AR Rahman: 'কারার ওই লৌহ কপাট'- আমূল বদলে গিয়েছে গানের সুর-ছন্দ, তীব্র সমালোচনার শিকার এ আর রহমান
kazi Nazrul Islam Song: 'কারার ওই লৌহ কপাট' গানে এ আর রহমানের ভার্সান শোয়ার পরে ক্ষুব্ধ বিরক্ত বর্ষীয়ান বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। তাঁর কথায় বাঙ্গালির আবেগে আঘাত হেনেছে গোটা বিষয়টি।
AR Rahman: 'কারার ওই লৌহ কপাট'- এই নজরুল গীতি বাঙালির কাছে অত্যন্ত পরিচিত, জনপ্রিয় একটি গান। কাজী নজরুল ইসলামের এই গান শুনে রক্ত গরম হয় না এমন বাঙালির সংখ্যা নেহাতই হাতেগোনা। সম্প্রতি এই গানেরই রিমেক করেছেন এ আর রহমান। 'পিপা' ছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে সেই গান। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। যে রহমানকে এতদিন বেশিরভাগ বাঙালি সুরের জাদুকর ভাবতেন, তাঁরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় সঙ্গীত পরিচালকের নিন্দা শুরু করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গানের পুরো সুরই আমূল বদলে দিয়েছেন এ আর রহমান। আর তাতেই ক্ষেপে গিয়েছেন সকলে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে কাজী নজরুল ইসলামের পৌত্র অনির্বাণ কাজী বলেছেন, "আমার মা ছবিতে গানটি ব্যবহারের জন্য সম্মতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সুর বদলের সম্মতি দেননি। যেভাবে গানের সুর এবং ছন্দ বদল করা হয়েছে তা ভয়ঙ্কর।"
বাংলাদেশের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম 'বিদ্রোহী কবি' হিসেবে পরিচিত। ওপার বাংলার জাতীয় কবি হলেও পশ্চিমবঙ্গেও তিনি সমানভাবে জনপ্রিয়। তাঁর এই গানের কথা, সুর সবই এক লহমায় আপনাকে দিতে পারে এক উজ্জিবনী শক্তি। আর সেই গান নিয়েই এ আর রহমানের এমন আচরণকে আদতে 'ছেলেখেলা' কিংবা 'বালখিল্য' হিসেবেই দেখছেন বেশিরভাগ বাঙালি। কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি অনিন্দিতা কাজীও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে তিনি বলেছেন, "ওঁর পরিবারের সদস্য হয়ে এবং ওঁর সৃষ্টির গুণমুগ্ধ হয়ে এই বিকৃতি মেনে নেওয়া যায় না। আমরা চাই অবিলম্বে ওই গান সিনেমা এবং পাবলিক ডোমেন থেকে সরানো হোক।"
'কারার ওই লৌহ কপাট' গানে এ আর রহমানের ভার্সান শোয়ার পরে ক্ষুব্ধ বিরক্ত বর্ষীয়ান বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। তাঁর কথায় বাঙ্গালির আবেগে আঘাত হেনেছে গোটা বিষয়টি। তিনি বলেছেন, "আমি অবাক, এ আর রহমানের মতো একজন শিল্পী কীভাবে এমনটা করতে পারেন। নজরুল ইসলাম ইসলামের গান নিয়ে সামান্য কাঁটাছেঁড়াও বরদাস্ত করা হবে না। যে বাঙালি গায়করা এই রেন্ডেশনের অংশ হয়েছেন তাঁদের জন্য এটা লজ্জার। আমি গভীরভাবে ক্ষুব্ধ'।
'কারার ওই লৌহ কপাট' গানের কথা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২২ সালে 'বাংলার কথা' ম্যাগাজিনে। এর পাশাপাশি বিদ্রোহী কবির কবিতার বই 'ভাঙার গান'- এও উল্লেখ ছিল এই গানের। এরপর ১৯৪৯ সালে প্রথম গানটি রেকর্ড করেছিল এক বিখ্যাত সংস্থা। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে ফের একবার গানটি রেকর্ড করেছিল আর এক জনপ্রিয় কোম্পানি। এই গানের যে রেন্ডেশন রহমান নির্মাণ করেছেন তা নিয়ে শোরগোল পড়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত সঙ্গীত পরিচালক নিজে কোনও কথা বলেননি।