ভারতের সঙ্গে প্রচলিত যুদ্ধ বাঁধলে হারবে পাকিস্তান, স্বীকারোক্তি ইমরানের, দিলেন পরমাণু-হুমকি
ইমরান বলেন, যদি কোনও প্রচলিত যুদ্ধে দেখি যে আমরা হেরে যাচ্ছি, তখন আমাদের কাছে দুটি বিকল্প থাকবে-- হয় সমর্পণ করা অথবা মুক্তির জন্য মৃত্যু পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া।
ইসলামাবাদ: ভারতের সঙ্গে প্রচলিত যুদ্ধ বাঁধলে হারতে পারে পাকিস্তান। স্বীকারোক্তি পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। কিন্তু, একইসঙ্গে তাঁর অভিমত, দুই পরমাণু-শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধলে, তা প্রচলিত যুদ্ধ সীমাবদ্ধ থাকবে না। একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেন, আমি স্পষ্ট মনে করি, যদি দুই পরমাণু-শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে প্রচলিত যুদ্ধ বাঁধে, তা পরমাণু-যুদ্ধে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তিনি যোগ করেন, যদি কোনও প্রচলিত যুদ্ধে দেখি যে আমরা হেরে যাচ্ছি, তখন আমাদের কাছে দুটি বিকল্প থাকবে-- হয় সমর্পণ করা অথবা মুক্তির জন্য মৃত্যু পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়া। ইমরান আরও বলেন, আমি জানি, পাকিস্তান মৃত্যু পর্যন্ত যুদ্ধ করবে। আর যখন কোনও পরমাণু-শক্তিধর রাষ্ট্র মৃত্যু পর্যন্ত যুদ্ধ করে, তাহলে তার ফল অন্যরকম হয়। পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এই সব পরিণতির কথা ভেবেই তিনি কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও আন্তর্জাতিক মহলের দ্বারস্থ হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারস্থ হয়েছি। আমরা প্রত্যেক আন্তর্জাতিক মঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছি। ওদের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা উচিত। কারণ, তা না হলে, একটা বড় বিপর্যয় হতে পারে, যার প্রভাব ভারতীয় উপমহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে যেতে পারে। যদিও সাক্ষাৎকারে পাক প্রধানমন্ত্রী এ-ও স্বীকার করে নেন যে, আন্তর্জাতিক মহল তাদের দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। ইমরান বলেন, আইন পাস করিয়ে কাশ্মীরকে নিজেদের মূল ভূখণ্ডের অঙ্গ হিসেবে যুক্ত করে নিয়েছে ভারত। ভারতের কাছে কাশ্মীর এখন আর বিতর্কিত অংশ নয়। দুঃখের বিষয়, এই নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের থেকে যা সাড়া আশা করেছিলাম, তা পাইনি। প্রসঙ্গত, গতমাসে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। এরসঙ্গে, জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভেঙে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ-- দুটি পৃথক কেন্দ্র-শাসিত অঞ্চল গঠন করেছে কেন্দ্র। এই মর্মে সংসদে পাস হয়ে গিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল। এই প্রেক্ষিতে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান মনে করেন, কাশ্মীর নিয়ে এই পরিস্থিতিতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে কোনও লাভ নেই। ইতিমধ্যেই, ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ থেকে শুরু করে আকাশ সীমা ব্যবহার না করতে দেওয়া ও ট্রেন পরিষেবা স্থগিত রাখার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। এছাড়া, সংসদে জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল পাস হওয়ার পর থেকেই যুদ্ধের হুমকি দিয়ে আসছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র। যদিও নয়াদিল্লির তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কাশ্মীর হল ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ফলে, এখানে অন্য দেশের হস্তক্ষেপের কোনও এক্তিয়ার নেই। ভারতের এই অবস্থানকে সমর্থন করেছে বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলি। পাশাপাশি, পাকিস্তানকে তারা পরামর্শ দিয়েছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে।