Kamla Bhasin on Azadi: প্রথম কোথায় আজাদির স্লোগান শুনেছিলেন কমলা ভাসিন?
কমলা ভাসিন কবে থেকে এই আজাদির স্লোগান দেওয়া শুরু করেন? যে স্লোগান ছাড়া আজ এ দেশের শুধু ছাত্র আন্দোলনই নয়, কোনও আন্দোলনই যেন সম্ভব নয়।
নয়াদিল্লি : ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুর তিনটেয় থেমে গিয়েছে তাঁর হৃদস্পন্দন। না, এই পৃথিবীতে আর বেঁচে নেই কমলা ভাসিন (Kamla Bhasin)। তাঁর হৃদস্পন্দন স্তব্ধ হল। জৈবিক নিয়মেই তাঁর কণ্ঠ থেকে বেরোবে না আর কোনও আওয়াজ। কিন্তু না। বোধহয় ভুল বলা হল। কমলা ভাসিন তো শুধুই এক সমাজসেবিকার নাম নয়। কমলা ভাসিন তো শুধুই কোনও লেখিকার নাম নয়। কমলা ভাসিন তো শুধুই একজন নারীদের অধিকার রক্ষা নিয়ে আন্দোলনের একজন কর্মী নয়। কমলা ভাসিন আজও মানুষের কাছে আজাদি-র এক রূপকার যেন। কমলা ভাসিন মানেই আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়েছে আজাদি স্লোগানে। মানুষ তাঁর কণ্ঠস্বরে ওই অমোঘ স্লোগানে গলা ভাসিয়ে দিয়েছে আপন খেয়ালে আজাদি পাওয়ার আশায়। সেই কমলা ভাসিন যেন পৃথিবীটা থেকেই আজ স্বাধীন হয়ে চলে গেলেন অন্য কোনও জগতে আজাদি (Azadi) খুঁজতে।
প্রশ্ন আসাটাই মনে স্বাভাবিক যে, কমলা ভাসিন কবে থেকে এই আজাদির স্লোগান দেওয়া শুরু করেন? যে স্লোগান ছাড়া আজ এ দেশের শুধু ছাত্র আন্দোলনই নয়, কোনও আন্দোলনই যেন সম্ভব নয়। ২০১৯ এ, একটি সাক্ষাৎকারে এমন প্রসঙ্গ উঠে আসলে কমলা ভাসিন বলেছিলেন, 'আমি প্রথমবার এই আজাদির স্লোগান শুনি গত শতাব্দীর আটের দশকে। তখনও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জিয়াউল হক। জিয়াউল হকের সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলকে দেখা যায়নি। প্রথমে মহিলা সমাজকর্মীরাই তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে পথে নামে।আমার মনে আছে, একটি মিটিয়ে আমি উপস্থিত ছিলাম। আর পাকিস্তানের ওই মহিলারা স্লোগান দিচ্ছিল, - অউরত কা নারা আজাদি/বাচ্চোকা নারা আজাদি/হাম লেকে রহেঙ্গে আজাদি/হ্যায় প্যারা নারা আজাদি। ব্যস। এই স্লোগান যেন আমার মনে গেঁথে গেল। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এ স্লোগান কখনও ভুলবো না।'
অবশ্য কমলা ভাসিন শুধুই তো সমাজের মেয়েদের নিয়ে কাজ করেননি। তাঁদের আজাদির কথাই বলেননি শুধু। বরং, রাষ্ট্রসংঘের চাকরি ছেড়ে দিয়ে গত শতাব্দীর সাতের দশক থেকে নিজের সংগঠন বানিয়ে লেগে পড়েন সমাজসেবায়। কৃষকের জন্যই হোক অথবা শ্রমিকের। নারীরই হোক অথবা শিশুর। আদিবাসীরই হোক অথবা দলিতের, কমলা ভাসিনের কণ্ঠ চিড়ে আকাশ বাতাস মুখরিত হয়েছে ওই আজাদি স্লোগানে। তাঁর সংগঠনের নাম সংগত। কমলা ভাসিনের দেখানো পথে আগামীদিনে সংগতও আজাদির জন্য লড়বে এটুকুই আশা।