WB Election 2021: "আমি ফুল টাইম দেওয়ার জন্য এসেছি", প্রচারে নেমে 'পাওয়ার-প্লে' মনোজের
ক্রিকেট মাঠের সবুজ মখমল ছেড়ে নির্বাচনী রাজনীতির কাঁটায় ভরা ময়দানে অবতীর্ণ এই ডাকাবুকো ব্যাটসম্যান
সঞ্চয়ন মিত্র, হাওড়া: ক্রিকেট মাঠের সবুজ মখমল ছেড়ে নির্বাচনী রাজনীতির কাঁটায় ভরা ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছেন মনোজ তিওয়ারি।
রাজনীতিতে যোগ দিয়েই ভোটে লড়ছেন। কেরিয়ারের নতুন ইনিংসে গোড়া থেকেই আগ্রাসী শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রতিনিধিত্ব করা মনোজ তিওয়ারির প্রচারেও দেখা গেল পাওয়ার-প্লে।
ডাকাবুকো ব্যাটসম্যান। মাঠে এটাই ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারির পরিচয়। ঝুঁকির শট নিতে অভ্যস্ত তিনি। ২০২১ সালের সবচেয়ে বড় ম্যাচ যখন ‘খেলা হবে’ স্লোগান ঘিরে তপ্ত, তখন মাঠ বদলে ফেলেছেন মনোজ তিওয়ারি। পা রেখেছেন রাজনীতির ময়দানে।
এবার বিধানসভা ভোটে হাওড়ার শিবপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে তাঁকে ৷ রাজ্য রাজনীতিতে মনোজ তিওয়ারির প্রবেশের সঙ্গে জড়িয়ে আরেক ক্রিকেটার রাজনীতিকের প্রস্থান কাহিনি।
বিধানসভা ভোটের মুখে গত ৫ জানুয়ারি ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেন লক্ষ্মীরতন শুক্ল। হাওড়া শহর তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকেও নিজেকে সরিয়ে নেন উত্তর হাওড়ার বিধায়ক।
তৃণমূল ‘লক্ষ্মী-হারা’ হওয়ার ৫০ দিনের মাথায় হুগলির সাহাগঞ্জে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় তৃণমূলে যোগ দেন হাওড়ারই ভূমিপুত্র, বাংলার আরেক ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, হাওড়ায় তো আগেও একজন ক্রিকেটার বিধায়ক ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে কোনও টিপস নিয়েছেন? উত্তরে মনোজ বলেন, লক্ষ্মী আমার ক্যাপ্টেন ছিল। ও এখন রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চায়। তাই আলাদা করে কিছু কথা হয়নি৷
চৈত্রের প্রখর রোদ মাথায় নিয়ে প্রচারে হাওড়ার অলিগলি চষে ফেলছেন শিবপুরের তৃণমূল প্রার্থী। ক্রিকেটার বলে ফিটনেস ভাল ৷ তাই কি এত দৌড়তে পারছেন? উত্তরে মনোজ বলেন, ‘‘সেটা একটা কারণ। মানুষের ভালবাসা এনার্জি আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে ৷’’
এলাকার পরিচিত মুখ। প্রার্থীকে দেখে এগিয়ে আসছেন অনেকে। মেটাতে হচ্ছে নানা রকম আবদার। শুধু সেলফির আবদার মেটানো নয়, মনোজ তিওয়ারি যখন হাতের কাছে, তখনও কচিকাঁচারা তাঁৰ সঙ্গে একটু ক্রিকেট খেলতে চাইবে না তা কী হয়!
সেই আবদারও মেটালেন মনোজ। হাওড়া মানে এখনও নোংরা গলি, খোলা ড্রেন, জমে থাকা আবর্জনা। বদল আসবে? এ বিষয়ে মনোজ বলেন, সব কিছুরই পরিবর্তন সম্ভব যদি ইচ্ছা নিয়ে কাজ করা হয়। মমতাদি যেভাবে বলবেন, সেভাবে কাজ হবে ৷ হাওড়ায় প্রচুর কলকারখানা যেগুলো বন্ধ রয়েছে, সেগুলো খোলারও চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন মনোজ ৷
শিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে লড়াই ত্রিমুখী হলেও, মনোজ তিওয়ারির প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী ৷ উন্নয়ন ইস্যুতে হাওড়া পুর নিগমের প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে কতটা টক্কর দিতে পারবেন মনোজ? উত্তরে জানান, ‘‘উনি আংশিক সময়ের মেয়র ছিলেন। আমি ফুল টাইম দেওয়ার জন্য এখানে এসেছি ৷’’
কিন্তু এমন ধারণা আছে সেলিব্রিটি প্রার্থী মানেই ভোটের পর পাওয়া যায় না। মনোজের জবাব, আমি ২৪x৭ এখানে থাকবে। সেটাই আমার লক্ষ্য। প্রত্যেক ওয়ার্ডে আমার অফিস থাকবে। এলাকার মানুষের আমাকে পেতে কোনও অসুবিধা হবে না ৷
ফ্রন্টফুটে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের জন্য ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ যাঁকে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেনের সঙ্গে তুলনা করে, ভোট রাজনীতির ময়দানে তিনি কতটা দাগ কাটতে পারবেন, তার উত্তর মিলবে দোসরা মে।