Raj Kapoor's birth anniversary: বলিউডের 'শোম্যান' রাজ কপূরের জন্মদিনে কালজয়ী ছবির মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ
Raj Kapoor Birthday: কিংবদন্তি এই অভিনেতা জন্মেছিলেন পেশোয়ারে। বাবা ছিলেন অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কপূর। প্রায় দুই দশক ব্যাপী কর্মজীবনে তিনি অজস্র পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছে। তিনবার জাতীয় পুরস্কার পান।

নয়াদিল্লি: চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক - ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে ও বিনোদনের জগতে এক উজ্জ্বল নাম রাজ কপূর (Raj Kapoor), 'দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান'। আজ তাঁর ৯৭তম জন্মদিন (Birthday)।
কিংবদন্তি এই অভিনেতা জন্মেছিলেন পেশোয়ারে। বাবা ছিলেন অভিনেতা পৃথ্বীরাজ কপূর। প্রায় দুই দশক ব্যাপী কর্মজীবনে তিনি অজস্র পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছে। তিনবার জাতীয় পুরস্কার ও ১১টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি।
১৯৩৫ সালে মাত্র ১০ বছর বয়সে তিনি একটি হিন্দি ছবি 'ইনকিলাব'-এ প্রথম অভিনয় করেন। এরপর ১৯৪৭ সালে তাঁর প্রথম বড় ব্রেক আসে যখন তিনি 'নীল কমল' ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান। তাঁর বিপরীতে প্রধান মহিলা চরিত্রে ছিলেন মধুবালা।
একাধিক পুরস্কার প্রাপ্ত রাজ কপূর, ১৯৭১ সালে শিল্পে তাঁর অবদানের জন্য 'পদ্মভূষণ' সম্মানে সম্মানিত হন। ১৯৮৭ সালে প্রয়াত অভিনেতাকে 'দাদা সাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত করা হয়। এছাড়া ১৯৫১ সালের 'আওয়ারা' ও ১৯৫৪ সালের 'বুট পলিশ' ছবির জন্য কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে 'পালমে ডিওর গ্র্য়ান্ড প্রাইজ'ও পান তিনি।
তাঁর কিছু অনবদ্য ছবির মাধ্যমেই আজ তাঁকে স্মরণ করা যাক।
১. 'মেরা নাম জোকার' (Mera Naam Joker): ১৯৭০ সালের এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করা ছাড়াও তিনি পরিচালকের ভূমিকাও পালন করেছিলেন। ভারতীয় ছবির ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘ ছবি এটি। 'মেরা নাম জোকার' দ্বিতীয় দীর্ঘতম হিন্দি ছবি যেখানে দুটো বিরতি আছে। দীর্ঘতম হিন্দি ছবির তালিকায় প্রথম হচ্ছে ১৯৬৪ সালে তৈরি 'সঙ্গম'। রাজ কপূরের এই ছবিটি তৈরি হয়েছেল এক 'সং' অর্থাৎ জোকারের জীবনকে কেন্দ্র করে। যে নিজের দুঃখকে ব্যবহার করে দর্শকদের হাসায়, সেটাই তার পেশা। তিন মহিলা মেরি, মেরিনা ও মীনা, এঁদেরকে খেলনা সং পাঠিয়ে বিখ্যাত জোকার রাজুর শেষ পারফর্ম্যান্সে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই তিন মহিলা চরিত্রের গল্প ও তাঁদের সঙ্গে রাজুর সম্পর্কের গল্প ফ্ল্যাশব্যাকের মাধ্যমে শোনানো হয় গোটা পারফর্ম্যান্সে। এই ছবির হাত ধরেই একাধিক কালজয়ী গান পায় ভারতীয় সিনেমা জগৎ। যেমন, 'জিনা ইয়াহা মরনা ইয়াহা', 'এ ভাই জরা দেখকে চলো' ইত্যাদি। এই ছবির হাত ধরেই বলিউডে পা রাখেন ঋষি কপূর।
