এক্সপ্লোর

Aindrila Sharma: 'ঐন্দ্রিলা আছে। ঐন্দ্রিলা থাকবে। রাখে বড়মা, তো মারে কোন..'

ঐন্দ্রিলার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে তাঁকে নিয়ে বাড়ি ফেরার জেদ ধরে যিনি রয়েছেন, তিনি সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)। তাঁর সাম্প্রতিক পোস্টে উঠে এসেছে অনেক এমন কথা, যা প্রেরণা যোগায় বহু মানুষকে।

কলকাতা: ঐন্দ্রিলা শর্মা। ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তিনি আজ আর শুধু অভিনেত্রী হিসেবেই দর্শকের মনে জায়গা করে নেননি। মারণ রোগের সঙ্গে তাঁর লড়াই তাঁকে আরও বেশি করে দর্শকদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যেতে সাহায্য করেছে। গত দুবার তিনি মারণ রোগ ক্যানসারকে হারিয়ে জীবনীশক্তি নিয়ে ফিরে এসেছেন। এবারও তেমনই ম্যাজিক ঘটার অপেক্ষায় সাধারণ মানুষ থেকে তারকারা। ২ সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এখনও হাসপাতালে ভর্তি অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতির আশায় সকলে। ইন্ডাস্ট্রির মানুষ, অনুরাগী সকলেই অপেক্ষায়, কবে ঐন্দ্রিলা ফিরে আসবে। আর ঐন্দ্রিলার পাশে দাঁড়িয়ে থেকে তাঁকে নিয়ে বাড়ি ফেরার জেদ ধরে যিনি রয়েছেন, তিনি সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)। তাঁর সাম্প্রতিক পোস্টে উঠে এসেছে অনেক এমন কথা, যা প্রেরণা যোগায় বহু মানুষকে।

'ঐন্দ্রিলা আছে। ঐন্দ্রিলা থাকবে'। লিখলেন সব্যসাচী চৌধুরী-

সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে দীর্ঘ একটি পোস্ট করেছেন সব্যসাচী চৌধুরী। ঐন্দ্রিলা শর্মার শারীরিক অবস্থা, পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি আর আশেপাশের অতি উতসাহী লোকেদের নিয়ে কথা বলার শেষে তিনি আশ্বাস দিয়ে লিখেছেন যে, 'ঐন্দ্রিলা আছে। ঐন্দ্রিলা থাকবে। রাখে বড়মা, তো মারে কোন...' সব্যসাচীর পোস্ট থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, যত ঝড় ঝাপটাই আসুক না কেন, তিনি হাল ছেড়ে দিতে রাজী নন। প্রচলতি একটা কথা আছে। যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ। সেই বিশ্বাসে তিনি নিজেও বাঁচেন, আর সকলকে তেমনই বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

