শিবসেনার সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যেই আজ ফড়ণবীশকে পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচন করতে বৈঠক বিজেপির
ওই বৈঠকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর ও দলের সহ সভাপতি অবিনাশ রাই খন্নাকে।
মুম্বই: মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিয়ে শরিক শিবসেনার সঙ্গে দড়ি-টানাটানির মধ্যেই বুধবার বসতে চলেছে বিজেপির পরিষদীয় দলের বৈঠক। সূত্রের খবর, সেখানে দেবেন্দ্র ফড়ণবীশকে পরিষদীয় দলনেতা হিসেবে নির্বাচিত করা হবে। জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর ও দলের সহ সভাপতি অবিনাশ রাই খন্নাকে। কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা ছিল, বিজেপি ও শিবসেনার এই সংঘাতের সমাধান করতে হয়ত আসরে নামবেন বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে। সেই কারণে, তিনি হয়ত এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন। কিন্তু, বুধবার সেই সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দেন ফড়ণবীশ। তিনি জানিয়ে দেন, অমিত শাহ এদিনের বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না। বিজেপি-শিবসেনা দড়ি টানাটানির মাঝে এ নিয়ে রীতিমতো ধন্দে মহারাষ্ট্রবাসী। শিবসেনার ৫০-৫০ ফর্মুলার কথা নস্যাৎ করে মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপির নেতৃত্বেই আগামী ৫ বছরের জন্য মহারাষ্ট্রে স্থায়ী জোট সরকার তৈরি হবে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, শিবসেনাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়া নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কোনও ফর্মুলাও তৈরি হয়নি। দেবেন্দ্র ফড়নবীশের এই বক্তব্যের পরই মঙ্গলবার সরকার গঠন নিয়ে দুই দলের বৈঠক বাতিল করে দেয় শিবসেনা। দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী আগে ৫০-৫০ ফর্মুলার কথা বলেছিলেন। এখন যদি তিনি বলে থাকেন যে তেমন কোনও কথা হয়নি, তাহলে এখন আলোচনার কোনও মানেই হয় না। শিবসেনা সুর চড়ানোর পরই তাদের উদ্দেশ্যে দল ভাঙানোর প্রচ্ছন্ন হুমকি উড়ে এসেছে বিজেপি শিবির থেকে। দলের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় কাকারে বলেন, ওদের খুব কম বিধায়কই উদ্ধবকে এই বিষয়ে সমর্থন করবেন। ফলত, ফড়ণবীশের নেতৃত্বেই সরকার গঠন হবে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, তবে কি মহারাষ্ট্রে সরকার গড়তে সবচেয়ে পুরনো শরিক শিবসেনার বিধায়ক ভাঙানোর কৌশল নেবে বিজেপি? এদিনই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ দাবি করেন, তাঁদের সঙ্গে ১০ জন নির্দল বিধায়কের সমর্থন আছে। আরও ৫ বিধায়ক সমর্থন করতে পারেন বলে আশা করছেন। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও রিপাবলিকান পার্টি নেতা রামদাস আঠওয়ালে বলেন, যদি শিবসেনার সঙ্গে কোনও সংঘাত বাঁধে, তাহলে বিজেপির উচিত নির্দলদের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করা। প্রসঙ্গত, ২৮৮ আসন বিশিষ্ট মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ১৪৫। এবার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১০৫। ও তাদের শরিক শিবসেনা ৫৬টি আসনে জয়ী হয়েছে। অর্থাৎ দুই শরিকের দখলে ১৬১ আসন। কংগ্রেস ও এনসিপি-র জোটের দখলে গেছে ৯৮টি বিধানসভা কেন্দ্র। বিজেপি-শিবসেনা হাত মেলাল সহজেই ১৬১টি আসন নিয়ে সরকার গড়তে পারবে। কিন্তু, যদি তা না হয়, তাহলে কি শিবসেনাকে বাইরে থেকে সমর্থন দিয়ে বিজেপিকে সরকার গড়া থেকে দূরে রাখবে কংগ্রেস-এনসিপি? কারণ, শিবসেনার ৫৬টি আসনের সঙ্গে কংগ্রেস-এনসিপির ৯৮টি আসন যুক্ত হলে, হয় ১৫৪। অর্থাৎ সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় ১৪৫-এর বেশি। আর যদি শিবসেনা-বিজেপির বিচ্ছেদ হয় এবং সব নির্দল এবং সব ছোট দলও বিজেপিকে সমর্থন করে, তাহলেও সেক্ষেত্রে সংখ্যা দাঁড়াবে বিজেপির ১০৫ প্লাস ২৯ জন অর্থাৎ ১৩৪। কিন্তু, সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজন ১৪৫।