Ranjit Mallick Exclusive: জগন্নাথদেবের রান্নাঘর দেখেই 'ইকমিক কুকার' তৈরির পরিকল্পনা, গল্প শোনাচ্ছেন রঞ্জিত মল্লিক
হাঁড়ির ওপর হাঁড়ি বসিয়ে রান্না। পুরীর মন্দিরের রান্নাঘরে গিয়েছেন আর এই দৃশ্য দেখেননি এমন মানুষ নেই। এই আয়োজনই নাকি প্রথম তৈরি করেছিল 'ইকমিক কুকার'-এর ভাবনা।
কলকাতা: হাঁড়ির ওপর হাঁড়ি বসিয়ে রান্না। পুরীর মন্দিরের রান্নাঘরে গিয়েছেন আর এই দৃশ্য দেখেননি এমন মানুষ নেই। এই আয়োজনই নাকি প্রথম তৈরি করেছিল 'ইকমিক কুকার'-এর ভাবনা। বর্তমানে এই কুকারের ব্যবহার তেমন প্রচলিত না থাকলেও, এক সময় বাঙালির ঘরে ঘরে ব্যবহার হত এই কুকার। কিন্তু এই কুকার আবিষ্কারের ইতিহাসের সঙ্গে যোগ রয়েছে বাংলার রূপোলি পর্দার এক তারকার! তিনি রঞ্জিত মল্লিক (Ranjit Mallick)। আবিষ্কার করা প্রথম ইকমিক কুকারটি (Icmic Cooker) রয়েছে তাঁরই বাড়িতে! ঠিক কী যোগাযোগ রুপোলি পর্দা আর রান্নাঘরের? উত্তর খুঁজতে এবিপি লাইভ পৌঁছল মল্লিকবাড়িতে।
রঞ্জিত মল্লিকের দাদু ডাঃ ইন্দুমাধব মল্লিক প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন এই ইকমিক কুকার। শোনা যায়, পুরীর রান্নাঘরের রান্না দেখেই এই কুকার বানানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ইকমিক কুকার বানানোর পিছনে রয়েছে একটা গল্পও। রঞ্জিত মল্লিক বলছেন, 'ইকমিক কুকার নামটার মধ্যেও একটা শিক্ষা রয়েছে। ইক কথাটা নেওয়া হয়েছে হাইজেনিক(Hygienic) কথাটি থেকে। আর মিক কথাটা নেওয়া হয়েছে ইকোনমিক (Economic) থেকে। অর্থাৎ হাইজেনিক ইকোনমিক কুকার (Hygienic Economic Cooker) সেটাকেই ছোট করে ইকমিক কুকার (Icmic Cooker) বলা হয়। এই কুকার আবিষ্কার করেছিলেন আমার ঠাকুর্দা ডাঃ ইন্দুমাধব মল্লিক। ১৯১০ সালে তিনি এটি আবিষ্কার করেন। এই কুকার আবিষ্কারেরও একটা গল্প রয়েছে। দাদু পুরীতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে জগন্নাথ দেবের মন্দিরে হাঁড়ির ওপর হাঁড়ি রেখে রান্না হয়। সেটা দেখেই প্রথম দাদুর মাথায় আসে কুকার বানানোর কথা। ভাবলেন, এটাকেই যদি আধুনিকীকরণ করা যায়। তিনি ফিরে এসে বানালেন এই ইকমিক কুকার।'
আরও পড়ুন: বলিউডের বাজেট আর লোকবল বেশি হলেও বাংলায় প্রতিভা অনেক বেশি
ঠিক কীভাবে কাজ করে এই কুকার? রঞ্জিত মল্লিক বলছেন, 'এই কুকারের ভিতর একটা লিফ্টার রয়েছে। সেখানে তিন থেকে চারটি বাটি রয়েছে। একটায় মাংস, একটায় ডাল, একটায় ভাত দেওয়া হবে। এই কুকারের একটা আউটার সিলিন্ডার আছে, আরেকটা ইনার সিলিন্ডার। ইনার সিলিন্ডারের ভিতরে এক কিম্বা ২ ইঞ্চি মতো জল দেওয়া হয়। যখন ওই জলটা ফুটবে, সেই বাষ্পে রান্নাটা হয়ে যাবে। এক ঘন্টার মধ্যে সমস্ত পদ তৈরি হয়ে যাবে।'
এখনও ব্যবহার হয় এই কুকার? হাসতে হাসতে রঞ্জিত মল্লিক বললেন, 'এখনও ছুটির দিনে আমরা এই কুকারে রান্না করি। আগে কয়লার কেকে রান্না হত। এখন গ্যাস বা ইন্ডাকশান কুকার সবেতেই ব্যবহার করা যায় এই ইকমিক কুকার।'