সব্যসাচী লেখেন, 'কয়েক হাজার মানুষের নিঃস্বার্থ ভালোবাসার জন্য এতখানি লেখা প্রয়োজন ছিল। একটু কষ্ট করে পড়ে নিও। পরশুদিন সকালে ঐন্দ্রিলার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, চোখের সামনে দেখলাম ওর হার্টরেট ড্রপ করে চল্লিশের নিচে নেমে তলিয়ে গেলো, মনিটরে ব্ল্যাঙ্ক লাইন, কান্নার আওয়াজ, তার মাঝে ডাক্তাররা দৌড়াদৌড়ি করছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে হৃদস্পন্দন ফের ফিরে এলো বিভিন্ন সাপোর্টে, হার্টবিট ১২০। তারপরই কে যেন একটা অদৃশ্য বালিঘড়ি উল্টো করে ঝুলিয়ে দিলো, ঝুরো বালির মতন সময় ঝরে পড়ছে, সাথে স্থিরভাবে একটা একটা করে হার্টবিট কমছে, কমছে রক্তচাপ, কমছে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস। ডাক্তাররা জবাব দিয়েছেন, হসপিটালের নিচে পুলিশ পোস্টিং, বিভিন্ন বিশিষ্ট মানুষ এসে সমবেদনা জানাচ্ছেন, কিছু উত্তেজিত ইউটিউবার এবং মিডিয়ার লোকজন নিচে ঘোরাঘুরি করছেন। শেষ চেষ্টার জন্য অন্য হাসপাতালের এক নামকরা নিউরোসার্জনকে ডেকে আনা হলো, তিনি খানিক নাড়াচাড়া করে জানালেন যে “ও চলে গেছে অনেক আগেই, শুধুশুধু এইভাবে আটকে রাখছেন কেন? এমনিতেও কালকের মধ্যে সব থেমেই যাবে। লেট্ হার গো পিসফুলি” রাত বাড়লো, দাঁতে দাঁত চিপে একটা ছোট্ট অসাড় হাত ধরে বসে আছি, চোখদুটো অনেক আগেই ডাইলেটেড হয়ে গেছে, একটা করে বিট কমছে আর অসহায়তা বাড়ছে, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আগেই দেখা করে গেছে। লোকজন মাঝেমধ্যেই ফোন করে জিজ্ঞাসা করছে যে ‘আজ রাতেই হবে? নাকি সকালে আসবো?’ ইতিমধ্যে ফেসবুকের কল্যাণে কারা যেন মাঝরাতে ছড়িয়ে দিয়েছে যে ঐন্দ্রিলা আর নেই। বানের জলের মতন হুহু করে ফোন ঢুকতে শুরু করলো, সৌরভ শুটিংয়ে বাইরে গেছে, দিব্য একা সামলাতে পারছে না। অগত্যা ঠেকা দেওয়ার জন্য আমি পোস্ট করতে বাধ্য হলাম, মিনিট কুড়ির মধ্যে আবার সব শান্ত। সকাল থেকে রক্তচাপ কমতে শুরু করলো, ওর বাবা-মা কে ডাকলাম, বাকিদের খবর দিলাম। গতকাল আর বাধা দিইনি কাউকে, সারাদিন ধরে কাছের মানুষরা এসেছে, ওকে ছুঁয়েছে, ডুকরে কেঁদেছে। কত স্মৃতিচারণ, কত গল্প। বিকেলের পর দেখলাম হাত, পা, মুখ ফুলছে ঐন্দ্রিলার, শরীর ঠান্ডা। হার্ট রেট কমতে কমতে ৪৬, বিপি ৬০/৩০। আগের দিনের ডাক্তারের কথাটা কেবলই আমার মাথায় ঘুরছিলো, ওর শরীরটাকে এভাবে আটকে রাখার জন্য নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে, থাকতে না পেরে ওর মাকে বললামও যে এত কষ্ট আর দেখতে পারছি না, কি দরকার ছিল এত কিছু করার, শান্তিতে যেত। মুখে বলছি বটে, কিন্তু ছাড়তে কি আর পারি, মায়ার টান বড় কঠিন। ঠিক রাত আটটায় যখন আমি বিমর্ষমুখে নিচে দাঁড়িয়ে, হঠাৎ হাত নড়ে ওঠে ঐন্দ্রিলার। খবর পেয়ে দৌড়ে গিয়ে দেখি হার্টরেট এক লাফে ৯১, রক্তচাপ বেড়ে ১৩০/৮০, শরীর ক্রমশ গরম হচ্ছে। কে বলে মিরাকেল হয় না? কে বলে ও চলে গেছে? এক প্রকার অনন্ত শূন্য থেকে এক ধাক্কায় ছিটকে ফিরে এলো মেয়েটা। গেছে বললেই ও যাবে না কি, যেতে দিলে তো যাবে। এই মুহূর্তে ঐন্দ্রিলা একপ্রকার সাপোর্ট ছাড়াই আছে, এমন কি ভেন্টিলেশন থেকেও বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। আগে ক্লিনিক্যালি সুস্থ হোক, নিউরোর কথা পরে ভাববো। ঈশ্বর ফেসবুক করেন না আমি জানি, তাই লিখেছিলাম মন থেকে প্রার্থনা করুন, ‘ফোন’ থেকে করুন লিখিনি। ঈশ্বর ফেসবুক করেন না আমি জানি, তাই লিখেছিলাম মন থেকে প্রার্থনা করুন, ‘ফোন’ থেকে করুন লিখিনি। তবে হ্যাঁ, কিছু কথা বলা প্রয়োজন। প্রথমত, এ কথা ঠিক যে ঐন্দ্রিলার প্রথম থেকে যা যা হয়েছে তা যথেষ্টই অপ্রাকৃত। কিন্তু তা বলে সেটা নিয়ে এত মাতামাতি করলে তা বাকি পেশেন্টদের একপ্রকার অপমান করা হয় বলে আমি মনে করি। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসার খরচ নিয়ে লেখালিখি বন্ধ করা উচিত, পরিবারের সামর্থ্য অনুযায়ীই চিকিৎসা হবে, এখনো অবধি কারোর কাছে এক পয়সাও অর্থসাহায্য চাওয়া হয়নি অথবা কারোর থেকে এক পয়সাও গ্রহণ করা হয়নি। তাই এটা নিয়ে লেখা মানে ঐন্দ্রিলাকে অপমান করা এবং তার পরিবারকে ছোট করা। নিজের অপমান গায়ে মাখি না ঠিকই কিন্তু ওর অপমানে আমার গায়ে ফোস্কা পড়ে। তৃতীয়ত, একটা সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ চেষ্টা করে তার কাছের মানুষের পাশে থাকতে, বিপদে পড়লে খড়কুটো অবধি আঁকড়ে ধরতে। সেটাই তো এতদিন স্বাভাবিক বলে জেনে এসেছি। আমার মা অসুস্থ হলে, বাবা যেমন দৌড়াদৌড়ি করেন, গত দুই বছর ধরে আমিও সেটাই করেছি। তাই কিছু পুরোনো ছবি আর ভিডিও সাজিয়ে, গান বাজিয়ে সেটাকে গ্লোরিফাই করা বন্ধ করা উচিত। এমন কি একটা লকডাউনের সময়কার তারাপীঠের ভিডিও পর্যন্ত ঐন্দ্রিলার নাম করে ঘুরপাক খাচ্ছে দেখলাম। আমি ঠিক জানি না, এগুলো করে বোধহয় তোমাদের চ্যানেল বা পেজ পয়সা পায় কিন্তু বিষয়টা আমার চোখে খুবই দৃষ্টিকটু লাগে। ইহ জীবনে কয়েক শত জুটিকে দেখেছি এসএসকেএম’এর বাইরের ফুটপাথে রাত কাটাতে, ভালোবাসে বলেই তারা থাকে। তবু পরিচিত মুখ বলে আমরা চর্চিত হই, তারা নয়।
আসলে কি জানো, সে খবর বিক্রি হয় না। সর্বশেষে বলি, মানুষের গায়ে আজকাল বড়ই শকুন শকুন গন্ধ পাই। গত দুইদিন ধরে হাসপাতালের নিচে বেশ ভিড় জমেছিলো, ওর অবস্থার উন্নতি ঘটাতে কাল রাত থেকে একেবারে খাঁ খাঁ করছে। তবে গত দুদিনের এত নেগেটিভিটির মাঝে একটামাত্র মানুষ আমায় কিছু তথ্য দিয়ে প্রথম আলোর দিশা দেখায়, যার সাথে সারাদিন নির্দ্বিধায় চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করি, তিনি অরিজিৎ সিং।
ঐন্দ্রিলা আছে। ঐন্দ্রিলা থাকবে।
রাখে বড়মা, তো মারে কোন..' (অপরিবর্তিত)

