মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলতে বিশেষ অধিকার প্রয়োগ নরেন্দ্র মোদির
একরাতের মধ্যেই গোটা ছবিটা কীভাবে পাল্টে গেল?
নয়াদিল্লি: মহারাষ্ট্রের মসনদে শেষ পর্যন্ত বসবেন কে? প্রশ্নটা ছিল, কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী? দেবেন্দ্র ফড়নবীশ, নাকি উদ্ধব ঠাকরের? মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিয়ে দীর্ঘ টানাটানির পর বিজেপি-শিবসেনার শরিকি সম্পর্কে আপাতত ছেদ পড়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে বেরয়ি বিরোধী আসনেও বসেছে শিবসেনা। এদিকে মহারাষ্ট্রে নতুন সমীকরণের জন্ম দিয়ে মোড় ঘুরিয়ে দেন এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার। শুক্রবার ঘোষণা হয়, এনসিপি, কংগ্রেসর সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন উদ্ধব ঠাকরে। এরই মধ্যে, শনিবার সকালে নাটকীয় পটপরিবর্তন ঘটিয়ে এনসিপি নেতা অজিত পওয়ারকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে ফেললেন দেবেন্দ্র। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন অজিতও। এখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারলেই সরকার হবে বিজেপির। যেখানে শিবসেনার পরিবর্তে তাদের ‘বন্ধু’ হবে এনসিপি। যদিও এমনটা শেষ পর্যন্ত হবে কিনা, তা নিয়েও রয়েছে প্রবল সংশয়।
তবে এখন প্রশ্ন, একরাতের মধ্যেই গোটা ছবিটা কীভাবে পাল্টে গেল? কীভাবেই বা মহারাষ্ট্র থেকে উঠে গেল রাষ্ট্রপতি শাসন? প্রথম প্রশ্নের উত্তর অমিত শাহ। তাঁর কেরামতিতেই খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছে বিজেপি। আর দ্বিতীয় উত্তর নরেন্দ্র মোদি। যিনি নিজের পদাধিকার বলে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তুলে দিলেন রাষ্ট্রপতি শাসন।
মহারাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নিতে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এমনিতে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে ছুঁয়ে যেতে হয় রাষ্ট্রপতিকে। তবে এক্ষেত্রে তা হয়নি। আর সেটা হয়নি কারণ, নরেন্দ্র মোদি তাঁর ক্ষমতাবলে ব্যবসায়িক বণ্টন নীতির (১৯৬১) ধারা ১২ প্রয়োগ করেছেন। চরম জরুরি অবস্থার সম্মুখীন হলে দেশের প্রধানমন্ত্রী এই ধারা প্রয়োগ করে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে দিতে পারেন। আর মহারাষ্ট্রে একেবারে মোক্ষম সময়েই এই অধিকার প্রয়োগ করলেন নরেন্দ্র মোদি। যার ফলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ মহারাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রপতি শাসন তুলে নিলেন। আর তার পরই ডেপুটি অজিত পওয়ারকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়ে ফেললেন দেবেন্দ্র ফড়নবীশ। যদিও বিজেপির এই পদক্ষেপের কড়া সমালোচনা করেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। অন্যদিকে বিজেপি-র সঙ্গে 'বন্ধুত্ব' নিয়ে অজিত পওয়ার বলেন, “কোনও দলই মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার মতো অবস্থায় ছিল না। এদিকে রাজ্যের মানুষ একাধিক সমস্যায় জর্জরিত। কৃষক সমস্যাও রয়েছে। সেকারণেই আমরা একটা স্থায়ী সরকার চেয়েছি।”