Yoga and Health: শ্বাস প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ আনতে কীভাবে করবেন অনুশীলন?
কেন করবেন যোগব্যায়াম?
নয়াদিল্লি: যোগ ব্যায়ামকে আমরা অনেক সময় শরীরচর্চা বলে ভুল করে থাকি। কিন্তু মনে রাখা প্রয়োজন যোগ ব্যায়াম হল শ্বাস প্রশ্বাসকে সচল রাখার অন্যতম মাধ্যম। যার জন্যই আমাদের বেঁচে থাকা।
জীব বিদ্যা অনুযায়ী, আমরা অক্সিজেন গ্রহণ করি এবং কার্বন-ডাই- অক্সাইড ত্যাগ করি। শ্বাস প্রশ্বাস মস্তিষ্ক পরিচালনারও অন্যতম মাধ্যম। উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, ধীরে ধীরে প্রশ্বাস নিলে ঘুম পেতে শুরু করে। মানসিকভাবে শান্ত থাকলে হৃদ স্পন্দনও স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু কোনও কারণে উত্তেজিত হলে বা চিন্তিত থাকলে হৃদ স্পন্দনও বাড়তে থাকে। এতে অনেক সময় রক্তচাপও বেড়ে যায়। উত্তেজিত হলে স্বাভাবিক হৃদ স্পন্দন রাখার জন্য শরীরকে প্রস্তুত রাখতে হবে। শ্বাস প্রশ্বাস শুধুই অক্সিজেন গ্রহণ এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন নয়। এটি প্রকৃতপক্ষে জটিল অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া, যা জীবনকে সুন্দর করে তোলে।
যোগব্যায়াম ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম সর্বার প্রতিষ্ঠাতা সর্বেশ শশীর সহযোগিতায় ৫টি যোগব্যায়ামের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হল। যা শ্বাস প্রশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করবে এবং একইসঙ্গে শ্বাস পদ্ধতি সহজ করবে।
ভুজঙ্গাসন বা কোবরা পোজ়- এই পদ্ধতিতে বুকের অবস্থান এমন হবে যেন সাপের ফনার মতো দেখতে লাগে। যারা যোগব্যায়াম প্রথম করছেন তাঁদের জন্য উপকারী। শুধুমাত্র শ্বাসকষ্ট থেকেই মুক্তি দেয় তা নয়, পাশাপাশি মানসিক উদ্বেগ কমায়। সার্বিকভাবে খুশি রাখে মনকে।
অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন বা হাফ ফিশ পোজ়- শরীরে উপরের অংশের সঙ্গে নিচের অংশের অবস্থান এমন হবে যেন ঠিক মাছের মতো দেখতে লাগে। এটি স্বাভাবিকের চেয়ে গভীর শ্বাস নিতে সাহায্য় করে। ফুসফুসের পেশী আরও ভাল করে সঞ্চালন করে। এটি শরীরের রক্ত সঞ্চালন সচল রাখে। মানসিক উদ্বেগের সময় স্বস্তি দেয়।
শবাসন- তৃতীয় পোজ়টি অপেক্ষাকৃত কঠিন। সারা দিন, সপ্তাহ, এমনকী বছরভর আমরা আমাদের শরীরের সঙ্গে চিন্তাকে বয়ে নিয়ে বেড়াই। যা আমাদের শ্বাস প্রশ্বাসের ধরনের উপরও প্রভাব ফেলে। শবাসন মূলত একটি বিশ্রাম নেওয়ার পোজ়। নিজের মাথা থেকে বাইরের চিৎকার, উত্তেজনা, উদ্বেগ থেকে মুক্ত করার পদ্ধতি শবাসন।
আরও ভালভাবে শ্বাস নেওয়ার জন্য শেষ দুটি যোগাসন অবশ্যই প্রত্যেকের করা উচিত। শ্বাস প্রশ্বাসের পাশাপাশি আরও একাধিক সুবিধা পাওয়া যায় এই দুই যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে।
প্রাণায়াম- অনেকেই প্রাণায়ামকে গভীর প্রশ্বাস বলে ভুল করে থাকে। প্রাণায়াম অত্যন্ত ধীর একটি প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে ফুসফুসের প্রতিটি অংশে অক্সিজেন যায়। এভাবে শরীরেও শক্তি পাওয়া যায়।
অনুলোম-বিলোম- এটি আঙুল দিয়ে নাকের একটা অংশ চেপে ধরে অন্য অংশ নিয়ে প্রশ্বাস নিতে হয়। উল্টো পদ্ধতিও আবার অবলম্বন করতে হয়। বলা হয় এই শ্বাস প্রশ্বাসের পদ্ধতির মাধ্যমে শারীরিক এবং মানসিকভাবে উন্নতি হয়। যার মধ্যে মানসিক উদ্বেগ হ্রাস হয় এবং শ্বাস পদ্ধতি এবং রক্ত সঞ্চালনের উন্নতি হয়।
ভ্রামরি প্রাণায়াম- হিন্দি শব্দ ভ্রমর থেকে ভ্রামরি শব্দের উৎপত্তি। যার অর্থ মৌমাছি। এই পদ্ধতি মানসিকভাবে প্রশান্তি মেলে। এই যোগাসন মনের উপর দ্রুত শান্ত প্রভাব ফেলতে সহায়তা করে। উদ্বেগ বা হতাশা থেকে মনকে মুক্ত করতে এবং রাগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এই প্রাণায়াম করা প্রয়োজন।
কেন করবেন যোগব্যায়াম? প্রতিদিন নিয়ম করে যোগব্যায়াম করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। এমনকী করোনা আক্রান্ত হলেও যোগব্যায়াম করা যেতে পারে। আগামী ২১ জুন বিশ্ব যোগ ব্যায়াম দিবস। সারা মাস ধরেই যা পালন করা হয়ে থাকে। কারণ, আমাদের ভাল থাকার জন্য যোগ ব্যায়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য, শরীর এবং মানসিকভাবে নিজেকে ভাল রাখার জন্য যোগ ব্যায়ামের বিকল্প কিছু নেই।
তথ্যসূত্র- আইএএনএস লাইফ