Tripura Assembly Elections 2023: ত্রিপুরায় মান রাখলেন মানিক, ক্ষমতায় ফের বিজেপি-ই, সুবিধা করে দিল যে দল...
Tripura Elections: বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে। ৬০ আসনের বিধানসভায় সেখানে ৩২টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি।
আগরতলা: আচমকা পদত্যাগ মুখ্যমন্ত্রীর। সাত তাড়াতাড়ি তাঁর বিকল্প খোঁজার জিগির। ক্ষমতার রাশ যেখানে বিজেপি-র হাতে, এমন সঙ্কট সচরাচর চোখে পড়ে না। কিন্তু দশ মাস আগে ঠিক এই পরিস্থিতিই তৈরি হয়েছিল ত্রিপুরায়। তড়িঘড়ি মানিক সাহাকে বিপ্লবের জায়গায় বসিয়ে পরিস্থিতি যদিও সামাল দিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব, কিন্তু একদা কংগ্রেস নেতার কর্তৃত্ব পছন্দ হয়নি রাজ্য বিজেপি-র অনেকেরই। কিন্তু সে সবের তোয়াক্কা না করে নীরবে নিজের দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন মানিক। বৃহস্পতিবার তার সুফল পেলেন তিনি। তাঁকে সামনে রেখেই ত্রিপুরায় ফের প্রত্যাবর্তন হচ্ছে বিজেপি-র। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানিকের পুনর্বহালও একরকম পাকা।
বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে। ৬০ আসনের বিধানসভায় সেখানে ৩২টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। ২০১৮ সালে যদিও ৩৬টি আসন পেয়েছিল বিজেপি, এ বার চারটি আসন কম। রাজবংশের উত্তরাধিকার, বিক্রম মানিক্য দেববর্মার তিপরা মোথা পার্টি ১৩টি আসনে বিজয়ী হয়েছে। আর দীর্ঘ ২৫ বছর ত্রিপুরায় শাসন চালানো বামেদের দখলে গিয়েছে ১১টি আসন। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য ত্রিপুরায় জমি তৈরি করতে গিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু সেখানে খাতাই খুলতে পারেনি তারা। নোটায় যা ভোট পড়েছে, তার চেয়েও কম ভোট পড়েছে তৃণমূলের সমর্থনে। কিন্তু নির্বাচনের আগে যেখানে প্রকাশ্যে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছিল সাধারণ মানুষকে, কোন মন্ত্রে সেই ত্রিপুরায় ক্ষমতা ধরে রাখল বিজেপি, উঠছে প্রশ্ন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা যদিও কৃতিত্ব দিয়েছেন মানিককেই। কংগ্রেসের হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হলেও, দন্ত চিকিৎসক হিসেবে আলাদা পরিচিতি রয়েছে তাঁর। বিজেপি-তে এসে হাইপ্রোফাইল নেতা থেকে রাতারাতি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গেলেও, পুরনো পেশাকে মোটেই অবহেলা করেননি তিনি। একদিকে আগরতলায় দফতর চালিয়েছেন যেমন, হাসপাতালে গিয়ে অস্ত্রোপচারে হাত লাগাতেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। রাজনীতিতে থেকেও, সবদিকে ভারসাম্য রেখে চলার এই গুণেই মানুষের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
তবে মানিকের মজবুত কাঁধে ভর করে এ বার বিজেপি-র বৈতরণী পার হয়ে গেলেও, ত্রিপুরার রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। বাম, বিজেপি, কংগ্রেসকে ছাপিয়ে উঠে এসেছে বিক্রম মানিক্য দেববর্মার তিপরা মোথা পার্টি। এ বারই প্রথম রাজনীতিতে পা রাখলেন বিক্রম। আর শুরুতেই বিপুল সাফল্যের স্বাদ পেলেন। বিজেপি-কে শুধু টক্কর দেওয়াই নয়, তিপ্রা মোথা পার্টি ত্রিপুরায় ‘কিংমেকার’ হয়ে উঠতে পারে বলেও মনে করছিলেন অনেকে। কিছু আসনের জন্য তা না হয়ে উঠলেও, দৌড়ে নেমেই অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে তারা।
জনজাতি ভোট তো বটেই, আদি বাসিন্দাদের জনসমর্থনের অনেকটাই বিজেপি-র শরিক দল পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরার থেকে তিপরা মোথা পার্টির দিকে ঘুরে গিয়েছে। তবে এতে বাম-কংগ্রেসের কোনও লাভ নেই বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, তিপরা মোথা আদতে বাম-কংগ্রেসের ভোট কেটে সুবিধা করে দিয়েছে বিজেপি-কে।