WB Election 2021 News: মহিষাদলে রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার স্বাস্থ্যসাথীর কয়েকশো আবেদনপত্র
Swasthya Sathi: এই ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
বিটন চক্রবর্তী, মহিষাদল: পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে রাস্তার ধার থেকে কয়েকশো স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনপত্র উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য। কোথা থেকে এল এই আবেদনপত্র? তদন্ত করে দেখার আশ্বাস ব্লক প্রশাসনের। এই ঘটনায় শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা।
২১-এর বৈতরণী পার হতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’কেই গেমচেঞ্জার হিসেবে দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এই আবহে এবার রাস্তার ধার থেকে উদ্ধার হল স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কয়েকশো আবেদন পত্র! শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের সিনেমা মোড়ে একটি নয়ানজুলির পাশে এই আবেদনপত্রগুলি পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বর্তমানে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আবেদনপত্র জমা নিয়ে কার্ড দেওয়া হচ্ছে। এরইমাঝে রাস্তার ধার থেকে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনপত্র মেলায় ওই অঞ্চলে চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আবেদনপত্রগুলি রামনগর এলাকার বাসিন্দাদের। কিন্তু কী করে এই আবেদনপত্রগুলি রাস্তার ধারে এল? এর মধ্যে যাঁদের আবেদনপত্র রয়েছে, তারাই বা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পাবেন কী করে?
মহিষাদলের এক বাসিন্দার কথায়, ‘আজ সকালে হঠাৎ দেখতে পেলাম এখানে স্বাস্থ্যসাথীর আবেদন পত্র পড়ে আছে। নন্দীগ্রাম-রামনগর এলাকার আবেদনপত্র হবে। এগুলো কী করে এখানে এল? যাঁদের আবেদন পত্র তাঁরা কী করে স্বাস্থ্যসাথী পাবেন? প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক।’
এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির তরজা। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর চড়াতে শুরু করেছে বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারীও এর আগে বলেছিলেন, স্বাস্থ্যসাথী আসলে একটা ভাঁওতা। এদিন সেই একই সুর শোনা গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের জেলার নেতাদের গলায়। পাল্টা জবাব দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল।
তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সহ সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিয়ে সাধারণ মানুষকে যে ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে এটাই তার প্রমাণ। সাধারণ মানুষ কি ভরসায় স্বাস্থ্যসাথী করাবে?’
অন্যদিকে মহিষাদলের তৃণমূল ব্লক সভাপতি তিলক চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, ‘পুরোটাই বিজেপির চক্রান্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কালিমালিপ্ত করতেই এটা করা হয়েছে। তবে এসব করে কিছু করতে পারবে না। কারণ মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পাচ্ছে।’
যদিও গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে।
বিধানসভা ভোটের মুখে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে জানিয়েছিলেন, ‘স্বাস্থ্যসাথীর জন্য বরাদ্দ দেড় হাজার কোটি টাকা। তিন বছর অন্তর রিনিউ করা হবে। যে কোনও সময় এই প্রকল্পে যোগ দেওয়া যাবে।’
কিন্তু তা সত্ত্বেও গত ৪ ফেব্রুয়ারি, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও, ফালাকাটার এক রোগীকে চিকিৎসা না করেই ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ির ৫টি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। গত বুধবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের টোকেন বিলিকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরের কাঁকসায় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত উপপ্রধানের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার স্বাস্থ্যসাথীর আবেদনপত্র মিলল মহিষাদলে। এই ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।