এক্সপ্লোর
Advertisement
লকডাউনের একঘেয়েমি কাটাতে বাড়িতেই সিনেমাহল বানিয়ে ফেলেছেন ঋতাভরী
ছেলেরা কেন বাড়ির কাজ শিখবে না, প্রশ্ন তুলছেন অভিনেত্রী। সঙ্গে তাঁর আর্জি, বাড়ির কাজের লোকের মাইনে কাটবেন না
কলকাতা: লকডাউনের জেরে থমকে জনজীবন। কাজকর্মের পাশাপাশি বিনোদনেও ছেদ ফেলেছে করোনা-কাঁটা। কারণ, বন্ধ রেস্তোরাঁ, শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স, সিনেমাহল। তাই স্বেচ্ছায় গৃহবন্দি থাকার একঘেয়েমি কাটাতে বাড়িতেই মিনি সিনেমাহল বানিয়ে ফেলেছেন তিনি!
ঘরের একটা দেওয়াল খালি করে সেখানেই লাগিয়ে ফেলেছেন স্পিকার। প্রোজেক্টরের সাহায্যে কখনও সেখানে শুরু হয়ে যাচ্ছে ‘আ স্টার ইজ বর্ন’। কখনও চলছে ‘দ্য আদার্স’ অথবা ‘আইডেন্টিটি’। আর দর্শকাসনে বসে কখনও আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলছেন, কখনও ভূতের ভয়ে সিঁটিয়ে থাকছেন তিনি।
তিনি, অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী।
বাড়িতেই মিনি সিনেমাহল
মঙ্গলবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঋতাভরী জানালেন, লকডাউনের প্রায় দু সপ্তাহ আগে থেকেই ঘরবন্দি তিনি। বাতিল হয়েছে প্যারিস-ব্রাসেলস সফর। থেমে রয়েছে ছবি, মিউজিক ভিডিও, বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং। তবে তাতে খুব একটা বিব্রত নন তিনি। বাড়িতেই অবসর সময় কাটানোর নিত্যনতুন উপায় বার করে ফেলছেন। বলছিলেন, ‘আমার এক বোন ও পার্সোনাল সেক্রেটারির সঙ্গে বসে ঘরের মিনি সিনেমাহলেই রোজ সিনেমা দেখছি। প্রতিদিন অপেক্ষা করছি কখন রাত হবে আর আমরা সিনেমা দেখতে বসব।’ সেই সঙ্গে অনেক বই পড়ছেন ঋতাভরী। আপাতত নোরা এফ্রনের ‘ক্রেজি স্যালার্ড’–এ মজে তিনি। হাতে রয়েছে বইয়ের লম্বা তালিকাও। লকডাউন কাটার আগে সব পড়ে শেষ করতে চান।
বইতে মগ্ন ঋতাভরী
বাগানের শখ তাঁর। ঘরের লাগোয়া ব্যালকনিতে রয়েছে বনসাই থেকে শুরু করে হরেক রঙিন ফুলের গাছ। ‘রোজই আমার কোনও না কোনও গাছে ফুল ফোটে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই সেই ফুল দেখতে দৌড়ই’, ঋতাভরীর গলায় উচ্ছ্বাস। বাগান পরিচর্যা করার ফাঁকেই কখনও হাতে পেন্সিল তুলে নিচ্ছেন তিনি। ছবি আঁকা যে তাঁর আরেক হবি। ঋতাভরী আঁকছেন বিভিন্ন নারীমূর্তি।
ঋতাভরীর শখের বনসাই
অবসরের সঙ্গী যখন পেন্সিল
বাড়িতেই বাগান
লকডাউনের জেরে বাড়ির পরিচারিকাকে ছুটি দিয়েছেন। তাই মাঝে মধ্যেই হেঁশেল সামলাচ্ছেন ঋতাভরী। বলছিলেন, ‘বিদেশে গেলে আমার হাতের কম মশলাদার, ঘরোয়া বাঙালি রান্না খাবার জন্য বন্ধুরা মুখিয়ে থাকে। আমি এখান থেকে রান্নার মশলা নিয়ে যাই।’ বাড়ির অন্যান্য কাজ করারও অভ্যাস রয়েছে। তাই লকডাউনে তেমন অসুবিধায় পড়ছেন না। তবে অধিকাংশ ভারতীয় ছেলেদের রান্না আর ঘরের কাজ না জানা নিয়ে অভিযোগের সুর ঋতাভরীর গলায়। বলেই ফেললেন, ‘আমার ছেলে বন্ধুদের বলেছি, নারীবাদ নিয়ে সিনেমার সংলাপ না লিখে মাকে বাড়ির কাজে সাহায্য করতে! এই লকডাউনে ছেলেরা অন্তত বাসন মাজা আর ঘর মোছাটুকু শিখে ফেলুক!’
