Bangladesh News: 'হ্যাঁ, আমাদের সকলের প্রিয় বাড়িটি আর নেই', 'জলের গান' ব্যান্ডের পোস্টে সিলমোহর, গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়ি পুড়ে ছাই
Rahul Ananda House Attacked: একাধিক শিল্পীর বাড়িতে হামলা। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ফোকব্যান্ড 'জলের গান'-এর গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়িতে ঢুকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল সব বাদ্যযন্ত্র।
ঢাকা: উত্তাল বাংলাদেশ (Bangladesh Violence)। ক্রমেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। একের পর এক স্থানে চলছে হামলা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক তারকাও। কখনও প্রযোজক-অভিনেতাকে খুন, কখনও প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়কের বাড়িতে ভাঙচুর। সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর, হামলার হাত রক্ষা পাননি ফোকব্যান্ড 'জলের গান'-এর (Joler Gaan) গায়ক রাহুল আনন্দও (Rahul Ananda)। একের পর এক শিল্পীদের ওপর এই হামলা নজিরবিহীন।
বাংলাদেশে হামলা হল 'জলের গান'-এর গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়িতেও
উন্মত্ত জনতার হাতে খুন হতে হয়েছে বাংলাদেশের প্রযোজক সেলিম খান ও তাঁর অভিনেতা-পুত্র শান্ত খানকে। এদিকে, বাংলাদেশের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তজার বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল। ফোকব্যান্ড 'জলের গান'-এর গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়িতে ঢুকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল সব বাদ্যযন্ত্র।
উন্মত্ত জনতার রোষ গিয়ে আছড়ে পড়েছে বাংলাদেশের গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়িতেও। ফোকব্যান্ড 'জলের গান'-এর গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়িতে তাণ্ডব চালানো হয়। গতকাল থেকেই মিলছিল এমন খবর। সোশ্যাল মিডিয়ায় সঙ্গীতশিল্পী অর্ণবের (Arnob) পোস্ট যেন তাতে একপ্রকার সিলমোহরই দিল। খবর, ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর সব বাদ্যযন্ত্র।
সোশাল মিডিয়ায় এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন গায়ক অর্ণব। সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, 'এটা অত্যন্ত বড় ক্ষতি! মেনে নিতেই পারছি না! একেবারে ভুল হচ্ছে। আমি সত্যিই দুঃখিত। রাহুল তোমার সঙ্গে আছি। তারা ওঁর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে... ওঁর বাদ্যযন্ত্রের বিশাল সংগ্রহও তার সঙ্গে পুড়ে ছাই। এখন আমি ভাবছি, "খাল কেটে কোন কুমির আসবে"!'
আজ 'জলের গান' ব্যান্ডের অফিসিয়াল হ্যান্ডল থেকে একটি ভিডিওর সঙ্গে দীর্ঘ পোস্ট করা হয়েছে। রাহুল আনন্দের পুড়ে যাওয়া বাড়ির কথা মনে করে কী লেখা হয়েছে তাতে? '“স্বপ্নে তুমি দাগ দিও না। সরলরেখার স্বপ্নে কারো বাঁক দিওনা! বাঁক দিওনা!" জলের গানের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের এই বাড়িটি শুধু রাহুল আনন্দের বসত বাড়ি ছিল না; ছিল পুরো দলটির স্বপ্নধাম, আনন্দপুর। যেখানে তৈরি হয়েছে কত গান, কত সুর, আর দাদার ভাবনা প্রসূত শত শত বাদ্যযন্ত্র। শুধু তাই নয়। জলের গানের অফিশিয়াল স্টুডিও হিসেবেও ব্যবহৃত হত বাড়িটি। দলের সকলের দলগত সংগীত চর্চা থেকে শুরু করে, সকল স্টুডিও ওয়ার্ক – রেকর্ডিং, মিক্সিং, এডিটিং এখানেই হতো। যারা নিয়মিত এই বাড়িতে যাতায়াত করতেন, তারা জানেন যে রাহুল আনন্দ ও উর্মিলা শুক্লার বাড়িটির সাদা গেটটি সবসময় খোলাই থাকত। তাতে তালা দেওয়া হত না। যে কেউ, যে কোনও দরকারে যেন দাদার কাছে পৌঁছতে পারে সেই ভাবনায়। আর যারাই দিনের যে কোনও প্রান্তে এই বাড়িতে এসেছেন, সকলেই একটি চিত্রের সঙ্গে খুব পরিচিত, তা হল- রাহুল আনন্দ মাটিতে বসে একটি সিরিশ কাগজ হাতে নিয়ে তাঁর নতুন বাদ্যযন্ত্রের কাঠ ঘষছেন। জলের গানের বাদ্যযন্ত্র। রাহুল আনন্দের বিরাট ভাবনা ও স্বপ্নের দিকে ধাবমান এক নিরন্তর প্রয়াস। আমাদের দেশীয় কাঠে তৈরি, আমাদের নিজেদের বাদ্যযন্ত্র। শুধুই কি আমাদের? এই দলের? জলের গানের? না! এই প্রয়াস সকল নবীন