ্ণ জানান, তিনি ওই রথে বসেছিলেন বলেই সেটি এত ক্ষণ পোড়েনি। আজ ভারত নামক যে রথ রয়েছে, তাতে সওয়ার রয়েছেন নরেন্দ্র-কৃষ্ণ। তিনি আছেন বলেই ভারত খান খান হয়ে যায়নি।"
রাজ্যপালের এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূলের রাজ্য সহ-সবাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন, "আমি একটা কথাই বলতে পারি, শ্রীকৃষ্ণই হোন বা রামচন্দ্র অথবা রামকৃষ্ণই হোন, কেউ অগ্নিসাক্ষী করে বিয়ে করা স্ত্রীকে পরিত্যাগ করেছেন বলে জানা নেই, যা নরেন্দ্র মোদি করেছেন। এত বড় নারীবিদ্বেষী আর কেউ নেই। যাঁকে বিয়ে করেছিলেন, তাঁর দেখাশোনা না করে, ছেড়ে চলে এসেছিলেন। এই তুলনা হয় না। কয়েক জন চাটুকারিতা করছেন কিছু পাওয়ার জন্য।"
তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, "এই রাজ্যপালের মুখোশ অনেক আগেই খুলে গিয়েছে। পূর্বসূরি জগদীপ ধনকড়কে প্রতি মুহূর্তে অনুসরণ করছেন। বিজেপি-র তল্পিবাহক হয়ে রাজ্যপাল থেকে উপরাষ্ট্রপতি হয়েছেন ধনকড়। তাই ইনিও এখানে বিজেপি-র মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন, রাজভবনটিকে বিজেপি-র সদর দফতরে পরিণত করছেন। রাজ্য সরকারের পয়সাতেই সমান্তরাল সরকার চালিয়ে নির্বাচিত সরকারকে বিব্রত করার চেষ্টা করছেন উনি।"
যদিও রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "তরুণ প্রজন্মের চোখে দেখা নতুন ভারতের নেতা নরেন্দ্র মোদি। রাজ্যপাল তুলনা করতেই পারেন। এতে সমালোচনার কী আছে? মুখ্যমন্ত্রী ওঁর হাতেখড়ি দিয়েছিলেন। তিনি এখন সব শিখেছেন, তৃণমূল, সিপিএম, সকলকে চিনেছেন। এটা কোনও অসাংবিধানিক বিষয় নয়।"
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, "ওঁর প্রশংসা কখন, কেমন হয়, ঠিক থাকে না। এসে আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন। এখন কেউ বুঝিয়েছেন, একা মমতার প্রশংসা করলে হবে না। পদ ঠিক রাখতে হলে মোদি এবং দিদি, দু'জনেরই প্রশংসা করতে হবে।" রাজনৈতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলেও, এ নিয়ে রাজভবন থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।