Kanchan Mallick: কল্যাণের কথায় নামতে হয় প্রচার গাড়ি থেকে, কী প্রতিক্রিয়া কাঞ্চনের ?
Kalyan Banerjee: কাঞ্চনকে দেখেই বিরক্ত হন কল্যাণ। কাঞ্চন তাঁর সঙ্গে প্রচারে থাকলে গ্রামের মহিলারা ভালভাবে নিচ্ছেন না বলে দাবি করে, তাঁকে প্রচারে আসতে বারণ করেন তৃণমূল প্রার্থী।
সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কোন্নগর : 'গ্রামের মহিলারা ভীষণ রিয়্যাক্ট করছেন !' এই বলে প্রচার গাড়ি থেকে অভিনেতা বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিককে নামিয়ে দিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থীর বক্তব্য, কোনও ব্যক্তি বিশেষের আনন্দ বা সুখের জন্য, সমষ্টিগত মানুষকে কষ্ট দিতে পারব না। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার নিজের মতামত জানালেন কাঞ্চন।
ঘটনাটা কী ?
প্রচার শুরুর আগেই ছন্দ পতন ! কল্যাণের প্রচারে ব্রাত্য কাঞ্চন। কোন্নগরে তৃণমূল প্রার্থীর প্রচার গাড়ি থেকে নেমে যেতে হল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিককে। বৃহস্পতিবার হুগলির কোন্নগরের নবগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভোট প্রচার ও জনসংযোগে বের হন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন্নগর স্টেশন রোডে তৃণমূল পার্টি অফিসের সামনে থেকে শুরু হয় প্রচার। সেখানেই শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর হুড খোলা গাড়িতে দেখা যায় অভিনেতা ও উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিককে। কাঞ্চনকে দেখেই বিরক্ত হন কল্যাণ। কাঞ্চন তাঁর সঙ্গে প্রচারে থাকলে গ্রামের মহিলারা ভালভাবে নিচ্ছেন না বলে দাবি করে, তাঁকে প্রচারে আসতে বারণ করেন তৃণমূল প্রার্থী। এরপরই গাড়ি থেকে নেমে যান কাঞ্চন। অভিনেতা বিধায়ক গাড়ি থেকে নেমে দলীয় কর্মীর বাইকে করে বেরিয়ে যান ঘটনাস্থল থেকে। যদিও এর আগে কাঞ্চনকে নিয়ে প্রচার করেছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাল কাটে বৃহস্পতিবারের সকালে।
এ প্রসঙ্গে কল্যাণ বলেন, "উনি আমার সঙ্গে যখন প্রচারে বেরিয়েছিলেন, গ্রামের মহিলারা কিন্তু খুব ভীষণ রিঅ্যাক্ট করছেন। আমি ওঁকে আগেই বলে দিয়েছিলাম, গ্রামে এসো না। আর আমার শুধু আমার সঙ্গে প্রচারের সময় কেন থাকছেন? একটা MLA তো অন্য দিনগুলোও তো প্রচার করবেন। কিন্তু সে তো কিছু করছেন না। আমাকে নির্বাচন করতে হচ্ছে। মানুষের মন যা আছে আমাকে তো বুঝতে হবে। আমি তো কোনও ব্যক্তি বিশেষের জন্য নই, আমি সমষ্টিগত মানুষের জন্য। আমি কোনও মানুষকে, সমষ্টিগত মানুষকে কষ্ট দিতে পারব না। কোনও ব্যক্তি বিশেষের, তাদের আনন্দ বা সুখের জন্য।"
কী বলছেন কাঞ্চন ?
যদিও এপ্রসঙ্গে কাঞ্চন বলেন, "আমি যত জায়গায় প্রচারে গিয়েছি মহিলাদের কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভের সামনে পড়িনি। কোথাও বিক্ষোভের মুখে পড়িনি। উল্টে ভালবাসাই পেয়েছি। সবার আশীর্বাদই পেয়েছি। উনি কী ভাবছেন সেটা আমার জানার কথা নয়। দলীয় কর্মসূচিতে দলীয় বিধায়ক হিসাবে যাব না ? দলের কর্মসূচি অনুযায়ী গেছি।"
তাঁর সংযোজন, "প্রচারে যাওয়াটা আমার দলীয় কার্যাবলীর মধ্যে পড়ে। এটা আমার বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এটা প্রথম নয়। আমি উত্তরপাড়াতেও প্রচার করেছি ওঁকে সঙ্গে নিয়ে। কোন্নগরেও করেছি। মাতলাতেও করেছি। আজ যাওয়ার সময়, উনি গাড়িতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বললেন তুমি যেও না। গ্রামে গেলে অদ্ভুত ইয়ে হয়, সবাই তোমার নামে একটা ইয়ে করে...তুমি যেও না। আমি বললাম, যাব না তো ? বললেন, না। ভোটটা আমায় করতে দাও। আমি সোজা নেমে চলে এসেছি। চৈত্র সংক্রান্তির দিন আমি একটা অনুষ্ঠান করতে গিয়েছিলাম। বর্ধমানের একটি গ্রামে। সেখানে রাতে সাড়ে ১২টায় মঞ্চে উঠেছি। ১০ হাজার লোক ছিল। ৭৫ শতাংশ মহিলা। এক ঘণ্টা অনুষ্ঠান করেছি। কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা মন্তব্য আমি পাইনি। নির্দিষ্ট কী অভিযোগ আমি জানি না। অন্যান্য কী অভিযোগ তাও জানি না। কল্যাণবাবুর সঙ্গে কোনও মতানৈক্য নেই। যদি সেটা থাকত তাহলে তাঁর সঙ্গে উত্তরপাড়া, কোন্নগর বা মাতলার প্রচারে সঙ্গে সঙ্গেই ঘুরেছি। একই জিপে একই সঙ্গে প্রচার করেছি। সেখানে যদি বিরোধ থাকত যেতাম ? সেরকম কোনও ব্যাপার নয়। আগেও কোনও বাগ-বিতণ্ডা হয়নি। দলের চোখ-কান আছে। ওরা দেখছে শুনছে। আমার যা জানানোর জানিয়েছি। দলীয় নেতৃত্ব তো দেখছেন। আমার বিবাহ, আমার বিবাহ। আমার ব্যক্তিগত জীবন আমার ব্যক্তিগত জীবন। তার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।"
সম্প্রতি তৃতীয়বার বিয়ে করেছেন অভিনেতা-বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। তাই নিয়েই কি রিঅ্যাক্ট করছেন গ্রামের মহিলারা ? স্পষ্ট করেননি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
আপনার পছন্দের খবর এবার হোয়াটসঅ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে।