Srijan Bhattacharya: 'পড়াশোনা করা থাকলে পরীক্ষার আগে টেনশন হয় না', শেষ লগ্নে মমতার পদযাত্রা নিয়ে সৃজন
Mamata Banerjee: বৃহস্পতিবার যাদবপুর মোড় থেকে মমতার পদযাত্রা শুরুর সময়ই, বারুইপুরে চায়ের দোকানে দেখা মেলে সৃজনের।
কলকাতা: লোকসভা নির্বাচন একেবারে শেষ চরণে। শনিবার সপ্তম দফায় ভোটগ্রহণ, তার আগে বৃহস্পতিবার, প্রচারের শেষ দিনে রাস্তায় নামলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদবপুর থেকে ১২ কিলোমিটার পদযাত্রায় অংশ নিতে দেখা গেল তাঁকে। আর ঠিক ওই সময়ই, যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্যকে দেখা গেল বারুইপুরে। তবে পদযাত্রা বা ভাষণ দিতে নয়, সৃজনকে দেখা গেল চায়ের দোকানে স্থানীয়দের সঙ্গে আড্ডা দিতে। মমতা যেখানে পথে নেমেছেন, তিনি বেমালুম আড্ডা দিচ্ছেন কী করে, জানতে চাওয়া হলে জবাবেও চমকে দিলেন সৃজন। (Srijan Bhattacharya)
বৃহস্পতিবার যাদবপুর মোড় থেকে মমতার পদযাত্রা শুরুর সময়ই, বারুইপুরে চায়ের দোকানে দেখা মেলে সৃজনের। মমতা যখন রাস্তায় নেমেছেন, তিনি চায়ের দোকানে বসে থাকলে চলবে কী করে, প্রশ্ন করা হয় সৃজনকে। জবাবে বামেদের তরুণ নেতা বলেন, "আড়াই মাস ধরে যারা পড়াশোনা করেছে, তাদের পরীক্ষার আগের রাতে বাড়তি টেনশন নিতে হয় না, পরিষ্কার কথা।" (Mamata Banerjee)
যাদবপুরের সমর্থন নিয়ে কতটা আশাবাদী, তাও বুঝিয়ে দেন সৃজন। তিনি বলেন, "যেভাবে মানুষের ভালবাসা পেয়েছি, যাদবপুরে যখন শুরু করেছিলাম আমরা, কেউ কেউ পাশে হাঁটছিলেন। মাঝপথে গিয়ে দেখলাম অনেক লোক হাঁটতে শুরু করেছেন। আর এখন চায়ে চুমুক দিতে দিতে বুঝতে পারছি, গোটা যাদবপুরই আমাদের সঙ্গে পথ হেঁটে ফেলেছে। তাই কে ১২ কিলোমিটার হাঁটলেন, কে দিল্লি থেকে এসে সভা করে গেলেন, জানি না। যাদবপুর মনস্থির করে ফেলেছে, রুজিরোটির লড়াইকে জেতাবে।"
কিন্তু যে যাদবপুর নিয়ে এতটা আশাবাদী সৃজন, সেই যাদবপুর বামেদের যেমন দু'হাত উপুড় করে দিয়েছে, তেমনই আবার সজোরে আছড়েও ফেলেছে মাটিতে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তীকে হারতে হয়েছে এই যাদবপুরেই। তাই যাদবপুরের উপর এত আস্থা হয় কী করে? সৃজনের জবাব, "জিন্দেগি কে ইয়েহি রীত হ্যায়, হার কে বাদ হি জিত হ্যায়। যাদবপুর তো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেও হারিয়েছে। যাদবপুর রাজনৈতিক ভাবে সচেতন একটি কেন্দ্র। রাজনীতির মূলস্রোত থেকে যখন মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, ফসলের দাম, স্বাস্থ্যবিমার প্রিমিয়াম, ১০০ দিনের কাজ, জ্বালানির দাম, জিএসটি সরে যাচ্ছে, যাদবপুর সেগুলিকে আলোচনা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।"
যাদবপুরে এবারে সৃজনকে টক্কর দিচ্ছেন তৃণমূলের সায়নী ঘোষ এবং বিজেপি-র অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। তৃণমূল রাজ্যে সরকারে রয়েছে, বিজেপি কেন্দ্রে। বামেরা পৌরসভা, পঞ্চায়েতেও নেই। সেখানে সৃজন জিতেই বা করবেন কী? তরুণ নেতা জানালেন, আর কিছু না হোক সাংসদ তহবিল মারফত ২৫ কোটি টাকা হাতে আসবে। ওই টাকা হাতে পাওয়ার পরও পূর্বতন সাংসদের আমলে ভুয়ো টিকা দেওয়া হয়েছিল মানুষজনকে। সিএএ চালু হলেও, ভোট দিতে যাওয়ার সময় যাদবপুরের মানুষের মুখগুলো একবারও মনে পড়েনি সেই সাংসদের। বরং লুকিয়ে বিজেপি-কে সাহায্য করেছিলেন। তিনি অন্তত সেই পথে হাঁটবেন না বলে জানালেন সৃজন। তিনি জানিয়েছেন, গত আড়াই মাসে কাউকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি তিনি, কোনও নিম্নরুচির কথা বলেননি। বরং রুটিরুজির দাবিকে মূলস্রোতে তুলে আনতে ভাষ্য তৈরির চেষ্টাই করে গিয়েছেন। তাই যাদবপুরকে ঘিরেই আশা-ভরসা তাঁর।