আরও দেখুন
Advertisement
Advertisement
Advertisement

সেরা শিরোনাম

West Bengal Weather:   শীতের কামড় এবার হবে জোরদার, আরও নামল পারদ, এই মরসুমে সবচেয়ে ঠান্ডা আজ
শীতের কামড় এবার হবে জোরদার, আরও নামল পারদ, এই মরসুমে সবচেয়ে ঠান্ডা আজ
Manipur Situation: অশান্তির আগুনে জ্বলছে মণিপুর, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার NPP-এর
অশান্তির আগুনে জ্বলছে মণিপুর, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার NPP-এর
Delhi Air Quality: দিল্লির বাতাসে বিষ ! বিপদসীমা পেরোল দূষণ; বন্ধ স্কুল, ওয়ার্ক ফ্রম হোম
দিল্লির বাতাসে বিষ ! বিপদসীমা পেরোল দূষণ; বন্ধ স্কুল, ওয়ার্ক ফ্রম হোম
Paschim Bardhaman News : মাটির নড়বড়ে দেওয়াল খুঁটির ভরসায় দাঁড়িয়ে, সেখানেই ছাগল-মানুষের একত্র-বাস, তবু মেলেনি 'আবাসের' বাড়ি
মাটির নড়বড়ে দেওয়াল খুঁটির ভরসায় দাঁড়িয়ে, সেখানেই ছাগল-মানুষের একত্র-বাস, তবু মেলেনি 'আবাসের' বাড়ি
Advertisement
ABP Premium

ভিডিও

Malda News: জুয়ার বোর্ড চালানোর অভিযোগ, গ্রেফতার শাসক নেতাKolkata Fire Incident: অ্যাক্রোপলিস মলে ফের আগুন, প্রশ্ন অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে।Sera Bangali 2024: পথ দেখান যাঁরা, স্বপ্ন শেখান তাঁরা…..তাঁরাই 'সেরা বাঙালি' | ABP Ananda LIVEWb News: চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যু, কী বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ?

ফটো গ্যালারি

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
West Bengal Weather:   শীতের কামড় এবার হবে জোরদার, আরও নামল পারদ, এই মরসুমে সবচেয়ে ঠান্ডা আজ
শীতের কামড় এবার হবে জোরদার, আরও নামল পারদ, এই মরসুমে সবচেয়ে ঠান্ডা আজ
Manipur Situation: অশান্তির আগুনে জ্বলছে মণিপুর, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার NPP-এর
অশান্তির আগুনে জ্বলছে মণিপুর, বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার NPP-এর
Delhi Air Quality: দিল্লির বাতাসে বিষ ! বিপদসীমা পেরোল দূষণ; বন্ধ স্কুল, ওয়ার্ক ফ্রম হোম
দিল্লির বাতাসে বিষ ! বিপদসীমা পেরোল দূষণ; বন্ধ স্কুল, ওয়ার্ক ফ্রম হোম
Paschim Bardhaman News : মাটির নড়বড়ে দেওয়াল খুঁটির ভরসায় দাঁড়িয়ে, সেখানেই ছাগল-মানুষের একত্র-বাস, তবু মেলেনি 'আবাসের' বাড়ি
মাটির নড়বড়ে দেওয়াল খুঁটির ভরসায় দাঁড়িয়ে, সেখানেই ছাগল-মানুষের একত্র-বাস, তবু মেলেনি 'আবাসের' বাড়ি
Srijato on Pushpa: কেবল গান লেখা নয়, 'পুষ্পা' বাংলায় মুক্তি পাওয়ার পিছনে অন্য অবদানও রয়েছে শ্রীজাতর!
কেবল গান লেখা নয়, 'পুষ্পা' বাংলায় মুক্তি পাওয়ার পিছনে অন্য অবদানও রয়েছে শ্রীজাতর!
Saugata Roy : 'পুলিশ কাউকে ধরতে পারে না?', ফিরহাদের ওপর এবার সৌগতর চাঁচাছোলা আক্রমণ পুলিশকে
'পুলিশ কাউকে ধরতে পারে না?', ফিরহাদের ওপর এবার সৌগতর চাঁচাছোলা আক্রমণ পুলিশকে
Bangladesh : '১৫ বছরের সব কুকর্মের বিচার হবে', হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচার করার প্রতিশ্রুতি ইউনূসের
'১৫ বছরের সব কুকর্মের বিচার হবে', হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচার করার প্রতিশ্রুতি ইউনূসের
Suryakumar Yadav: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পরই কেরিয়ার নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত সূর্যকুমারের
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পরই কেরিয়ার নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত সূর্যকুমারের
Embed widget