Kharaj Mukherjee Interview: দোলের দিন স্নান করার ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলেন খরাজ
দোলের দিন। রং গুলতে হবে, কিন্তু জল ফুরিয়েছে। হাতে নীল রঙ নিয়েই ছুটলেন রান্নাঘরে। ভোগ রান্না করার জন্য আলাদা করে যে জল রাখা ছিল, হাত ডুবিয়ে দিলেন তাতেই! ব্যাস.. পুরো জল গাঢ় নীল। তারপর পুরোহিতের সেই প্রচণ্ড বকুনির কথা মনে পড়তেই হেসে ফেললেন খরাজ মুখোপাধ্যায়। রঙের উৎসব তাঁর কাছে কেবল স্মৃতি নয়, এখনও প্রত্যেক বছরই সপরিবারে দোল খেলায় মেতে ওঠেন অভিনেতা।
কলকাতা: দোলের দিন। রং গুলতে হবে, কিন্তু জল ফুরিয়েছে। হাতে নীল রঙ নিয়েই ছুটলেন রান্নাঘরে। ভোগ রান্না করার জন্য আলাদা করে যে জল রাখা ছিল, হাত ডুবিয়ে দিলেন তাতেই! ব্যাস.. পুরো জল গাঢ় নীল। তারপর পুরোহিতের সেই প্রচণ্ড বকুনির কথা মনে পড়তেই হেসে ফেললেন খরাজ মুখোপাধ্যায়। রঙের উৎসব তাঁর কাছে কেবল স্মৃতি নয়, এখনও প্রত্যেক বছরই সপরিবারে দোল খেলায় মেতে ওঠেন অভিনেতা।
ছোটবেলায় দোল খেলা হত কলকাতার বাড়িতেই। খরাজরা তিন ভাই, কাজেই সঙ্গীর অভাব হত না। এবিপি লাইভকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বললেন, 'ছোটবেলায় এমন করে রং মাখতাম, যাতে কেউ চিনতে না পারে। এত বেশি রং কিনতাম, প্রতিবার কিছুটা করে বেঁচে যেত। খুব পছন্দ ছিল জলবেলুন। চোয়াল ব্যথা হয়ে যেত বেলুন ফোলাতে ফোলাতে। তাতে জলরং ভরে সবার গায়ে ছুড়ে মারা হত। দুপুরের দিকে রাস্তা ফাঁকা হয়ে যেত। কিন্তু আমাদের রং খেলা শেষ হত না। তখন বাড়ির মধ্যেই ভাইরা একে অপরের গায়ে বেলুন ছুঁড়তাম। আর মা চিৎকার করতেন দেওয়ালে রঙ লেগে যাবে বলে।'
দোল পূর্ণিমার দিন বাড়িতে রাধা-কৃষ্ণের পূজো হত বাড়িতে। নিজেই পুজো করতেন খরাজের বাবা। সেইদিনকার বিশেষ আকর্ষণ ছিল খাওয়া-দাওয়া। খরাজ বলছেন, দোলের দিন বাড়িতে অনেকরকম রান্না হত। লুচি, পায়েস, মিষ্টি, পোলাও আরও কত কী.. পুজোর ভোগ হত। একবার সেই ভোগ রান্নার জল থেকে রঙ গোলার জল নিতে গিয়ে কেলেঙ্কারি করেছিলাম। হাতের নীল রঙ ভোগের জলে মিশে গিয়েছিল। আমাদের পুরোহিত মশাই যথেষ্ট স্নেহ করতেন আমাদের, শাসনও। মনে আছে খুব বকুনি দিয়েছিলেন সেদিন। দু একটা চাঁটিও মেরেছিলেন বোধহয়।'
শৈশবের দোল বলতে আরও একটা ঘটনা মনে পড়ে খরাজের। বলছেন, 'আমাদের বড়দার ওপর দায়িত্ব ছিল আমাদের সামলানোর। দোলের দিন আমরা যাতে ঠিক সময়ে স্নান খাওয়া করি, সেদিকে কড়া নজর ছিল দাদার। আমাদের ধারণা ছিল, একবার দোলের রঙ গা থেকে উঠে গেলেই সেই বছরের মত দোলের আনন্দ শেষ। যাতে স্নান করিয়ে কেউ রঙ না তুলে দিতে পারে, আমি আর ছোড়দা বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম একবার। সারাদিন পার করে সেই সন্ধেবেলা ফিরেছিলাম। যাতে তখন কেউ আর স্নান না করায়।'
শুধু শৈশব কেন, জীবনের অনেকগুলো বসন্ত পেরিয়ে আজও দোলের উৎসব সমান রঙিন খরাজের কাছে। বলেছেন, 'আমি এখনও দোল খেলতে ভীষণ ভালোবাসি। তবে এখন আর রং নয়, আবির দিয়েই খেলি। আমার গিন্নি রঙে খুব ভয় পান। আমি অবশ্য সেইসব পাত্তা দিই না। ধরে রঙ মাখিয়ে দিই। আমরা তিন ভাই ভীষণ ব্যস্ত থাকি সারাবছর। কিন্তু দোলের দিনটা পরিবারের জন্য তোলা থাকে। সকাল থেকে ঢোল আর আবির নিয়ে ছাদে উঠে পড়ি সবাই। গান গাই, আবির খেলি। খাওয়া দাওয়ারও আয়োজন থাকে। তবে এখনও শাসন রয়েছে বই কী! রঙ খেলে প্রথমে ঘরে ঢুকতে দেন না গিন্নি! ঘরের চারিদিকে রং ছড়াবে বলে। বেলা হতে অবশ্য নিয়ম আর শাসন দুইই শিথিল হয়ে যায়।'