Kharaj Mukherjee Exclusive: প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনে একজন নারী থাকে, এই কথাটা আমি বিশ্বাস করি : খরাজ
পরিবারের চাপে বন্ধ হয়ে যায় গানের ক্লাসে যাওয়া। সেই ছেলেই যে পরবর্তীকালে রূপোলি পর্দায় চূড়ান্ত সাফল্য পেয়েছে, দেখে যেতে পারেননি মা। সেই আফশোস এখনও রয়েছে ছেলে খরাজ মুখোপাধ্যায়ের (Kharaj Mukherjee)।
কলকাতা: বাবা বেশ কড়া স্বভাবের, পড়াশোনার ওপর জোর দিতেন। কিন্তু মা চাইতেন ছেলে পড়াশোনার বাইরে পরিচিত হোক সংস্কতির সঙ্গেও। তাই গানের স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন ছেলেকে। কিন্তু ছেলেকে গান শেখানোর সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। পরিবারের চাপে বন্ধ হয়ে যায় গানের ক্লাসে যাওয়া। সেই ছেলেই যে পরবর্তীকালে রূপোলি পর্দায় চূড়ান্ত সাফল্য পেয়েছে, দেখে যেতে পারেননি মা। সেই আফশোস এখনও রয়েছে ছেলে খরাজ মুখোপাধ্যায়ের (Kharaj Mukherjee)। নারীদিবসের আগে তাঁর জীবনের সেরা নারীদের গল্প বললেন পরিচালক অভিনেতা।
এক নয়, তাঁর জীবনে দুই নারীর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। একজন মা, অপরজন স্ত্রী। খরাজ বলছেন, 'মায়ের চেয়ে বড় শিক্ষক আর কেউ হয় না। মা শাসন করতেন ঠিকই কিন্তু ভীষণ শান্ত আর মিষ্টি স্বভাবের মানুষ। কখনও কাউকে মায়ের নামে খারাপ কথা বলতে শুনিনি। মা ভীষণ শিল্পীমনস্ক মানুষ। আমার জীবনের সাফল্যটা উনি দেখে যেতে পারলেন না। এখন যদি মা বেঁচে থাকতেন, আমি ওনার পা মাটিতে পড়তে দিতাম না। বাবা পড়াশোনা নিয়ে খুব কড়া ছিলেন। মা চেয়েছিলেন আমরা গান শিখি। সেটা সম্ভব হয়নি, কিন্তু মা আমাদের তিন ভাইয়ের মধ্যে সংস্কৃতির সেই বীজটা বপন করে দিয়ে গেলেন।'
আরও পড়ুন: জগন্নাথদেবের রান্নাঘর দেখেই 'ইকমিক কুকার' তৈরির পরিকল্পনা, গল্প শোনাচ্ছেন রঞ্জিত মল্লিক
মাকে অল্পবয়সেই হারান খরাজ। অভিনেতা বলছেন, 'মায়ের পর আমার জীবনের কমরেড, আমার সঙ্গী হলেন আমার স্ত্রী। তিনি কখনও আমার মা, কখনও বোন, কখনও বন্ধু আবার কখনও প্রেমিকা। আমি বিশ্বাস করি, প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনে একজন করে সফল নারী থাকেন। আমার ক্ষেত্রে সেটি আমার স্ত্রী। এখনও পর্যন্ত আমি যা রোজগার করি, সব টাকাই আমি নিয়ে এসে আমার স্ত্রীর হাতে তুলে দিই। ও সমস্ত গুছিয়ে রাখে। এখন মনে হয়, আমার স্ত্রী আমায় ছেলে চলে গেলে আমি অথৈ জলে পড়ব। সে কথা আমি ওকে বলি ও। ভরসা দিয়ে উত্তর দেয়, তোমার জন্য সব ব্য়বস্থা করা আছে।'
কোনও বিশেষ ঘটনা মনে পড়ে? একটু ভেবে খরাজ বললেন, 'যখন চাকরি করতাম, আমার স্ত্রী রোজ আমার হাতে ১০ টাকা করে দিতেন। টিফিনের জন্য। একদিন হঠাৎ আমায় বলল, 'তুমি অফিস যেও না।' কারণ বুঝলাম না, স্ত্রীর জেদেই থেকে গেলাম। পরের দিন অফিস যাব, যথারীতি আমার হাতে ১০ টাকা দিলেন স্ত্রী। বললেন, 'গতকাল আমার কাছে টাকা ছিল না, তুমি অফিস গেলে কী দিতাম হাতে! আজ শেষদিন, তুমি মাইনে আনবে। তাই শেষ দশ টাকাটা দিয়ে দিলাম।' এভাবেই সবদিক সামলেছে ও।'