মিউজিশিয়ানদের জন্য, যারা বিশ্বাস করবে - আমরাও আমাদের বাপ দাদার মতো নিজেদের বাদ্যযন্ত্র নিজেরাই তৈরি করে নিতে পারি। এই প্রয়াস সেই স্বকীয়তার; যার বলে এই দেশের মানুষ গর্বের সঙ্গে বলতে পারে, এই আমাদের নিজেদের বাদ্যযন্ত্রে বেজে ওঠা অনন্য শব্দতরঙ্গ যা কিনা পুরো পৃথিবীর বুকে কেবল এই বাংলাদেশের মাটিতেই ঝনঝন করে বাজে, সুর তোলে, স্বপ্ন দেখায়। যেই স্বপ্নের ঝিলিক সুদূর ফ্রান্স থেকে আরেকজন মিউজিশিয়ানকে আমাদের দেশে টেনে আনে। পুরো পৃথিবীর লক্ষ কোটি মানুষের চোখের আলো পড়ে আমাদের এই দেশে। ধানমন্ডি ৩২ নম্বর রোডের এই বাড়িটিতে। তবে কি এই ঠিকানায় আবাস হওয়াটাই কিছু মানুষের এত ক্ষোভের কারণ? এত রাগের বহিঃপ্রকাশ? যারা ইতিমধ্যে সেখানে গিয়েছেন কিংবা ফেসবুকে পোস্ট দেখেছেন তারা সকলেই খবরটি জানেন। হ্যাঁ! - রাহুল আনন্দ ও উর্মিলা শুক্লার, এবং আমাদের সকলের প্রিয় জলের গানের এই বাড়িটি আর নেই। সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে সৃষ্টিকর্তার কৃপায় এবং আশীর্বাদে বাড়ির সকল সদস্য নিজের প্রাণ হাতে নিয়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন এবং এখন নিরাপদে আছেন। কিন্তু, রাহুল দা এবং আমাদের দলের সকল বাদ্যযন্ত্র ,গানের নথিপত্র এবং অফিসিয়াল ডকুমেন্টস ছাড়াও, দাদার পরিবারের খাট-পালং, আলনা আর যাবতীয় সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে! সব! সকলের জন্য নিরন্তর ভেবে যাওয়া মানুষটিকে পরিবারসহ এক কাপড়ে তাঁর নিজ ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এর প্রভাব হয়তো আজীবন লালিত থাকবে তাঁর সন্তানের মনে; যার বয়স কিনা মাত্র ১৩ বছর – ভাবতেই কষ্ট হয়। এতদিন ধরে তিলতিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন সংসারের সবকিছু দাউদাউ করে জ্বলেছে চোখের সামনে। কিছু মানুষের ক্রোধ এবং প্রতিহিংসার আগুনে! এই বাদ্যযন্ত্র, গান বা সাজানো সংসার হয়তো আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে আবার গড়ে নিতে পারবো। কিন্তু, এই ক্রোধ আর প্রতিহিংসার আগুনকে নেভাব কীভাবে? কেন আমরা ভালবাসা আর প্রেম দিয়ে সবকিছু জয় করে নিতে পারি না? যেই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখি, সেই স্বাধীনতার রক্ষায় যদি একইভাবে এগিয়ে আসতে ব্যর্থ হই, তাহলে চরম নিরাশা, অপমান ও লজ্জায় নিজেদের গানই গেয়ে উঠি এক ভগ্ন হৃদয়ে- "কোন্ ছোবলে স্বপ্ন আমার হলো সাদা কালো? আমার বসত অন্ধকারে; তোরা থাকিস ভালো!" সকল প্রাণ ভাল থাকুক। নতুন আগামীর স্বপ্নকে আমরাও অভিবাদন জানাই একইভাবে। কিন্তু, নিজের উল্লাসের চিৎকার এবং সজোর হাততালিতে কারও স্বপ্ন ভেঙে না দেই! এই গানটি আমাদের এই ঘরে রেকর্ড করা শেষ গান। ভিডিওতে যা দেখছেন, তার কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। উত্তাল সময়ের সঙ্গে আমরাও একাত্ম ছিলাম গানে গানে। এই শেষ কাজটিই তবে সকলের জন্য আনন্দ উপহার। জয়তু, জলের গান।'
আরও পড়ুন: Bryan Adams: সঙ্গীতপ্রেমীদের জন্য সুখবর! কলকাতায় প্রথমবার শো করবেন ব্রায়ান অ্যাডামস, কবে?
বাংলাদেশের এই ভাইরাল ভিডিও কাঁপিয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে! রাস্তার ওপর সেতু থেকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে দেহ! অকল্পনীয় সেই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠছে গোটা বিশ্ব। নৃশংসতায় কার্যত তালিবানকেও হার মানাচ্ছে বাংলাদেশের এই দুষ্কৃতীরা! সোমবার রাতে তাড়া করে খুন করা হয়েছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রযোজক সেলিম খান ও তাঁর অভিনেতা-পুত্র শান্ত খানকে। সোমবার চাঁদপুরে পিটিয়ে খুন করা হয় দুজনকে। এখানেই শেষ নয়, বাংলাদেশের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তজার বাড়িতেও সোমবার চলে হামলা। মাশরাফি বিন মোর্তজা শুধুমাত্র বাংলাদেশের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়কই নন, জাতীয় সংসদের হুইপ ও নড়াইল-২ এর আওয়ামি লিগের সাংসদও। তাঁর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি থামবে কবে, শেষ কোথায়? উত্তরের অপেক্ষায় সকলেই।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।