২. 'সঙ্গম' (Sangam): ১৯৬৪ সালে তৈরি এই রোম্যান্টিক ঘরানার ছবির পরিচালক, প্রযোজক ও সম্পাদক ছিলেন রাজ কপূর। কাজ হয় 'আর কে স্টুডিও'-এ। বিশাল স্টারকাস্টের মধ্যে ছবির মুখ্য চরিত্রে ছিলেন রাজ কপূর, বৈজয়ন্তীমালা ও রাজেন্দ্র কুমার। এছাড়া পার্শ্ব চরিত্রে ছিলেন, ইফতেকার, রাজ মেহরা, নানা পালসিকর, ললিতা পাওয়ার, অচলা সচদেব ও হরি শিবদাসানি। গল্পটি গড়ে ওঠে সুন্দর (রাজ কপূর)কে ঘিরে যাঁকে বাতিল করে রাধা (বৈজয়ন্তীমালা)। এরপর রাধার কাছে নিজেকে প্রমাণ করতে সে বেরিয়ে পড়ে এবং একজন দক্ষ পাইলট তৈরি হয়। এরপর সে রাধাকে বিয়ে করতে সক্ষম হয়, কিন্তু জানতে পারে না যে রাধা ওরই বন্ধুকে রাজেন্দ্র কুমারকে বিয়ে করতে চায়। এই সিনেমা থেকেও একাধিক দুর্দান্ত গান পাওয়া যায়, 'হর দিল যো পেয়ার করেগা', 'দোস্ত দোস্ত না রহা' প্রভৃতি।
৩. 'শ্রী ৪২০' (Shree 420): ১৯৫৫ সালে মুক্তি পাওয়া কমেডি ক্রাইম ঘরানার ছবি। ওই বছরের এটিই সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করা ছবি। মুকেশের কণ্ঠে 'মেরা জুতা হ্যায় জাপানি' গানটি এত বিখ্যাত হয় যে সেই সময় সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত ভারতের দেশাত্মবোধক গানের স্থান পায়। এই ছবির অপর জনপ্রিয় গান 'পেয়ার হুয়া ইকরার হুয়া'। এই ছবির পরিচালনা ও প্রযোজনা করেছিলেন রাজ কপূর। ছবিতে নার্গিস, নাদিরা ও রাজ কপূর অভিনয় করেছিলেন। গরিব কিন্তু শিক্ষিত ও অনাথ এক ছেলে মুম্বই পৌঁছয় তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে। রাজ কপূরের এই চরিত্রটি খানিকটা চার্লি চ্যাপলিনের 'লিটিল ট্র্যাম্প' থেকে অনুপ্রাণিত ছিল।
৪. 'আওয়ারা' (Awaara): ১৯৫১ সালের ক্রাইম-রোম্যান্টিক ড্রামা। প্রযোজনা ও পরিচালনায় রাজ কপূর স্বয়ং। এই ছবিতে রাজ কপূরের সঙ্গে তাঁর বাবা পৃথ্বীরাজ কপূরও ছিলেন। এছাড়া নার্গিস, লীলা চিৎনিস ও কে.এন. সিংহও ছিলেন। কপূর পরিবারের একাধিক সদস্য ছবিতে বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তাঁর ছোট ভাই শশী কপূর এই ছবিতে রাজ কপূরের ছোটবেলার চরিত্রে ছিলেন। এছাড়া পৃথ্বীরাজ কপূরের বাবা দেওয়ান বশেশ্বরনাথ কপূর এই ছবিতে ছোট্ট একটি চরিত্রে ক্যামিও করেন। তাঁর জীবনের এটিই একমাত্র ছবি। রাজ নামের এক গরিব ছেলে মায়ের মুখে অন্ন তুলে দিতে দুষ্কৃতীদের দলে যোগ দেয়। কিন্তু রীতার প্রেমে পড়ে নিজেকে শুধরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় সে।
৫. 'তিসরি কসম' (Teesri Kasam): বাসু ভট্টাচার্য পরিচালিত ও গীতিকার শৈলেন্দ্র প্রযোজিত কমেডি-রোম্যান্টিক ঘরানার ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬৬ সালে। হিন্দি ঔপন্যাসিক ফণিশ্বরনাথ রেণুর লেখা ছোট গল্প 'মারে গয়ে গুলফম' থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয় ছবিটি। মুখ্য চরিত্রে রাজ কপূর ও ওয়াহিদা রহমান ছিলেন। ছবিতে গরুর গাড়ির চালক হীরামন প্রেমে পড়ে থিয়েটার নৃত্যশিল্পী হীরাবাইয়ের। ছবির শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে এটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