ঋতাভরীর হাতের জাদু
রান্নায় ব্যস্ত
অনেক সেলিব্রিটি লকডাউনে নতুন কিছু শিখছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করছেন। হৃতিক রোশন যেমন লকডাউনে শিখে ফেলেছেন পিয়ানো বাজানো। আপনি নতুন কী শিখলেন? ঋতাভরী বলছেন, ‘তিনটে অনলাইন ক্লাসে যোগ দিয়েছি। শিখছি চিত্রনাট্য লেখা, সিনেমা পরিচালনা ও ড্রাগরেস। অনলাইন ক্লাসের পর বন্ধুদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে পুরোদমে চলছে গ্রুপস্টাডি।’
সোশ্যাল মিডিয়ার নেশা রয়েছে ঋতাভরীর। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খুললেই দেখা যায় বন্ধুদের সঙ্গে কাটানো ভালো সময়ের স্মৃতির কোলাজ। তবে লকডাউনে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় দিতে নারাজ তিনি। বলছিলেন, ‘অন্য অনেক কাজ করছি। মনকে শান্ত করতে নিয়ম করে ধ্যান করছি। এছাড়া নিয়মিত জিম-যোগাসনও চালিয়ে যাচ্ছি।’
ব্রাসেলসের বান্ধবী। ঋতাভরী বললেন, 'সফর বাতিল হওয়ায় আপাতত ভার্চুয়াল কফি খেতে খেতেই স্মৃতিচারণা করছি'
লকডাউন শেষ হওয়ার পর কী করবেন, সেসব পরিকল্পনা করেছেন কিছু? ঋতাভরী বলছেন, ‘কফিশপে গিয়ে অথবা গায়ে রোদ লাগিয়ে চেয়ারের ওপর বসে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারব। রাস্তায় বেরবো। দেখবো মানুষ জমায়েত হচ্ছে আবার আগের মতোই। আর প্রচুর শপিং করব।’ করোনা সতর্কতায় বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ ঋতাভরীর ‘দ্য আইডিয়াল স্কুল ফর ডেফ’। বাচ্চাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না, খেলা হচ্ছে না বলে মন খারাপ তাঁর।
লকডাউনের জেরে দুঃস্থ মানুষদের অন্ন সংস্থান করাই প্রশ্নের মুখে। একই অবস্থা রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো সারমেয়দের। দোকানপাট বন্ধ, মানুষের ভিড় নেই। তাই তাদের খাবার জুটছে না। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছেন ঋতাভরী। বলছিলেন, ‘রাস্তার কুকুর-বেড়ালরা যাতে ঠিকমতো খাবার পায় সে জন্য সল্টলেকের একটি সংস্থায় অনুদান পাঠিয়েছি।’ যোগ করলেন, ‘আমার কর্মীদের বেতনও চালু রেখেছি।’ অভিনেত্রী জানালেন, টলিউড ও বলিউডের তারকারা সোশ্যাল মিডিয়ায় একসঙ্গে অনুদান সংগ্রহের কাজ করবেন। সেখানেও যুক্ত রয়েছেন তিনি।
লকডাউনের জেরে সমস্ত শ্যুটিং বন্ধ। টেলিভিশনে তাই পুরনো বাংলা সিরিয়াল নতুন করে সম্প্রচার করা হচ্ছে। যেমন সম্প্রতি শুরু হয়েছে ‘ওগো বধূ সুন্দরী’র সম্প্রচার। যে সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন ঋতাভরী। বলছিলেন, ‘নিজের পুরনো অভিনয় দেখা বেশ অন্যরকম অভিজ্ঞতা। ওগো বধূ সুন্দরী আমার ভীষণ প্রিয় একটা কাজ।’
লকডাউনের জেরে সকলেই কার্যত গৃহবন্দি। অনুরাগীদের উদ্দেশে কী বলবেন? ‘বিরক্তি কাটাতে ‘জোজোর্যাবিট’ দেখুন। মনকে শান্ত রাখতে ধ্যান করুন। এখন কিছুদিন কেবল বাড়ির রান্না। লকডাউনে বাড়িতেই শরীরচর্চা করুন। নিজের যত্ন নিন,’ বলছিলেন ঋতাভরী। সঙ্গে তাঁর আর্জি, ‘আপনাদের বাড়ির যাঁরা পরিচারিকা, বা অন্যান্য কাজ করেন যাঁরা, তাঁরা কাজে যোগ দিতে পারছেন না বলে তাঁদের মাইনেটা কেটে নেবেন না প্লিজ!’
বিনোদনের (Entertainment) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
আইপিএল
খবর
খবর
Advertisement